পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তিনদিকেই বন্ধু রাষ্ট্রের সাথে সামরিক চুক্তির প্রয়োজন কেন
বিশেষ সংবাদদাতা, খুলনা : বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে এমন একটি দেশ, যার তিনদিকে ভারত। ভারতকে আমরা বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে জানি। তাহলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র, বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের সাথে সামরিক চুক্তির প্রয়োজন কি? এই প্রশ্নের জবাব সরকারকে দিতে হবে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে।’ বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন ২০১৬ (খসড়া) নাগরিক ভাবনা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় খুলনার একটি অভিজাত হোটেলে নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মঈন খান বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন ২০১৬ খসড়ার সমালোচনা করে বলেন, এতোদিন পরে কেন নাগরিকত্ব আইন। এর মোটিভ জানতে হবে। এর মোটিভ হল এই আইনটি করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা। উন্নয়নের দোহাই দিয়ে জনগণকে বোকা বানানো যাবে না। ইউরোপ, আমেরিকায় যে ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় হয়; এদেশে সেই ব্যয় ১০ গুণ। লুটপাটের অবৈধ সরকার উন্নয়নের দোহাই দিয়ে টিকে থাকতে চায়।
বক্তারা গোলটেবিল বৈঠকে বলেন, বর্তমান সংসদের ১৫৩ জন সংসদ সদস্যই অনির্বাচিত। ফলে সংসদ অবৈধ। আর এই সংসদের পাশকৃত সকল আইনও অবৈধ হবে। জনবিরোধী নাগরিকত্ব আইন যদি পাশ করা হয়; তাহলে জনগণ প্রতিহত করবে। জনগণের রায়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সরকার গঠন করলে ওই আইন বাতিল করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বক্তারা।
বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. বোরহান উদ্দিন। ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও এ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেসিসি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. সানাউল্লাহ মিয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আক্তার হোসাইন, প্রফেসর ড. ওবায়েদুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মোস্তফা কামাল, বিএনপি’র সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. ইকবাল হোসাইন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ড. ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বারের সিনিয়র সদস্য এ্যাড. ইকবাল হোসেন, ঢাবি’র প্রফেসর ড. মোস্তফা কামাল।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম বাবুল, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাড. শফিকুল আলম মনা, খুলনা সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহŸায়ক অধ্যক্ষ প্রফেসর মাজহারুল হান্নান, বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, অধিকার’র খুলনার ফোকালপার্সন মুহাম্মদ নুরুজ্জামান, রূপান্তর’র নির্বাহী পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, জনউদ্যোগ খুলনার আহŸায়ক এ্যাড. কুদরত-ই খুদা, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সভাপতি এ্যাড. আব্দুল মালেক, সমন্বয়ক এ্যাড. মোমিনুল ইসলাম, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ জাফরউল্লাহ ও পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা স ম বাবর আলী।
ইতিপূর্বে বাংলাদেশে নাগরিকত্ববিষয়ক বিধি-বিধান নিয়ন্ত্রিত হতো ‘দি সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট ১৯৫১ এবং ‘দি বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ টেম্পোরারি প্রভিশন্স অর্ডার-১৯৭২’র মাধ্যমে। প্রস্তাবিত আইনটি বাংলাদেশ নাগরিকত্ব অধ্যাদেশ, ১৯৭২ এবং আইন কমিশনের ২০০৫ ও ২০১২ সালের সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ আইনে ৬ অধ্যায় ও ২৮টি ধারা রয়েছে। খসড়া আইনটি এখনো জাতীয় সংসদে বিল আকারে উপস্থাপন করা হয়নি। গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত এ আইনে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক, দ্বৈত নাগরিকত্ব অর্জনকারী বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশে অবস্থানকারী অভিবাসীদের নাগরিকত্ব অর্জনের বিধানের সমালোচনা করছেন আইনজ্ঞ, অভিবাসী বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টরা। বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, এ আইন কার্যকর হলে যারা প্রবাসী নাগরিক তারা বেশকিছু সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার হারাবেন। তাদের মতে, আইনটি কার্যকর হলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হবেন। একই সঙ্গে প্রবাসে বসবাসরত দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব অর্জনের পথরুদ্ধ করে দেয়া হবে এ আইনের মাধ্যমে। তাই আইনটি জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার আগে এ নিয়ে আরো পর্যালোচনা ও বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।