পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মামুনুর রশীদ মামুন, সিলেট থেকে : সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আতিয়া মহলে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে নিহত নারী জঙ্গির পরিচয় শনাক্ত করতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে সিলেট এসেছেন মনজিয়ারা পারভীন ওরফে মর্জিনার বাবা এবং ভাই। সিলেটে নিহত নারী জঙ্গি মনজিয়ারা কি না, তা শনাক্ত করতে এসেছেন তারা। নিহত জঙ্গি মর্জিনা তাদের পরিবারের সদস্য কিনা সেটি নিশ্চিত করবেন। মনজিয়ারা কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে পুলিশের অভিযানে নিহত জঙ্গি জুবাইরা ইয়াসমিনের বোন।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, বুধবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে সিলেটে এসেছেন মনজিয়ারার বাবা নুরুল ইসলাম ও বড় ভাই জিয়াউল হক। তাদেরকে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি আতিয়া মহলে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে চার জঙ্গি নিহত হয়। তন্মধ্যে একজন নারী জঙ্গি। এ নারী জঙ্গি বাসা ভাড়া নেয়ার সময় নিজেকে মর্জিনা বলে পরিচয় দিয়েছিল। সাথে তার স্বামী পরিচয়ধারী কাওছার নামের এক ব্যক্তি ছিল।
জানা যায়, মর্জিনাই বান্দরবানের মনজিয়ারা পারভিন কিনা এটা নিশ্চিত হতে মঙ্গলবার সকালে সিলেট পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বান্দরবান জেলা পুলিশকে বার্তা পাঠানো হয়। আর এ বার্তা পেয়ে বান্দরবান জেলা পুলিশ মনজিয়ারা পারভিনের পরিবারের দুই সদস্যকে সিলেট পুলিশের কাছে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। সীতাকুন্ডে এই পরিবারের আরেক সদস্য জহিরুল হককে (জসিম) জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
দুই লাশের অপেক্ষায় পুলিশ
সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোরা লাশগুলো উদ্ধার করেছে বলে শোনা গেলেও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা গতকাল দুপুরে জানিয়েছেন তারা এখনো লাশের অপেক্ষায় আছেন।
তিনি জানান, আমরা লাশগুলোর অপেক্ষায় আছি। কিন্তু এখনো তা আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। উদ্ধার করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উদ্ধার করা হলেতো সাথে সাথে আমাদের কাছে হস্তান্তর করবেন। সুতরাং উদ্ধার করা হয়েছে, এ কথা এখনো আমরা বলতে পারছিনা।
এদিকে, আতিয়া মহলকে কেন্দ্র করে শিববাড়ি এলাকার তিন বর্গ কিলোমিটার জুড়ে নিরাপত্তা আগের মতোই জোরদার রয়েছে।
১৪৪ ধারা বহাল থাকায় এ এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ক্ষতবিক্ষত আতিয়া মহল
সিলেট নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ডের শিববাড়ি এলাকার পাঁচতলা ভবন ‘আতিয়া মহল’। অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা উস্তার আলীর। নিজের স্ত্রীর নামে নির্মাণ করেন এই ভবন। এই ভবনেই আস্তানা গেড়েছিলো চার জঙ্গি।
বিশাল এই ভবনটি এখন ক্ষতবিক্ষত-কংকালসার। যেনো কেবল কাঠামোটাই দাঁড়িয়ে আছে পুরো ভবন জুড়ে গুলি বোমার চিহ্ন। ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে ভবনের নিচের তলার বেশিরভাগ দেওয়াল। জঙ্গি বিরোধী অভিযানের দাগ পুরো ভবনটির দেয়ালজুড়ে।
ভবন মালিক উস্তার মিয়া জানান, পাঁচতলা ভবনের প্রতি তলায় রয়েছে ছয়টি করে ফ্ল্যাট। সব মিলিয়ে ৩০ টি ফ্ল্যাটের ২৮টিই ভাড়া নিয়েছিলো বিভিন্ন পরিবার। নিচ তলার একটি ফ্ল্যাটে গত জানুয়ারিতে কাওসার আহমদ ও মর্জিনা বেগম দম্পতি পরিচয়ে ভাড়া নেন। কাওসার নিজেকে প্রাণ’র কর্মকর্তা পরিচয় দেন।
তবে পুলিশের ভাষ্যমতে, কাওসার ও মর্জিনা দু’জনই জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত। এই ভবনে বিপুল গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক জড়ো করার তথ্যও জানায় পুলিশ।
গত শনিবার থেকে জঙ্গি দমনে এই ভবনটিতে অপারেশনে নামে সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল। প্রথমে ভবনের বিভিন্ন তলার দেওয়াল ও কলাপসিবল গেট ভেঙ্গে ভবনে আটকে পড়া ৭৮ জন বাসিন্দাকে বাইরে নিয়ে আসে সেনাবাহিনী। এরপর টানা চারদিন ধরে চলতে থাকে গুলি-বোমা বিস্ফোরণ। ভবনের ভেতরে গুলি ও টিয়ারশেল ছুঁড়তে ভবনটির বিভিন্ন দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলতেও দেখা যায়। চারদিনের গুলি বোমায় কয়েকবার আগুন ধরতে ও দেখা যায় ওই ভবনে। বুধবার আতিয়া ভবনের পেছনের দিকে ঘিরে দেখা যায়, নিচ তলার পুরো দেওয়াল ভেঙ্গে পড়েছে। পাশের জমিতে পরে আছে ইট সুরকী। উপরের দিকও ভাঙ্গাচোরা। আগুনে কালো হয়ে আছে অনেক ছাদ। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঘিরে রেখেছেন পুরো বাড়িটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।