পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বগুড়া অফিস থেকে : ‘শনিবার সকালে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ড থেকে চুরি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল সেই শিশুটিকে’। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মিডিয়া কর্মীদের সামনে শিশুটিকে তার বাবা-মা ও দাদীর কাছে হস্তান্তর করা হলো। শিশুটিকে হস্তান্তরের সময় তার মা হেসে উঠে শিশুকে কোলে নিয়ে আদর করতে থাকে। আর মায়ের মমতার স্পর্শে শিশুটিও যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে!
চুরি যাওয়া শিশুটি পুলিশ উদ্ধার করেছে এবং সে মায়ের কোলে ফিরে আসছে এমন খবরে হাসপাতালে রোগী, নার্স, ডাক্তার, মিডিয়া কর্মী সবাই ছুটে আসে স্বচক্ষে এক পলকে দেখার জন্য। আগতদের দেখে মনে হচ্ছিল তারাও যেন তাদের হারানো আপন সন্তানকেই ফিরে পেল। সবারই চোখে-মুখে হাসি। শিশুটিকে হস্তান্তরের সময় উপস্থিতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা ছিলেন, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক বিধান চন্দ্র মজুমদার, ডাঃ সামির হোসেন মিশু, ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং উদ্ধারকারী সাব ইন্সপেক্টর খোকন কুন্ডু, বগুড়া সদরের ওসি তদন্ত আসলাম আলী। উপস্থিত সকলেই হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়ার একদিনের ব্যবধানে শিশু উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।
শিশু উদ্ধার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, শিশু চুরির ঘটনার পর পুলিশ তাকে উদ্ধারে তৎপর হয়ে পড়ে। পুলিশি তৎপরতার মধ্যেই রোববার বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান তাকে জানান, হাসপাতালের কর্মচারী রমজান আলী একটি শিশু সংক্রান্ত একটি তথ্য পেয়েছে। তথ্য পাওয়ার পর তিনি ধুনট থানার সাব ইন্সেপেক্টর খোকন কুন্ডুকে শিশুটি উদ্ধারের দায়িত্ব দেন। তিনি আরো জানান, কৌশলগত কারণে অপহরণকারীর বিষয়ে প্রাথমিক অবস্থায় গুরুত্ব না দিয়ে শিশুটি উদ্ধারের জন্য কাজ করা হয়েছে। তবে শিশু উদ্ধার ও তাকে সুস্থভাবে বাবা-মার কাছে হস্তান্তরের পর এবার বগুড়া শহরের বারোপুর এলাকার মাহফুজারের স্ত্রী অপহরণকারী রতœাকে (৩৫) গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে।
শিশু উদ্ধারকারী এসআই খোকন কুন্ডু জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেয়ে সকাল সাড়ে ৯টায় সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর থানার ঢেকুরিয়া বাজারে গিয়ে বকুল নামের এক দোকানদারকে খুঁজে বের করি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, বগুড়ার গাবতলী থানার মাঝবাড়ি গ্রামের ফুলমিয়ার স্ত্রী নিঃসন্তান লাবনী শনিবার ঢেকুরিয়ায় তার বাবার বাড়িতে একটি নবজাতক শিশুকে নিয়ে এসেছিল। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার সে নবজাতক শিশুকে নিয়ে বগুড়ার মাঝবাড়িতে চলে গিয়েছে। পরে মাঝবাড়িতে এসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নজরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে ফুল মিয়ার বাড়িতে গেলে দেখা যায় শিশুটিকে বিছানায় শুইয়ে রেখে তারা পালিয়ে গেছে। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে বগুড়া নিয়ে আসি।
হাসপাতালের কর্মচারী রমজান আলী জানান, তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের ঢেকুরিয়ায়। সকালে অজ্ঞাত একটি নাম্বার থেকে তাকে ফোন দিয়ে শিশুটির খবর দেয়া হলে তিনি হাসপাতালের অপর কর্মচারী সুইটের সাথে পরামর্শ করে আবাসিক চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমানকে জানান। হাসপাতালের কর্মচারী রমজান আলীর কাছে আসা এই ফোন কলে পাওয়া তথ্যটিই মূলত শিশু উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হিসেবে কাজ করে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান। পুলিশের ধারণা, হাসপাতালের কেউ কেউ এই শিশু চোর চক্রের সাথে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে চারদিন বয়সী শিশুটি জন্মের ৩য় দিনের মাথায় গাইনি ওয়ার্ড থেকে চুরি যায়। শিশু চুরির পর থেকেই শিশুটির মা হোসনে আরা এবং বাবা রুবেল উদ্দিন শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিল। এই শিশুটিই ছিল ওই দম্পতির প্রথম ছেলে সন্তান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।