Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পরেই কওমী সনদের স্বীকৃতি

প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:১৬ এএম, ৩০ মার্চ, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির ব্যাপারে সকল পক্ষই একমত হয়েছেন। এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। শিগগিরই কওমি মাদরাসার সব পক্ষের সাথে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বৈঠকেই স্বীকৃতির ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে।
গত পরশু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীসহ উচ্চপর্যায়ের রুদ্ধদ্বার দীর্ঘ বৈঠকে উভয়পক্ষই এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিবদ্বয়, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব, মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান, সরকার সমর্থক কওমি মাদরাসাগুলোর আলেমদের শীর্ষ নেতা মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ, কওমি মাদরাসা বোর্ড বেফাকের প্রতিনিধি এবং হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পুত্র মাওলানা আনাস, শায়খুল হাদিস মরহুম আল্লামা আজিজুল হকের পুত্রও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টারও পর পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কঠোর গোপনীয়তায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বৈঠকের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মিডিয়াকে জানান, বৈঠকে উভয় পক্ষই কওমি সনদের স্বীকৃতির ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। উভয়পক্ষই একমত হয়েছেন যে, সনদের স্বীকৃতির ব্যাপারে কারো কোনো আপত্তি নেই। এ স্বীকৃতি কীভাবে দেয়া হবে তার খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করতে হয়তোবা আগামী দুই-এক দিন বা এক সপ্তাহ লাগতে পারে। এরপরই প্রধানমন্ত্রীর সাথে উভয়পক্ষের আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পরই সনদের স্বীকৃতির ব্যাপারে ঘোষণা দেয়া হবে।
সূত্র জানান, বেফাকসহ কওমি মাদরাসার যেসব আঞ্চলিক বোর্ড বিদ্যমান রয়েছে সেগুলো ঠিক থাকবে। তবে এগুলোর নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে। এ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই কওমি সনদের স্বীকৃতি দেয়া হবে। উভয়পক্ষই এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, সনদ দেয়া হবে ‘ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিষয়ে’। এ দু’টি বিষয়ের কোর্স কারিকুলামও প্রণয়ন করবে মাদরাসা বোর্ডগুলো। এ ছাড়াও আনুষঙ্গিক অন্য সব বিষয়ের ব্যাপারে উভয় পক্ষই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে।
জানা গেছে, কওমি মাদরাসাগুলোর সর্ববৃহৎ শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়াসহ সারা দেশে বিদ্যমান আঞ্চলিক কওমি মাদরাসা বোর্ডগুলোর কর্তৃপক্ষ বা মুরুব্বিরা এবং মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদের নেতৃত্বাধীন মাদরাসাগুলোর মুরুব্বিরা স¤প্রতি কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতি আদায়ের ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে একমত হয়েছেন। তারা এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সাথেও বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকগুলোর সিদ্ধান্তের আলোকেই গত পরশু সরকারের নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের মন্ত্রী ও উচ্চপর্যায়ের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সাথে দীর্ঘ বৈঠক করেন। গত পরশুর বৈঠকের মতামত নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত আলেমদের একটি অংশ আজ-কালের মধ্যে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সাথে আবার বৈঠক করবেন বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকের মতামত ও সিদ্ধান্তগুলো তাকে (আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেবকে) অবহিত করবেন এবং তার সম্মতি গ্রহণ করবেন। এরপরই প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে।
এ বিষয়ে বেফাকসহ অন্যকিছু বোর্ডের দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের কেউই এ মুহূর্তে মন্তব্য করতে রাজি হননি। বেফাক অফিসের এক কর্মকর্তা না প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে জানান, সারা দেশের কওমী আলেমরা খুবই উদ্বেগের ভেতর আছেন। তারা জানেন না সরকারের নিয়োজিত লোকদের সাথে গভীর সম্পর্ক রেখে বেফাক কোন দিকে যাচ্ছে। স্বীকৃতির নামে কওমী অঙ্গনকে কেমন মাসুল দিতে হবে, এ বিষয়ে দেশব্যাপী কওমী আলেম ওলামা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যথেষ্ট উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ