Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ায় হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি

| প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বগুড়া অফিস : বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল থেকে হোসেনে আরা (২০) নামে এক প্রসুতির ৩ দিন বয়সী শিশু চুরি হয়েছে। চুরি যাওয়া শিশুটির বাবার নাম রুবেল, বাড়ি বগুড়া শহরতলীর ঝোপগাড়ী এলাকায়। হোসেনে আরা কান্না জড়ানো কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, সন্তান প্রসবের জন্য তিনি গত মঙ্গলবার বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডের ৩৫ নং বেডে ভর্তি হন। পরদিন বুধবার তার একটি ফুটফুটে ছেলে শিশু জন্ম গ্রহণ করে। এটাই তার প্রথম সন্তান। শনিবার সকাল ৮টায় তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান তার পাশে এক অপরিচিত মহিলা। এসময় তার মা রেহেনা বেগমও ছিল। তার মা ছেলে শিশুটিকে ওয়ার্ডের বাইরে নিয়ে দাঁড়ায়। ওই অপরিচিত মহিলাটিও সে সময় তার মা’র পিছু পিছু যায়।
হোসনে আরার মা’ (শিশুটির নানী) অশিক্ষিত। রেহেনা বেগম বলেন, শিশুটির জন্ডিস যাতে না হয় সেটা ভেবেই তিনি হাসপাতালের বাইরের সিঁড়িতে শিশুটিকে কোলে নিয়ে রোদে দাঁড়ান। এসময় এক অপরিচিত মহিলা তার পাশে আসে। তিনি আরো জানান, ওই মহিলা আগের রাত ৯টায় কয়েক বার শিশুটিকে দেখতে আসে এবং বলে আমার রোগী রয়েছে ১৫ নং বেডে। কথায় কথায় ওই মহিলার সাথে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে।  সকালে শিশুটিকে ওয়ার্ড থেকে হাসপাতালের সিঁড়িতে রোদে নিয়ে আসলে ওই মহিলাও তার সাথে আসে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত আলোচনা হয়। রেহেনা মহিলাকে বিশ্বাস করে তার কোলে শিশুটিকে রেখে সকাল ১০টায় ওয়ার্ডে নতুন কাপড় নিতে আসে। পরে ফিরে গিয়ে দেখে শিশু বাচ্চাসহ ওই মহিলাটি নেই। হাসপাতালের এখানে ওখানে খোঁজা খুঁজি করে না পেয়ে নার্সদের কাছে ঘটনাটি জানান।  
শিশুর বাবা রুবেল উদ্দীন জানান, দেড় বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়। সন্তান জন্ম নেয়ার পর আমরা খুবই খুশি হয়েছিলাম। শনিবার নাম রাখার কথা ছিল। দুপুর আড়াইটায় পুলিশ তার কাছ থেকে অভিযোগ লিখে নিয়ে  গেছে। তবে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তা তার কাছে আসেনি বা তারা কিছু জানতেও চায়নি।
গাইনী ওয়ার্ডের ইনচার্জ (নার্স) সানজিদা আকতার জানান, আমরা সব মা’কে বলি, অপরিচিত কারো হাতে সন্তান দেবেন না এবং ওয়ার্ড ছেড়ে কেউ সন্তান নিয়ে বাইরে যাবেন না। তারপরও সন্তানটিকে বাইরে নিয়ে অপরিচিত মহিলার হাতে দেয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। ১৫ নং বেডে কোন রোগী ছিল কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাতের ডিউটি আমার ছিল না। তবে খাতায় ১৫ নং বেডে কোন রোগী ভর্তির এন্ট্রি নেই।
হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক বিধান চন্দ্র মজুমদার জানান, শিশু চুরি ঘটনায় পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। শিশুটির বাবা রুবেল উদ্দীন থানায় শিশু চুরির ঘটনায় অভিযোগ দিয়েছেন। রোগীদের সচেতন করার জন্য অপরিচিত ব্যক্তির হাতে শিশু তুলে না দিতে ওয়ার্ডে ও দেয়ালে নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) আসলাম আলী জানান, শিশু চুরির ঘটনা জানার পর পুলিশ সেখানে যায়। শিশুর বাবা রুবেল এ ঘটনায় একটি  থানায় অভিযোগ দেন। শিশুটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ