Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ দেখতে চায় জাতিসংঘ

| প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম


আহমদ আতিক : আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ দেখতে চায় জাতিসংঘ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন। সেই সাথে বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে সফরে আসা বিভিন্ন প্রভাবশালী রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরাও একই ধরনের কথা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে অবহিত করে গেছেন। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে ইতবাচক মতামত প্রকাশ করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট বি. ওয়াটকিনসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আগামী নির্বাচনে জাতিসংঘ বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ দেখতে চায়। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী বেশ কয়েকটি ইস্যুতে আলোচনা করেছেন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচন বিষয়ে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সব দলের অংশগ্রহণ আমরা দেখতে চাই। জবাবে আমি তাকে জানিয়েছি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে। আপনারা নিশ্চিত থাকেন সব দলের অংশগ্রহণে আগামীতে বাংলাদেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।


গত শনিবার কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি কে এম নুরুল হুদাও কুসিক নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির প্রতিনিধিদলের প্রধান জিন ল্যামবার্ট ঢাকায় ইইউ দূতাবাসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সামনে রেখে শক্তিশালী ও সক্ষম একটি নির্বাচন কমিশন গঠনে জোর দিচ্ছে। তিনি আরো বলেছিলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠিত ওই নতুন নির্বাচন কমিশনটি এমন হতে হবে, যাতে অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে ভোটারদের আস্থা থাকবে। আগামী নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির কথাও বলেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
পরবর্তী নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তখন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের আরেক সদস্য বারন্ড লাঙ্গা বলেছিলেন, নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন গঠন হতে যাচ্ছে। যথাযথ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনেই এটি গঠন করার ব্যাপারে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
জিন ল্যামবারট বলেন, বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন এমন একটি পরিবেশে হতে হবে, যাতে করে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে।
সর্বশেষ গত সপ্তাহেও ঢাকা সফরকালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদের দলের প্রধান আর্নে লিট্জ বিজিএমইএর সাথে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকা প্রয়োজন।  
গত ৫ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনে নতুন দায়িত্ব পাওয়া সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী (ভারপ্রাপ্ত) উইলিয়াম ই টড ওয়াশিংটনের তরফে ‘শুভেচ্ছা সফরে’ ঢাকায় এসেছিলেন। সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার দু’দেশের সমপর্কের বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তার সফরের আগে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিবের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন। সেখানে উপস্থিত এক সাংবাদিক ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসছে কি-না জানতে চাইলে জবাবে মার্কিন দূত স্পষ্ট করেই বলেন, ক্ষমতা পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র নীতি পরিবর্তন করতে পারে এমন কথা চিন্তাই করা যায় না।  
গত ৪ মার্চ যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দফতরের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক মন্ত্রী অলোক শর্মাও ঢাকা সফর করেন। এ সময় তিনি অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকের পর অলোক শর্মার সাথে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন দেখতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য। দেশটি চায় বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার হোক। নির্বাচনেও এর প্রতিফলন দেখতে চায় তারা। ফখরুল বলেন, অলোক শর্মা খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠকে এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
এদিকে গত বুধবার ঢাকাস্থ ফ্রান্স দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের বøু-ইকোনমি সেল যৌথভাবে রাজধানীতে ‘সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনাকে সুদৃঢ়করণ’ শীর্ষক এক কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বøুু-ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতিতে বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রয়োজন সুশাসন। ঢাকায় আগত ইন্টারন্যাশনাল পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সাধারণ সম্পাদক মার্টিন চুংগং-ও গতকাল সকালে আইপিইউ সম্মেলন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন সামাজিক অবিচার ও বৈষম্যের কারণে সারা বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে। সা¤প্রতিক সময়ে দেশে-দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানে বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেও দায়ী করেন তিনি।



 

Show all comments
  • Asif ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৩৫ পিএম says : 0
    ata sobai chay sudu awamileauge sara
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২ এপ্রিল, ২০১৭, ৮:০২ এএম says : 0
    সাংবাদিক আহমদ আতিক বিভিন্ন তথ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনের উপর বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ কি চায় সেটা আমাদের সামনে সুন্দর ভাবে তুলে ধরায় আমি আতিক সাহেবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এখানে একটা বিষয় আমার নিকট পরিষ্কার যে, বিশ্বের ক্ষমতা ধর থেকে শুরু করে তাদের দোসররা চায় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি আংশ নিক। কিন্তু কথা হচ্ছে বাংলাদেশের লোক প্রকাশ্যে বিএনপি জামাতকে প্রত্যাখ্যান করেছে তাদের নেতারা যখন দেশদ্রোহী মামলায় ফাঁশিতে মৃত্যু বরন করার পর। এতে প্রতিয়মান হয়েছে এই দুটা দলই ............ দল তাছাড়া বিএনপি এখনও জামাত যে দলকে দেশের স্বাধীনতা লগ্ন থেকে বাতিল ঘোষনা করা হয়েছিল সেই দলকে বিএনপি রাজনীতি করার সুযোগ দেয় এবং প্রতিষ্ঠিত করে এবং তার সাথে ক্ষমতা ভাগা ভাগী করে দেশ চালিয়ে ছিল। এখনও খালেদা জিয়া জামাত ছাড়া কোন কথা বলেনা বা বলতে চায়না যেটা দেশবাসী মানতে চায়না। কাজেই বিএনপিকে নির্বাচনে নেয়ার জন্য বিদেশীদের এত দরদ কেন সেটা এখন ভাববার বিষয়। মুক্তিকামী বাঙ্গালী জাতী কখনো দেশের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিকে আর ক্ষমতায় আসতে দিবে না এটাই আমার বিশ্বাস। আজ আমি দেখতে পাচ্ছি আওয়ামী লীগের অতিরিক্ত অত্যাচারে জনগণ অথিষ্ট হয়ে এখন আওয়ামী লীগের এসব অত্যাচার থেকে বাচার জন্য বলতে গেলে বাধ্য হয়ে ......................... বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার চিন্তা ভাবনা করছে এটা আমার ধারনা। এটা আরো বুঝা গেছে এবারের কুসিক এর নির্বাচনে। এখানে স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগের প্রতিদন্দির ব্যাক্তিগত ইমেজ ভাল হওয়ার পরও সে ভোটে পরাজিত হয় নীরব ভোটারদের জন্য। কাজেই আওয়ামী লীগের এখন দলকে এবং দলের সকল অসৎ নেতা নেত্রীদেরকে নিয়ন্ত্রণে এনে দলের ইমেজ ফিরিয়ে আনতে হবে নয়ত ভবিষত অন্ধকার আমার মনে হচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ