পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : সিলেটে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আদালত চত্বর থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। কারাগার ও বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজধানীতে মোড়ে মোড়ে চলছে তল্লাশি অভিযান। র্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক করেছে সরকার। জোরদার করা হয়েছে থানা, ফাঁড়ি ও ক্যাম্পের নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে আবারও জঙ্গি ইস্যুতে দেশব্যাপী একটা ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে শিববাড়ি পাঠানপাড়ার আতিয়া মহল নামে একটি ভবন ঘিরে ফেলে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সোয়াট এবং সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন। শনিবার সকালে শুরু হয় চূড়ান্ত অভিযান। শুরুতে সোয়াট এ অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন স্প্রিং রেইন’। কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পিছু হটে। প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরুল হাসানের নেতৃত্বে সেনা অভিযানের নাম বদলে হয় ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ি এলাকা ঘিরে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সেনা অভিযান শুরুর পর ব্যাপক গোলাগুলির মধ্যে গত শনিবারই ওই ভবন থেকে ৭৮ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই অভিযানের মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় আতিয়া মহল থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে এক জায়গায় দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হন। রোববারও চলে অভিযান। সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এরই মধ্যে কমান্ডোরা আতিয়া মহলের দুই দিকের দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। ওই দিন রাতে আবারও ব্রিফিংয়ে এসে জঙ্গি আস্তানার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার এবং ভেতরে চারটি লাশ পাওয়ার কথা জানান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। এদিকে, সেনাবাহিনী আতিয়া মহলের দায়িত্ব পুলিশের হাতে বুঝিয়ে দেয়ার আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পরপর চারটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। ওই ভবনে জঙ্গিদের ফেলে রাখা বোমা নিষ্ক্রিয়করণের কাজ চলছে বলে সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। সিলেটে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সাথে সাথে সারাদেশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এর মধ্যে উচ্চ আদালত থেকে বিচারকদের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সিলেটে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান ও পরবর্তীতে বোমা হামলার ঘটনার পর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা শহরে তল্লাশি চৌকি বাড়ানোর পাশাপাশি টহল জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জঙ্গি দমনে বিশেষ অভিযান পরিচালনা এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য তৎপরতা বাড়াতে র্যাব-পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে তাগিদ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। থানা, ফাঁড়ি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্যাম্পে বহিরাগতদের তল্লাশি করে ঢুকতে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। র্যাব-পুলিশকে বুলেটপ্রæফ জ্যাকেট পরিধানের পাশাপাশি তাদের অন্যান্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দায়িত্ব পালনেরও তাগিদ রয়েছে। সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোবল ভেঙে দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির লক্ষ্য নিয়ে এবার জঙ্গিরা মাঠে নেমেছে বলে সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে। তাই জনগণের জানমালের পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তবে এ ধরনের সতর্কতাবস্থার পরও জঙ্গি ইস্যুতে সারাদেশেই একটা ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অজানা শঙ্কায় সাধারণ মানুষ তটস্থ হয়ে পড়েছে। জঙ্গিরা ফের কখন ভয়ঙ্কর হামলা চালায়, কোথায় ফের জঙ্গি ঘাঁটির সন্ধান মেলেÑ এ উদ্বিগ্নতা জেঁকে বসেছে মানুষের মনে। পাশাপাশি পথে পথে তল্লাশি মানুষকে আরো ভীতসন্ত্রস্ত করে ফেলেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মোড়ে মোড়ে পুলিশের তল্লাশিকালে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতিকর অবস্থা দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে মিরপুরের এক ব্যবসায়ী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাচ্ছে, এটা প্রশংসনীয়। কিন্তু জঙ্গি ধরার জন্য পথে পথে এভাবে তল্লাশির খুব একটা প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এতে করে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।