পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দলের আলোচনা সভা
স্টাফ রিপোর্টার : জঙ্গিবাদ দমনে সংলাপের উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। গতকাল বুধবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই আহŸান জানান।
তিনি বলেন, আমি সরকারকে আবারও বলছি, এখনই উদ্যোগ নেন যদি আপনারা এই উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদের দমন করতে চান। কেবল আহŸান জানালে কাজ হবে না, আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) উদ্যোগ নিতে হবে। আসুন, বসুন এই ইস্যুটাকে নিয়ে সকল রাজনৈতিক দল, সব মতের মানুষকে নিয়ে বসুন, আলোচনা করুন এবং দেখেন জঙ্গিবাদ দমন হয় কি না। আমি আশা করব, সরকারের সুমতির উদয় হবে এবং তারা এ ব্যাপারে আরো সিরিয়াস হবেন। আর যদি না করেন, তাহলে বুঝব যে, আপনাদের এটা রাজনৈতিক কোনো কৌশল বা রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য আছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ-ভারত অসম প্রতিরক্ষা চুক্তি আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব কোন পথে’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
গণতন্ত্র না থাকায় জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে মন্তব্য করে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এই উগ্রবাদের উত্থানের জন্য আমি সরকারকেই দায়ী করব। কারণ আপনারা তো গণতন্ত্রকে হরণ করেছেন। মূল কথা হলো গণতন্ত্রকে হরণ করার কারণে আজকে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে এবং এই উত্থান আমরা দেখতে পারছি, অতিরঞ্জিত করে, বিরাট আকারে করে এটাকে আন্তর্জাতিক একটা দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য, নিজেদের রাজনৈতিক ফয়দা অর্জন করার জন্য আজকে জঙ্গিবাদের বিষয়টিকে একেবারে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি বলব, এটা আওয়ামী লীগের ক্ষতি হবে, সরকারের ক্ষতি হবে, দেশের ক্ষতি হবে, আমাদের সকলের ক্ষতি হবে।
জঙ্গিবাদ দমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একার পক্ষে জঙ্গি উত্থান দমন করা সম্ভব হবে না, র্যাব এবং পুলিশ দিয়ে সম্ভব হবে না। কিছু দূর করা যাবে, কিন্তু পুরোপুরি করা যাবে না। এটার একমাত্র উত্তর হলো- বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আজকে আপনারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন, জঙ্গিবাদ চলে যাবে। এটা একমাত্র দেশের মানুষ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং দেশের সকল শ্রেণীর মানুষকে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে পারি জঙ্গিবাদ কিছুতেই বিস্তার লাভ করতে পারবে না এবং এটা দমন করা সম্ভবপর হবে।
জঙ্গিবাদ একটা ‘জাতীয় সমস্যা’ উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, আমাদের নেত্রী ও আমরা বহুবার বলে এসছি, আজকে যদি সরকার সত্যিকার অর্থে মনে করে থাকে জঙ্গিবাদের উত্থান বাংলাদেশের জন্য একটি জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাহলে বারবার আহŸান জানাব, তাহলে তাদের উচিৎ হবেÑ একটা উদ্যোগ গ্রহণ করা বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল, সকল শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ সকলকে নিয়ে আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করি এই জঙ্গিবাদকে দমন করার জন্য।
সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার যদি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেন, আমরা সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করব এবং জঙ্গিবাদের ব্যাপারে কোনো আপোষ নেই। কারণ বিএনপি একটি মধ্যপন্থী উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমরা জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করি না, একে ঘৃণা করি।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীসহ তারা উন্নয়নের কাজের কথা বলে ভোট চাওয়া শুরু করে দিয়েছেন। এই বগুড়ায় করেছেন, আজকে ফরিদপুরে করেছেন, এর আগে ল²ীপুরে করেছেন। যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই ভোট চাচ্ছেন। এই নির্বাচন কমিশন যদি সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন হতো, হয় তাদেরকে (ক্ষমতাসীন দল) বন্ধ করে দিতেন। না হয়, আমাদের ব্যবস্থা করতেন যাতে করে আমরাও মাঠে নেমে ধানের শীষের পক্ষের ভোট চাইতে পারি। তাহলে আমরা এটাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলব। নির্বাচনের পরিবেশ, গণতন্ত্রের পরিবেশ এখন থেকে সৃষ্টি করতে হবে। এক দল করতে পারবে, আরেক দল করতে পারবে নাÑ এটা হয় না। আমাদেরকে এখন থেকে সমান সুযোগ দিতে হবে।
ভারতের নির্বাচন কমিশন হলে কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনের ভোট চাওয়া বন্ধ করে দিতে বলে মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
বিএনপিকে মুক্তিযোদ্ধা দল দাবি করে মওদুদ আহমদ বলেন, আমাদের নেতা শহীদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন, শুধু তাই নয়, হাতিয়ার হাতে নিয়ে যুদ্ধ করেছেন, দেশ স্বাধীন করেছেন। আমাদের দলে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেশি আছে, তাদের (আওয়ামী লীগ) চাইতে। আমরাই হলাম সত্যিকার অর্থে মুক্তিযোদ্ধা দল, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার মূল শক্তি।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চুক্তির কথা উঠেছে। জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী যেকোনো চুক্তির আমরা বিরোধী। এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট করে বলে এসেছি, এখনো বলবÑ এমন কিছু করবেন না, যাতে আমাদের জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণœ হয়। সেটা আমরা দেখব কি করে আসছেন, তারপর আমার মনে হয় উচিত হবে আমাদের বক্তব্য রাখা।
সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের শাহ মো: আবু জাফর. আবুল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।