Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছাতকে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে ১০ সহস্রাধিক বাড়ি-ঘরের ক্ষয়ক্ষতি

১২ ঘণ্টা পরেও প্রকান্ড শিলা ছিল অক্ষত-

| প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ছাতক (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা : ছাতকে স্মরকালের ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার প্রায় ১০ সহস্রাধিক ঘরের টিনের চালে ছিদ্রসহ বৃষ্টির পানিতে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শহরের শিলাবৃষ্টির স্ত‚প দেখতে রোববার বেলা ১টা পর্যন্ত উৎসুক মনুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জানা যয়, শনিবার রাত ১০টা থেকে এখানে প্রচন্ড ঝড়-তুফান শুরু হলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রাতেই কয়েক দফা ঝড়-তুফানে অনেক বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটের টিনের চাল তুলে নিয়ে যায়। এরপর রাত ২টা থেকে শুরু হয় স্মরণকালের ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি। শিলাবৃষ্টিতে পৌরসভাসহ ১৩ ইউনিয়নের গোবিন্দগঞ্জ, ধারণ, জাউয়া, দোলারবাজার, আলীগঞ্জ, শাপলাগঞ্জ, মদীনাবাজার, তাজগঞ্জ, ঝিগলী, কামারগাঁও, বরাটুকা, জাহিদপুর, মঈনপুর, বুরাইয়া, মদীনাগঞ্জ, ইসলামগঞ্জ, জিয়াপুর, কচুরগাঁও, রসুলগঞ্জ-বসন্তপুর, লামাটুকেরবাজার, লাকেশ্বর, বাংলাবাজার, রামপুর, হাসনাবাদ, কালারুকাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের প্রায় ১০ সহস্রাধিক কাঁচা দোকানপাটও বসত ঘরের টিনের চালের ক্ষতি সাধন করেছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানও সদস্যরা জানিয়েছেন। এদিকে ঝড়ের কবলে উপজেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হওয়ায় গত কয়েকদিন থেকে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের বাতি জ্বলছে না বলে জানা গেছে। এদিকে রাতের ২টা থেকে শুরু হওয়া প্রচন্ড শিলাবৃষ্টিতে কোর্ট রোডসহ শহরের খালি ট্রাকগুলো প্রকান্ড শিলায় ভর্তি হয়ে উঠে। শিলাবৃষ্টির প্রায় ১২ ঘণ্টা পর বোরবার বেলা ১টায় কোর্ট রোড এলাকার সিএনজি স্ট্যান্ড, কলেজ রোডের ছাতক টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার এলাকা, পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগবাড়ি রাস্তা, রেল কলোনী, পেপার মিল, নোয়ারাই, সিমেন্ট কারখানার ৪ নং এলাকা ও সুজন মিয়া চৌধুরী সড়কসহ বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ছাদে প্রত্যক্ষ করতে উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তবে শিলাবৃষ্টি শহরের ন্যায় গ্রাম এলাকায় প্রচুর পরিমাণে না হলেও শিলার সাইজ ছিল শহরের চেয়ে তুলনামূলক ছোট। জানা গেছে, উপজেলার সবগুলো হাওর ও বিলের বোর ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় প্রচÐ শিলাবৃষ্টি বোর ফসলের কোনো ক্ষতি করেনি। তবে মৌসুমী ফসল, গাছ-পালা ও শাক-সবজি বাগানের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া রাতের শিলাবৃষ্টিও ঝড়-তুফানের পানি ফার্মের শেডে প্রবেশ করায় উপজেলার ২শতাধিক হাঁস খামার ও ৩ শতাধিক মুরগি খামারের সিংহভাগের-ই মোরগ-হাঁস মরে গেছে বলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারি সার্জন ডাক্তার মো, আব্দুস শহিদ হোসেন জানান। এভাবে কোর্ট রোডের জননী পোল্ট্রি ফার্মের মালিক সমর আলীর প্রায় ১ হাজার কেজি মোরগ শিলাবৃষ্টিতে চালের টিনে ছিদ্র হয়ে পানি প্রবেশ করে এগুলো মারা গেছে বলে দাবি করা হয়। এছাড়া ঝড়-তুফানে রাজাপুরবাজারে আসাদ আহমদের লক্ষাধিক টাকার মালামালসহ একটি দোকান ঘর, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, ঘরবাড়িরসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কারখানার চালের টিন তুলে নিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। সুরমার নদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি ঘটায় উপজেলার ১০ সহস্রাধিক হেক্টর ভূমির সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকার বোর ফসল ২/৩ফুট পানির নীচে তলিয়ে গেছে। ফলে উপজেলার ৮৫ হাজার কৃষকের কান্না থামছেনা বলে কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একে বদরুল হক জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান শিলা, ঝড়-বৃষ্টি ও আগাম বন্যায় উপজেলাবাসির ব্যাপক ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ি-ঘর ও ফসলের ক্ষতির তালিকা প্রনয়নের কাজ চলছে। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের দেয়া ক্ষতির তালিকাটি শীঘ্রই সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ