Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রংপুর এক্সপ্রেস চলবে সময় মেনে

কুড়িগ্রাম-তিস্তা রেললাইন সংস্কারের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করলেন ডিআরএম

| প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নূরুল ইসলাম : রংপুর এক্সপ্রেসকে সময় মেনে চালানোর উদ্দেশ্যেই কুড়িগ্রাম থেকে তিস্তা পর্যন্ত রেল লাইন সংস্কারের কাজ চলছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগের নিজস্ব উদ্যোগে এ কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি জানান, দিনাজপুর থেকে আনা রিলিফ ¯িøপার ও বুড়িমারী থেকে আনা পাথর দিয়ে নিজস্ব উদ্যোগে রেললাইন সংস্কার করা হচ্ছে। এতে অনিয়ম বা দুর্নীতি করার কোনো সুযোগ নেই। রেললাইনটি সংস্কার হলে রংপুর এক্সপ্রেসের সাথে যুক্ত কুড়িগ্রাম-কাউনিয়া শাটল ট্রেন গতি নিয়ে চলতে পারবে। তখন রংপুর এক্সপ্রেসের বিলম্ব হওয়ার আর কোনো আশঙ্কা থাকবে না। এটাও চলবে সময় মেনে। উল্লেখ্য, পুরাতন সিøপার দিয়ে কুড়িগ্রাম-তিস্তা রেললাইন সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে অভিযোগ ওঠে এ কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তুমুল সমালোচনাও হচ্ছে। লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, যারা সমালোচনা করছে তারা না জেনে বা না বুঝে তা করছেন। আমরা যা করছি তা যাত্রীদের সুবিধার জন্যই করছি। বিশেষ করে রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীদের সুবিধার্থে রেললাইন সংস্কার করা হচ্ছে।
২০১১ সালের ২১ আগস্ট ঢাকা-রংপুর রেলপথে চালু হওয়া রংপুর এক্সপ্রেস প্রায় সাড়ে ৫ বছর ধরে চলেছে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে মেরামত করা অতি পুরাতন ইরানী কোচ দিয়ে। উদ্বোধনের সময় বলা হয়েছিল, খুব শিগগিরি রংপুর এক্সপ্রেসের কোচগুলো পাল্টে ফেলা হবে। কিন্তু সাড়ে ৫ বছরেও তা হয়নি। শুরুতে ১১টি কোচ দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পরে এসি কেবিনসহ দুটি কোচ কেটে ফেলা হয়। পুরাতন কোচ নিয়ে চলাচল করলেও রংপুর এক্সপ্রেসের গতি বেশি। সর্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার গতিতে চলে এই ট্রেন। এমনকি এই ট্রেনের স্টপেজও কম। সে কারণে উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের পছন্দের ট্রেন এটি। রংপুরবাসীর সেই পছন্দের কথা বিবেচনা করে রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক রংপুর এক্সপ্রেসে সাদা কোচ সংযোজনের নির্দেশ দেন। চলতি বছরের ২০ ফেব্রæয়ারি কমলাপুর রেল স্টেশনে সাদা কোচের রংপুর এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী।
এদিকে, কুড়িগ্রামের রমনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত সরাসরি একটি ট্রেনের দাবি করে আসছে কুড়িগ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দারা। এ প্রসঙ্গে রেল নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি উলিপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নূর আমীন ইনকিলাবকে বলেন, কুড়িগ্রাম থেকে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৪০টা দূর-পাল্লার বাস ঢাকায় যাতায়াত করে। কিন্তু এখান থেকে ঢাকার কোনো ট্রেন নাই। রমনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটা এক্সপ্রেস ট্রেনের দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু সরকার আমাদের দাবিকে পাত্তাই দিচ্ছে না। তিনি বলেন, আমাদেরকে সান্ত¦না দেয়ার জন্য একটা শাটল ট্রেন দেয়া হয়েছে। যেটা রংপুর এক্সপ্রেসের সাথে সংযুক্ত। কিন্তু এই শাটল ট্রেনও সময় মেনে চলতে পারে না ভাঙ্গাচোরা রেললাইনের কারণে। গত কয়েকদিন ধরে কুড়িগ্রাম থেকে তিস্তা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার রেললাইন সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এ কাজেও অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ ভীষণ ক্ষুব্ধ।
কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের দাবিতে কুড়িগ্রামের এমপি রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জাতীয় সংসদেও বক্তব্য দিয়েছেন। রেলমন্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন। সেই আলোকে আপাতত রংপুর এক্সপ্রেসের সাথে সংযুক্ত করে কুড়িগ্রাম থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত একটি শাটল ট্রেন চালু করা হয়। কিন্তু রেললাইন ত্রæটিপূর্ণ থাকায় সেই ট্রেন সময় মেনে চলতে পারছিল না। এতে করে ২০ ফেব্রæয়ারি রংপুর এক্সপ্রেস সাদা কোচে নতুনরূপে চালু হওয়ার পর থেকে বিলম্বের তালিকা দীর্ঘ হতে থাকে। এক পর্যায়ে বিলম্ব ১২ ঘণ্টাও পেরিয়ে যায়। এক সময় এমনও দেখা গেছে, শনিবারের ট্রেন ঢাকায় এসেছে রোববার। শাটল সংযুক্ত করার পর রংপুর এক্সপ্রেসের এই অবনতির পর নড়েচড়ে বসেন রেল ভবনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। বিশেষ করে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. হাবিবুর রহমান এ নিয়ে রাতদিন ব্যস্ত ছিলেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত গতি ফিরে পায় রংপুর এক্সপ্রেস।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম থেকে তিস্তা পর্যন্ত যে রেললাইন আছে তা দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার করা হয়নি। রেললাইনের নিচে পাথর নেই। লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম জানান, এই রেললাইনের ১০ কিলোমিটার দূরত্বে ২৫ কিলোমিটার বেগে এবং বাকী ১০ কিলোমিটার দূরত্বে সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিবেগে ট্রেন চলতে পারে। এটাকে বাড়ানোর জন্যই রেললাইন সংস্কার করা হচ্ছে। দিনাজপুর থেকে আনার রিলিফ সিøপার ও বুড়িমারী থেকে আনা পাথর দিয়ে এ কাজ করা হচ্ছে। এর জন্য পৃথক কোনো বাজেট বা বরাদ্দ নেই।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই কাজের সমালোচনা করে বলা হয়েছে, ৬০ হাজার নতুন সিøপার বরাদ্দ থাকার পরেও কুড়িগ্রাম থেকে তিস্তা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার রেললাইন সংস্কারে পুরাতন পঁচা নষ্ট সিøপার ব্যবহার করা হচ্ছে। একই সাথে নিয়মের তোয়াক্কা না করে পাথর না দিয়ে মাটির উপর রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফেসবুকে এই তথ্যসম্বলিত পোস্ট ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। তাতে কুড়িগ্রামসহ বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের শত শত মানুষ নানান রকম মন্তব্য লিখেছেন। বিষয়টি জানার পর বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্যানস ফোরামের একজন সদস্য বলেন, ভাই রংপুর এক্সপ্রেসের কানেকটিং শাটল ট্রেনের জন্য নিজস্ব উদ্যোগে লালমনিরহাট বিভাগ কাজটি করছে এটা জানলে কেউই এরকম বিরোধিতা করতো না। আমরা রংপুর এক্সপ্রেসের ভালো চাই, উন্নতি চাই।



 

Show all comments
  • Tania ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৩৭ পিএম says : 0
    seta hole khub valo hobe
    Total Reply(0) Reply
  • sajadul islam salman ১ এপ্রিল, ২০১৭, ৯:৫৩ পিএম says : 0
    আমি যা বলতে চাই তা হল kurigram থেকে ঢাকা পযন্ত সরাসরি রেল যোগাযোগব্যবস্থা করে দেওয়া হউক। আর লাইনের কাজ যেন ভালভাবে সম্পন্ন হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • রেদোয়ান ২ এপ্রিল, ২০১৭, ৩:৪৬ পিএম says : 0
    সাধারণ মানুষের জীবন এবং স্বপ্ন নিয়ে খেলা করার অধিকার কারো নেই। দেশ টাকে এগিয়ে নিতে হলে ১ কাজ ১০ বার না করে ১বারেই করা উচিৎ। ডিজিটাল বাংলাদেশ সুধু 3G ইন্টারনেট এই ডিজিটাল যেন না হয় এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
    Total Reply(0) Reply
  • রাশেদুল ইসলাম ২ এপ্রিল, ২০১৭, ৪:৪৩ পিএম says : 0
    আমাদের দাবি চাই
    Total Reply(0) Reply
  • md jahid rajar har ২ এপ্রিল, ২০১৭, ১০:১৩ পিএম says : 0
    no comment, we want just, vawaiya express in kurigram,
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Ismail hossain (Merchandising Manager) ৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:১৭ এএম says : 0
    ডিজিটাল বাংলাদেশ সুধু 3G ইন্টারনেট এটাই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ