পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ব্যাংকের সার্বিক কর্মকাÐে স্বচ্ছতা আনয়ন এবং গ্রাহকদের সর্বাধুনিক ব্যাংকিং সেবা দেয়ার লক্ষ্যে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আগে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনে এসেছে রূপালী ব্যাংক। গত ২৭ মার্চ শেষ শাখাটি কোর ব্যাংকিং সলুশনের (সিবিএস) আওতায় আনার মাধ্যমে এই মাইলফলক স্থাপন করে ব্যাংকটি। গতকাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বোর্ড সদস্য ও সংবাদকর্মীদের নিয়ে কেক কেটে এই অর্জন উদযাপন করেছেন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
এই অর্জনের ফলে ৫৬৩টি শাখার মাধ্যমে সারা দেশের গ্রাহকরা রিয়েল টাইম ব্যাংকিংয়ের সুবিধা পাচ্ছেন। অর্থাৎ, রূপালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টধারীরা দেশের যেকোন প্রান্তের শাখায় বসেই লেনদেন করতে পারছেন। আর প্রতিটি শাখার সারাদিনের হিসাব সন্ধ্যার মধ্যে চলে আসছে প্রধান কার্যালয়ে, যা নিশ্চিত করছে ব্যাংকটির কার্যক্রমের শতভাগ স্বচ্ছতা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আতাউর রহমান প্রধানের কঠোর নির্দেশনা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শতভাগ অটোমেশনে এসেছে ব্যাংকটি। গত বছরের আগস্টে দায়িত্ব নিয়েই অতি দ্রæততার সঙ্গে সবগুলো শাখা অটোমেশনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন আতাউর রহমান। শাখাগুলো কোর ব্যাংকিং সুল্যশনের আওতায় আনতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নানা অসঙ্গতি। দেখা যায়, পূর্বে অনেক শাখা লোকসানে থাকার পরও তথ্য গোপন করে মুনাফা দেখিয়ে আসছিল এতদিন।
জানা যায়, পূর্বের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের এই কর্মকাÐ ব্যাংকটির ওপর ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছিল। কারণ, লোকসানে থাকার পরও অসত্য মুনাফা দেখাতে গিয়ে একদিকে যেমন সাড়ে ৪২ শতাংশ হারে কর পরিশোধ করতে হয়েছে, তেমনি মুনাফার একটি অংশ সরকারকে দিতে হয়েছে। এতে ব্যাংকটি থেকে বিপুল অর্থ বেরিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ভিত আরও দুর্বল করে দিয়েছে।
জানা গেছে, এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে ব্যাংকটিকে বের করে আনতেই পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন আতাউর রহমান। তার নির্দেশে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ৪ মাসে ৫০৬টি শাখা সিবিএস-এর আওতায় আসে। বাকি ৫৭টি শাখা অনলাইনের আওতায় আসে গত সোমবারের মধ্যে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় লেগেছে লোকাল শাখা অনলাইনের আওতায় আনতে। কারণ, ব্যাংকটির প্রায় ৮০ ভাগ ঋণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয় এই শাখা থেকে। সবগুলো শাখা সিবিএস-এর আওতায় আসার পরে প্রকৃত আর্থিক চিত্র ফুটে ওঠে। এতে সাময়িক চাপ সৃষ্টি হলেও দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে সরকারি খাতের এই বাণিজ্যিক ব্যাংকটি।
প্রকৃত আর্থিক চিত্র হাতে আসার পর ব্যাংকটিকে দাঁড় করানোর পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধান নির্বাহী। পূর্বের পুঞ্জিভূত ২৪৭ কোটি টাকা লোকসান ইতোমধ্যেই কাটিয়ে উঠতে পেরেছে রূপালী। আদায় হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ ৬শ’ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। অব্যাহত লোকসানের দায়ে একসময় বিক্রি করে দেয়ার পরিকল্পনায় থাকা সরকারি ব্যাংকটি আগামী জুনের মধ্যেই বড় অংকের মুনাফা উপহার দিতে যাচ্ছে সরকারকে।
সিইও আতাউর রহমান প্রধানের নেতৃত্বে এখন ব্যাংকটির শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পালা। আর এমডি’র ভাষ্য অনুযায়ী, এই কাজে তাঁকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন মঞ্জুর হোসেনের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পরিষদ। বোর্ড সদস্যদের সততা ও দক্ষতায় গর্বিত আতাউর রহমান প্রধানের বক্তব্য, এত ভালো বোর্ডের অধীনে এর আগে তার কাজ করার সৌভাগ্য হয়নি।
ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাজে সন্তুষ্ট চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন প্রকাশ্যেই প্রশংসা করেছেন আতাউর রহমানের। বলেছেন, “এমডি’র ব্যাপক অর্গানাইজিং ক্ষমতা আছে। অনকে বেশি অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি এই ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন। এটা গত ছয় মাসে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে।”
“অতএব রূপালী ব্যাংক সামনে এগিয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নেই”Ñ বলেন সাবেক এই জ্যেষ্ঠ আমলা।
এই বিশাল সফলতার জন্য ব্যাংকের একঝাঁক তরুণ আইটি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, প্রায় সব ব্যাংকই অনলাইন কার্যক্রম শুরু করেছে, কিন্তু আমাদের রূপালী ব্যাংক সরকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ১০০% শাখা অনলাইন কার্যক্রমের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। এমনকি আমাদের ১টি শাখায় বিদ্যুৎ না থাকা সত্তে¡ও সোলার বিদ্যুতের সাহায্যে নিয়ে শাখাটিকে অনলাইনে এনেছি।
“ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে রূপালী ব্যাংক আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল”Ñ বলেন আতাউর রহমান।
এদিকে রূপালী ব্যাংকের এই অর্জনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা। তাঁর আশা, রূপালী ব্যাংকের দেখানো পথে বাকি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোও অতি দ্রæত অটোমেশন সম্পন্ন করবে।
স্বচ্ছতার স্বার্থে বাকি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকেও রূপালী ব্যাংকের পথ অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়ে সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ব্যাংকটির সিনিয়র ম্যানেজমেন্টর সদিচ্ছার কারণেই পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনে যাওয়া সম্ভব হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।