পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সরকার একের পর এক ইসলামবিরোধী কর্মকাÐ চালিয়েই যাচ্ছে। সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে গ্রিক দেবী মূর্তি স্থাপন এবং মঙ্গল শোভাযাত্রায় অপসংস্কৃতি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পালনের নির্দেশ দিয়ে ইসলামী মূল আকিদার ওপর চরম আঘাত হানা হয়েছে। এরূপ চক্রান্ত দেশবাসী মেনে নেবে না। মূর্তি অপসারণ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা বাতিল করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, বর্তমান সরকার নির্বাচনের আগে ওয়াদা করেছিল যে, তারা ক্ষমতায় গেলে ইসলামবিরোধী কোন কাজ করবে না। কিন্তু অবাক বিস্ময়ের ব্যাপার হলো বর্তমান সরকার ক্ষমতায় গিয়ে একের পর এক ইসলামবিরোধী কর্মকাÐ চালিয়েই যাচ্ছে। আল্লাহর উপর থেকে আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিয়েছে, পর্দা নিষিদ্ধ করেছে। সিলেবাসের মাধ্যমে ইসলামি শিক্ষার বারোটা বাজিয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি ও শিক্ষাআইন প্রণয়ন করে ইসলামকে শেষ করে দেয়া চক্রান্তে মেতে উঠেছে। এখন আবার গ্রিক দেবী মূর্তি স্থাপন করে জাতীয় ঈদগাহ’র মুসল্লিদের নামাজ নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। অপরদিকে বর্ষ বরণের নামে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে গ্রামে-গঞ্জের স্কুল কলেজগুলোত ছড়িয়ে দেয়ার অশুভ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এধরণের ইসলামবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে সর্বত্র আন্দোলনের পরিস্থিতি উদ্ভব হবে।
গতকাল বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সভায় ঘোষিত ২১ এপ্রিলে মহাসমাবেশসহ অন্যান্য কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিভিন্ন পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব- অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহ-সংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম প্রমুখ।
তিনি বলেন, প্রকাশ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা বাতিল করতে হবে। অন্যথায় জনতা ময়দানে নেমে আসতে বাধ্য হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেছেন, ঢাকাসহ সারা দেশে রাস্তার মোড়ে মোড়ে ভাস্কর্যের নামে বিভিন্ন ধরণের মূর্তি স্থাপন, বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের সামনে জাতীয় ঈদগাহের পাশে তথাকথিত গ্রিক দেবী মূর্তি স্থাপন এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী কর্তৃক সরকারিভাবে মঙ্গল শোভাযাত্রার ঘোষণা একই সূত্রে গাঁথা। তারা শতকরা ৯০% মুসলমানের এদেশ থেকে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে মুছে ফেলতে চায়। বিদেশী ও বিধর্মী কৃষ্টি-কালচার চালু করে গোটা জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চায়। তাদের এ হীন চক্রান্ত দেশবাসী কিছুতেই মেনে নিবে না। তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলব, অহেতুক জনগণের মূখামূখী হবেন না। এতে পরিণতি শুভ হবে না। জনগণ এর জবাব দিবেই। গতকাল বিকালে পুরানা পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে জেলা প্রতিনিধিদের নিয়ে সদস্য সংগ্রহের রিপোর্টিং বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে আরো যারা উপস্থিত ছিলেন : অভিযানের যুগ্ম আহŸায়ক ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, অভিযানের সদস্য সচিব ও দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মদুল্লাহ জামীসহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুতিউর রহমান গাজীপুরী, যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মুফতি গোলাম মাওলা ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দীন খান প্রমুখ।
খেলাফত মজলিস
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে অবিলম্বে গ্রিক দেবী মূর্তি অপসারণ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে মূর্তি অপসারণ না করলে জনতার আন্দোলন থামবে না। ঢাকা হচ্ছে মসজিদের নগরী। এ নগরীকে মূর্তির নগরী করা যাবে না। দেশের শিক্ষা সংস্কৃতি নিয়ে নাস্তিক্যবাদী ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী মূর্তি অপসারণের দাবিতে এবং পাঠ্যপুস্তক ও পাঠ্যসূচির বিষয়ে নাস্তিক্যবাদী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পল্টন মোড়ে ঢাকা মহানগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেনে নায়েবে আমির মাওলানা সৈয়দ মজিবুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা নোমান মাযহারী, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, ডা. রিফাত হোসেন মালিক প্রমুখ।
সমাবেশের পূর্বে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী মূর্তি অপসারণের দাবিতে এবং পাঠ্যপুস্তক ও পাঠ্যসূচির বিষয়ে নাস্তিক্যবাদী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ মিছিল হয়।
হারামাইন পরিষদ
তাহফিজে হারামাইন পরিষদ বাংলাদেশ-এর সভাপতি মাওলানা সাদেক আহমদ সিদ্দিকী মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নির্দেশ দানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মঙ্গল ও কল্যাণের মালিক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। মঙ্গলের জন্য কিভাবে দরখাস্ত করবে সেটা আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস শরীফে বর্ণনা করেছেন। মাওলানা সাদেক আহমদ সিদ্দিকী আরো বলেন, বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণ হতে পারে না। এ বিষয়ে উলামা-মাশায়েখ ও ইসলামপন্থীদের সোচ্চার হওয়ার জন্য তিনি আহŸান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।