পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রশ্নফাঁসকারীদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, এর সাথে জড়িত ছাত্র, শিক্ষক বা স্কুল যেই থাকুক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমনকি অভিভাবক হলেও তার বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেব, যার বিরুদ্ধেই তথ্য থাকবে আমরা ব্যবস্থা নেব। গতকাল (বুধবার) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে জাতীয় মনিটরিং কমিটি এই সভার আয়োজন করে। সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের যত বড়ই অপারেশন করতে হোক, হাত অর্ধেক কাটতে রাজি আছি, কিন্তু এই ক্যান্সার আমরা বহন করতে পারছি না, জাতি বহন করতে পারছে না। তিনি বলেন, আমরা সব কথা খুলেও বলতে পারছি না, হজমও করতে পারছি না- আমরা এ রকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছি, তবে আমরা মোটেই বসে নেই। মিথ্যা প্রচার করলে সেও দায়ী হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্ন ফাঁসরোধে বিজি প্রেসে নজর দিলেও গত তিন বছরে সেখান থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন বিতরণেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। শিক্ষকদের কাছে প্রশ্ন যাওয়ার পর তারা প্রচারে সম্পৃক্ত হয়ে যান। অভিভাবকরা নিজেরাও প্রশ্ন পাওয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। এরপরে তো আমাদের আর যাওয়ার জায়গা থাকে না। সমাজের সার্বিক অবক্ষয় ও মূল্যবোধহীনতা যদি শিক্ষকদের একটি অংশকে গ্রাস করে, তাহলে আমরা কীভাবে রক্ষা করব? তাদের হাতে আমাদের প্রশ্ন দিতেই হবে। কারণ তিনি তার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলোতে পাঠাবেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, তোমরা দয়া করে ভালো করে লেখাপড়া করে ভালো ফল কর। প্রশ্ন পাওয়ার আশায় ছুটলে তোমার মূল শিক্ষাটা নষ্ট হয়ে যাবে। আর অভিভাবকদের বলি, আপনার সন্তানকে শুধু সার্টিফিকেট দিলে হবে না, তাকে প্রকৃত মানুষ বানাতে হবে। অভিভাবক যদি টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে এসে তার হাতে প্রশ্ন তুলে দেন, তাহলে সর্বনাশ। সবার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, যার যার ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে সঠিক ন্যায্য কাজ করেন। আর ওই ধরনের শিক্ষক যারা, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দয়া করে মান-ইজ্জত থাকতে থাকতে এখনই নিজেরা স্বেচ্ছায় সরে যান, আপনাদের জন্য শিক্ষকতা না।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ফেইসবুক থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে কোনো শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেয়ার প্রমাণ পেলে ওই শিক্ষার্থীর ফল বাতিল করবে সরকার। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের উদ্দেশে সচিব বলেন, ফেইসবুক অ্যাডমিন বা যারা এর সাথে লিঙ্কড আছেন যদি তিনি ছাত্র হন তার ইনফরমেশনও আমাদের দরকার। কারণ আমরা আগামীতে যদি এমন কোনো প্রমাণ পাই যে কোনো ছাত্র এভাবে পরীক্ষা দিয়েছে তাহলে আমরা তার রেজাল্ট বাতিল করতে চাই। কারণ এটা একটি বিশাল বিষয়। জাতি গঠনে আগামী প্রজন্ম যদি এভাবে নষ্টের দিকে এগিয়ে যায়, আর আমরা যদি তা প্রতিরোধ করতে না পারি তাহলে এই দায়দায়িত্ব আমরা কোনোমতেই এড়াতে পারব না। গত কয়েক বছর ধরে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ার পর ওই প্রশ্নেই বেশ কয়েকটি পরীক্ষা নিয়েছে সরকার। মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আগের রাতে ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই এবারের এসএসসির ঢাকা বোর্ডের গণিতের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। সোহরাব হোসাইন বলেন, শুধু যারা (প্রশ্ন পেতে) প্রলুদ্ধ করছেন তারা ছাড়াও যারা প্রলুদ্ধ হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে যেতে হবে। কারণ অন্যায় যিনি করেন এবং অন্যায়কে যিনি সহায়তা করেন উভয়েরই সমান শাস্তি। আমরা যদি সেই পর্যায়ে না যাই তাহলে আমাদের ছাত্র-অভিভাবকদের মধ্যে লোভ থেকে যাবে। আমরা সেটাও প্রতিরোধ করতে চাই, যাতে আগামী দিনে ফেসবুকে যারা এ রকম অ্যাড দিয়ে যোগাযোগ করে প্রশ্ন নেয়ার উদ্যোগে সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।
সভায় গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম জানান, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকায় গত দুই মাসে ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজন অধ্যক্ষ, তিনজন শিক্ষক, একজন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক এবং ২০ জন ছাত্র। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ভাইবারের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের অ্যাডমিনও রয়েছেন তাদের মধ্যে। ফেইসবুকে একটি গ্রæপ থেকে এবারে এইচএসসির প্রশ্ন দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে জানিয়ে নাজমুল বলেন, ওই গ্রæপে দুইজন অ্যাডমিনের নেতৃত্বে ১৬ হাজার সদস্য আছে। এই চক্রকে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব, তাদের চিহ্নিত করেছি। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এ সংক্রান্ত আইনে শাস্তির পরিমাণ বাড়ানোর সুপারিশ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।