Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মৌলভীবাজারে একটি আস্তানায় অভিযান সমাপ্ত

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে ৭-৮ জঙ্গি নিহত

| প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এস এম উমেদ আলী : মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ফতেপুর এলাকার নাসিরপুরের জঙ্গি আস্তানার অপারেশন “হিট ব্যাক” এর প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। জঙ্গি আস্তানার বাড়িতে ৭-৮ জন জঙ্গি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রেস বিফিংয়ে জানিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। জঙ্গি আস্তানার বাড়িতে ৭-৮ জন জঙ্গির ছিন্নভিন্ন লাশ পড়ে আছে। যেগুলো ক্ষতবিক্ষত থাকায় নারী, পুরুষ ও শিশু কয়জন তা নিশ্চিত করে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। তবে ডেড বডিগুলো চিহ্নিতকরাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ করছে ক্রাইমসিন ইউনিট।
তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যায় সোয়াতের অভিযানের শুরুতে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা সপরিবারে মৃত্যুবরণ করে এমনটি ধারণা করছেন তারা। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থলের কাছেই মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে প্রেস বিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান, এডিশনাল ডিআইজি নজরুল ইসলাম, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল ও অন্যান্য সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা।
অভিযানের শুরু থেকেই এই প্রথম তারা গণ্যমাধ্যমের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘটনার বর্ণনা দেন। মনিরুল ইসলাম জানান, মৌলভীবাজারের নাসিরপুরের জঙ্গি আস্তানায় ড্রোন ব্যবহার করে আইইডি ও অন্যান্য বিস্ফোরক সনাক্ত করেন সোয়াট টিমের সদস্যরা। পরে প্রবেশ পথসহ বিভিন্ন স্থানে রাখা অবিস্ফোরিত গ্রেনেড ও বোমা নিষ্ক্রিয় করে ভেতরে প্রবেশ করে তারা। নাসিরপুরে নিহত জঙ্গিরা নব্য জেএমবির সদস্য বলেও ধারণা করছেন তারা।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, আতিয়ামহলে অভিযানের সময় সংঘটিত জোড়া বিস্ফোরণের সূত্র ধরেই কাউন্টার টেরোরিজমের গোয়েন্দারা এই আস্তানার সন্ধান পায়। প্রথমে বড়হাটের বাড়িটি চিহ্নিত হলে ওখান থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নাসিরপুরের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এছাড়া নাসিরপুরের এই আস্তানাটিকে জঙ্গিরা নিজেদের ‘হাইডআউট’ হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলো বলেও জানান তিনি। গ্রামীণ জঙ্গি আস্তানার মধ্যে সিলেট বিভাগে এটিই প্রথম। তবে ঘটনার সাথে সিলেটের আতিয়া মহল, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ও বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা বহনকারী যুবকের বোমার সাথে ওখানের বোমার মিল রয়েছে। এদিকে নাসিরপুরের অভিযান শেষ হওয়ার পর এখন সোয়াত টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মৌলভীবাজার পৌর এলাকার বড়হাটের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার অভিযান না হলে আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে অভিযান হবে বলে তিনি জানান।
অভিযান শুরুর পর দুপুর ১২টার কিছু আগে থেকে টানা গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় বেশ কয়েক দফায় ঘটনাস্থলে থেকে থেমে থেমে গুলি চলে। বেলা ১টা ৪ মিনিটে ফতেহপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে বড় একটি বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। এরপর সোয়াতের সদস্যরা ওই বাড়ির ভেতরে গ্যাস ছোড়েন। এ সময় ঝাঁঝাল গ্যাসে পুরো এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এর পর থেকে আবারও ওই বাড়ির আশপাশ থেকে টানা গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
বুধবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের দুটি জঙ্গি আস্তানার মধ্যে ফতেপুরে ‘অপারেশন হিট ব্যাক’ নামে সোয়াতের এই অভিযান শুরু হয়। রাতে অভিযান বন্ধ করে দিয়ে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা শুরু হয়নি। সকাল সাড়ে ৭টায় সোয়াতের একটি দল ফতেহপুরের জঙ্গি আস্তানায় পৌঁছায়। সকাল ৮টার দিকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ফতেহপুরের জঙ্গি আস্তানার বাড়িতে পৌঁছায়। পরে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অভিযান শুরু হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৌলভীবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ