Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জাতিকে ঈমান নিয়ে বাঁচতে দিন

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ৫৫০ আলেমের বিবৃতি

প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৭ পিএম, ৩ এপ্রিল, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : চীনে এককোটি মুসলমানকে দাড়ি ও হিজাব পালনে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যেভাবে ভারতের মুসলমানদের গরু জবাই নিষিদ্ধ, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দন্ড ঘোষণা করা হচ্ছে, ইউপিতে মুসলমানদের গ্রামছাড়া ও মসজিদে আজান বন্ধের হুমকি শুরু হয়েছে- তাতে বাংলাদেশের মানুষ উদ্বিগ্ন। শতকরা ৯২ জন মুসলমানের এ দেশেও নানা জায়গায় ঘাপটি মেরে থাকা নাস্তিক, মুরতাদ এবং ধর্মবিদ্বেষী শক্তি ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার কাজটি সূ²ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্মপ্রাণ প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি ও আশু পদক্ষেপ না হলে দেশে ভয়াবহ অসন্তোষ এবং বিশৃংখলা ঘটে যেতে পারে। দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণ ও আলেম সমাজ প্রধানমন্ত্রীর দিকে চেয়ে আছে। দেরি হলে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যে কারো শান্তি-শৃংখলা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার চেষ্টায় লিপ্ত হওয়া বিচিত্র নয়। গতকাল এক বিবৃতিতে দেশের বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও প্রখ্যাত মাদরাসার প্রতিনিধিত্বকারী ৫৫০ জন আলেম এসব কথা বলেন।
শায়খুল হাদীস আল্লামা শাহ নূরুল আমীন প্রেরিত ওলামা মাশায়েখ সমন্বয় পরিষদের এ বিবৃতিতে সারাদেশের ৫৫০ জন আলেম তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, শুরু থেকেই এ দেশের আলেম ওলামা ও ইমামগণ সন্ত্রাস ও মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার। বর্তমানে দেশে যে উগ্রবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে জনগণ উদ্বিগ্ন। এদের দমন করার কোন বিকল্প নেই। তবে নিরপরাধ মানুষ, অবলা নারী ও নিষ্পাপ শিশুদের যেন প্রাণ না যায় আইন-শৃংখলা কর্তৃপক্ষের সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে। সন্ত্রাসীদের আস্তানা গড়ে উঠার আগে, বোমা বারুদ আনা নেয়ার সময় বা আটকে পড়ার পর কৌশলে তাদের ধরতে হবে। তাদের নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করতে হবে। শিশু-নারী ও নিরীহ মানুষকে এভাবে মরতে দেয়া যাবে না। বিগত অভিযানগুলোতে নিহত সরকারী বাহিনী ও নিরপরাধ লোকদের জন্য শোক প্রকাশ করে আলেমরা বলেন, জনগণের হৃদয়ে আঘাত দিয়ে একশ্রেণীর লোক সরকারের জনপ্রিয়তাকে ধূলায় মিশিয়ে দিচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মুসলমানদের পূজায় লিপ্ত করা, সকল ছাত্রছাত্রীকে মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাধ্য করা, হোলি ও দোলপূজায় মুসলমানদের রংমাখাসহ ধর্মীয় সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।
পাঠ্যসূচিতে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প প্রবিষ্ট করিয়ে যারা ৯২ ভাগ মুসলমানের মনে আঘাত দিয়েছিল, তারা প্রধানমন্ত্রীর সংশোধনীর নগ্ন সমালোচনা করে দেশবাসীকে ক্ষুব্ধ করে তুলছে। অথচ এমন অসভ্য পরিবর্তন তারা কেন করেছিল সে জবাবদিহি তাদের করা হয়নি, তাদের বিচার ও শাস্তিও হয়নি। এখন তারাই বড়গলায় কথা বলছে। আলেমগণ পাঠসূচির আরো ত্রæটি দূর করার আবেদন জানিয়ে বলেন, প্রথম শ্রেণীর বাংলা বইয়ে, ঋতে ঋষি না লিখে ঋতু লেখা হোক। র তে রথযাত্রার বদলে রংধনু, ত তে তবলা ঢ তে ঢোল,এ-তে একতারা ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রের বদলে সহজ সর্বজনীন শব্দ লেখার দাবি করেন।
আলেম নেতৃবৃন্দ সুপ্রিম কোর্টের দেবীমূর্তি ও দেশব্যাপী প্রাণীমূর্তি অপসারণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ধর্মীয় চিন্তা ও অসাম্প্রদায়িক ভাবধারা, ৯২ ভাগ মানুষের ধর্মীয় অধিকার সমুন্নত রাখতে হবে। মসজিদের ইমাম ও আলেমদের কোরআন-সুন্নাহর বাণী প্রচারে আইন-আদালতের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যাবে না। স্বচ্ছতার সাথে সঠিক বার্তা দিতে আলেমসমাজ ও ধর্মপ্রাণ মানুষকে আস্থায় আনতে হবে। সরকারী আলেম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আমন্ত্রিত ইমামরা প্রশাসনিক নির্দেশে চললেও ইসলাম ও ঈমানের প্রশ্নে তারা আল্লাহ ও রাসূলের অনুগত। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মক্কা ও মদীনার প্রধান ইমাম শায়খ সুদাইস ও হুজাইফিকে কেন আনা গেল না, এ প্রশ্ন করে আলেমরা বলেন, ইমাম প্যানেলের ৬ষ্ঠ ও ৯ম ইমামকে আনার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারকে ছোট করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দাওয়াতে এটি অনেকটা মক্কা-মদীনার ইমাম-খতিবদের একটি মুখরক্ষা বা দায়সারা দাওয়াত গ্রহণ ছাড়া আর কিছু নয়।
যেসব শীর্ষ আলেম ভয়ভীতি ও লোভ-লালসার কবলে পড়ে বোবা শয়তান হয়ে বসেছেন, তারা গজবের জন্য প্রস্তুত হোন। ইসলাম ও মুসলমানদের ঈমানী ইস্যুতে গওহরডাঙ্গার মুহতামিম, বঙ্গবন্ধুর অধ্যাত্মিক মুরব্বী আল্লামা শামসুল হক (রহ,) এর পুত্র, প্রধানমন্ত্রীর স্নেহভাজন আল্লামা রুহুল আমীন পীর সাহেব গওহরডাঙ্গার বাস্তব পরামর্শ গতকাল ইনকিলাবে প্রকাশিত হতে দেখে আমরা আনন্দিত। আশা করি, তিনি আমাদের সব নিবেদন নেত্রীর কাছে তুলে ধরবেন। পীর সাহেব চরমোনাই-এর স্পষ্ট বক্তব্যও আমাদের ভাল লাগে। ঈমানী ইস্যুতে দুনিয়া লোভী কতিপয় অসৎ আলেম ও ভন্ডপীরদের দুর্বোধ্য নীরবতা আমাদের খুবই ব্যথিত করছে। এ মুহূর্তে দেশের হাক্কানী আলেমরা মুখ বন্ধ রাখলে অদূর ভবিষ্যতে দেশে ইসলাম পালন করা যাবে না। এ দেশ চীন, ভারত ও রাশিয়া হয় কিনা তাও বলা যায় না। ৯২ ভাগ মুসলমান ঈমান ও ইসলাম নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে সোচ্চার আলেমদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।



 

Show all comments
  • Hasan ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ৫:৩৪ এএম says : 0
    "Allahu Akbar". A good supportive writing. Islamic scholars must wake up to guide this ummah to be in right path. A slow poisoning is been started thru text book/court/media/etc as they think they will be successful. This is quite impossible as Allah Subha'nahu wataa'la would protect mumin/muslim Inshallah. But we must remember our duty. We must remember that we are created from "Unholy semen". ALLAH, HE is the almighty, THE most powerful. We must be worried of HIS punishment that may come any time.
    Total Reply(0) Reply
  • কাওসার আহমদ ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৪৯ পিএম says : 0
    সময় এসেছে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • ফারজানা ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৪৯ পিএম says : 0
    বিবৃতিদানকারী সকল আলেমদেরকে অসংখ্য মোবারকবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • ইমরান হোসাইন ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৫০ পিএম says : 0
    ৯২ ভাগ মুসলমান ঈমান ও ইসলাম নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে সোচ্চার আলেমদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ