Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মোরেলগঞ্জে ট্রলারডুবিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪, নিখোঁজ ৮

আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পানগুছি নদীর দু’পাড়

| প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোরেলগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় সময় বাড়ার সাথে সাথে নিহতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই সাথে পানগুছি নদীর দু’পাড়ে স্বজনহারানো মানুষের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে সেখানকার পরিবেশ। কারো পিতা, কারো ভাই, বোন, মেয়ে ও ছেলে খরস্রোতা পানগুছি নদীতে ভেসে গেছে। স্বজন হারানো মানুষ গুলো খুজে ফিরছে নিহত স্বজননের মৃত দেহটি। মৃত দেহ উদ্ধারের খবর পেলেই সেখানে ছুটে যাচ্ছে স্বজনেরা। অনেকেই আবার নিজ উদ্যোগে ট্রলার নিয়ে নদীতে খুঁজে ফিরছেন স্বজনের মৃতদেহ। জীবিত না হলেও লাশ ফিরে পেতে চায় তারা।
নদীর পাড়ে নিজ স্ত্রীকে খুঁজতে থাকা পিরোজপুর জেলার বালিপাড়া গ্রামের গ্রামের খলিলুর রহমান বলেন, গত দুই দিন ধরে স্ত্রী নাসরিন বেগমের মৃতদেহটির জন্য অপেক্ষ করছি। এখনও পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পায়নি।
স্ত্রীর খোঁজে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্য জাহিদ হোসেন লিটন বলেন, ঘটনার দিন ডুবে যাওয়া ট্রলারে আমিসহ আমার ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী ছিল। ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার সময় আমি ও আমার ছেলে- মেয়ে নদীর পাড়ে সাঁতরে উঠতে পারলেও আমার স্ত্রী নাসিমা বেগম নদীতে ভেসে যায়। এখন পর্যন্ত তার লাশ আমি পায়নি।
মায়ের লাশ নিয়ে ফিরতে থাকা কালিকাবাড়ী গ্রামের তরিকুল ইসলাম ও চিংড়াখালী গ্রামের লোকমান সরদার জানান, লাশ উদ্ধারের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ ১৫ হাজার টাকার চেক দেয়া হয়েছে।
এদিকে ট্রলার ডুবির ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে। নৌ-বাহিনীর কমান্ডার শাহরিয়ার ও বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক সরদার মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উদ্ধার হওয়া ৯ জনের মধ্যে রয়েছেন, মোরেলগেঞ্জর চিংড়াখালী গ্রামের তবিবুর রহমান তোতার স্ত্রী মুন্নি বেগম (৩৫), কালিাকাবাড়ি গ্রামের আব্দুস ছালাম শেখের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৫), কাছিকাটা গ্রামের কাশেম শেখের ছেলে আব্দুল মজিদ শেখ (৭৫), কাছিকাটা গ্রামের নাসির শেখে পুত্র নাজমুল (৬), বুরুজবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল গফুর হাওলাদরের ছেলে আনছার হাওলাদার (৫০), রায়েন্দা গ্রামের সামসুল হুদার ছেরে আল সামস্ আবির (১৬), বাশবাড়িয়া গ্রামের আলম চাপরাশির স্ত্রী সালমা (৩০) ও তার দুই বছরের শিশুপুত্র সাজ্জাদ, কাছিকাটা গ্রামের নাসির শেখের পুত্র নাজমুল (৬)। এছাড়া গত বুধবার ও মঙ্গলবার উদ্ধারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন, মোরেলগঞ্জের পুটিখালী গ্রামের হালিম হাওলাদার কন্যা রিমা বেগম (২৫), মোরেলগঞ্জের কালিকাবাড়ি গ্রামের মহসিন হোসেনের স্ত্রী বিউটি বেগম (৩৮), গুয়াবাড়িয়া গ্রামের হাসেম হাওলাদারের স্ত্রী সিয়ার বানু (৫০), চিংড়াখালী গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৭৫) ও উত্তর ফুলহাতা গ্রামের মোয়াজ্জেম হাওলাদারের স্ত্রী নাদিরা বেগম (২০)।
নৌবাহিনীর কমান্ডার শাহরিয়ার জানান, ট্রলার ডুবির ৩য় দিনে নিখোঁজের তালিকা অনুযায়ী ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি নিখোঁজদের উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ