পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী ২ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা। এবারের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী। যা গতবারের তুলনায় ৩৪ হাজার ৯৪২ জন কম। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ তথ্য জানান। পরীক্ষারসূচি অনুযায়ী ২ এপ্রিল থেকে ১৫ মে অনুষ্ঠিত হবে তত্ত¡ীয় পরীক্ষা। পরবর্তীতে ১৬ মে থেকে ২৫ মে’র মধ্যে হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার ২ হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৮৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে। পরীক্ষার্থী কমলেও গতবারের চেয়ে এবার ৩৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৪৫টি পরীক্ষাকেন্দ্র বেড়েছে। ঢাকার বাইরে এবার বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ২৭১ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে, এর মধ্যে ১২৯ জন ছাত্র এবং ১৪২ জন ছাত্রী। এবার ২৬টি বিষয়ের ৫০টি পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। গত বছর ১৯টি বিষয়ের ৩৬টি পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে হয়। এইচএসসিতে ২০১২ সালে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল প্রশ্নে হয়। ২০১৩ সালে ১৩টি বিষয়ের ২৫টি পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে হয়েছিল। নাহিদ বলেন, পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত¡ীয়) পরীক্ষা হবে। উভয় পরীক্ষার মধ্যে কোনো ব্যবধান থাকবে না। এবারো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রæতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবেন। আর অটিস্টিকসহ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা পাবেন অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময়। এ ধরনের শিক্ষার্থীরা অভিভাবক, শিক্ষক বা সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষাকেন্দ্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ছবি তোলা যায় এমন ফোন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও সঙ্গে রাখতে পারবেন না। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের কেন্দ্রে প্রবেশ নিষেধ। নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা হবে আশা করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নাহিদ বলেন, তোমরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে ছুটো না। অভিভাবকদের কাছে আবেদন এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা যেন নজর না দেয়। শিক্ষকতা সব থেকে মহত কাজ, তাদের সম্মান-মর্যাদা পেতে হলে সে রকম করে চলতে হবে। পরীক্ষা এলে নানা জন নানা উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, এর সঙ্গে শিক্ষকরাও যুক্ত হয়ে গেছেন। কিন্তু তারাই আমাদের শেষ ভরসা। তাদের ক্ষমা করার সুযোগ নেই, চিহ্নিত হচ্ছেন। একজন শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, আরেকজনকে বরখাস্তের আদেশ যাচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁসের নামে ছেলেমেয়েদের বিভ্রান্ত করা হয় জানিয়ে নাহিদ বলেন, যারা ভুল প্রশ্ন পায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কোনো কোনো অঞ্চলে সীমিত পরিসরে প্রশ্ন প্রকাশ হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে সকলের সহযোগিতা চাই। শিক্ষকদের মধ্যে যারা বিপথগামী হয়ে গেছেন তাদের শিক্ষক হিসেবে থাকার আর অধিকার নেই।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি প্রফেসর মাহবুবুর রহমান জানান, ২০১৫ সালে এসএসসিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়া এবং ২০১৫ সালে যশোর বোর্ডে ফল বিপর্যয়ের পর অনিয়মিত পরীক্ষার্থী কমায় এবার এইচএসসিতে মোট পরীক্ষার্থী কমেছে। এবার এইচএসসিতে আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে ৯ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ জন, মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ৯৯ হাজার ৩২০ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম-এ ৯৬ হাজার ৯১৪ জন এবং ডিআইবিএসে ৪ হাজার ৬৬৯ জন পরীক্ষা দেবে। এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৭ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৯ জন ছাত্রী।
শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার বিষয়ে প্রফেসর মাহবুবুর রহমান জানান, ২০১৪ সালের এসএসসিতে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৩৩১ জন পাস করে। আর ২০১৫ সালে পাস করেছিল ১২ লাখ ৮২ হাজার ৬১৮ জন। ২০১৪ সালের থেকে ২০১৫ সালে এসএসসিতে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী কমে ২০ হাজার ৭১৩ জন। ফলে ওইবার ২০ হাজার ৭১৩ জন কম শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হয়। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে যশোর বোর্ডে ইংরেজিতে ফল বিপর্যয় হলে এই বোর্ডে সার্বিক পাসের হার ৪৬ শতাংশে নেমে আসে। ২০১৬ সালে পাসের হার দাঁড়ায় ৮৬ শতাংশ। ফলে যশোর বোর্ডে অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৭৮২ জন কমে যায়। এসএসসিতে পাসজনিত কারণে এবারের এইচএসসিতে ২০ হাজার ৬১৩ জন এবং অনিয়মিত পরীক্ষার্থী কমায় আরও ২৫ হাজার ৭৮৩ জন পরীক্ষার্থী কমেছে বলে জানান তিনি। এছাড়া ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩২ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করলেও এদের মধ্য থেকে নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে ৯ লাখ ৩৫ হাজার ১৪৫ জন এইচএসসিতে অংশ নেবে। এবার অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৫৪ জন। এর বাইরে এবার ৩ হাজার ২৬২ জন প্রাইভেট এবং ৬ হাজার ২৫ জন মান উন্নয়ন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
বিবন্ধন করেও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সবাই পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে পারে না। নিবন্ধন করে টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে আসতে হয়, টেস্টেও অনেকে বাদ পড়ে। কিছু শিক্ষার্থী চাকরি বা পড়াশোনার জন্য বিদেশে যায়। নানা কারণে ড্রপ আউট হয়, কেউ যাতে ঝরে না পড়ে সে বিষয়ে আমরা জোর দেব। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর এস এম ওয়াহিদুজ্জামানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।