পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চালক হতে অষ্টম শ্রেণি পাস লাগবে : লাইসেন্স না থাকলে কারাদন্ড
বিশেষ সংবাদদাতা : গাড়ি চালানোর জন্য চালকের কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। আর চালকের সহযোগীদের (কনডাক্টর) কমপক্ষে পঞ্চম শ্রেণি পাস লাগবে। সিট বেল্ট না বেঁধে গাড়ি চালানো, মহিলা, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং বয়োজ্যেষ্ঠ যাত্রীর জন্য সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসলে এক মাসের কারাদন্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড করা হবে। এমন আরো কিছু বিধান যুক্ত করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৭-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। দুর্ঘটনার জন্য শাস্তি আগের মতোই দন্ডবিধি অনুযায়ী দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই আইনের খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। যদি কেউ তা করে, তাহলে এক মাসের কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘দি মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ আছে। এটা যেহেতু অর্ডিন্যান্স ও মার্শাল ল আমলের করা সে জন্য আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নতুনভাবে আইনে পরিণত করার বাধ্যবাধকতা আছে। সে জন্য এটি নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে বেশ বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পরিবহন সেক্টরটা অনেক ভাইব্র্যান্ট, অনেকগুলো এজেন্সি কাজ করে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের অনেক লিঙ্ক রাখতে হয়। আমাদের রিজিওনাল কানেকটিভিটি, আন্তর্জাতিক অনেক বিষয়-আশয় এর মধ্যে চলে আসে। শাস্তির মধ্যে পরিবর্তন আনা হয়েছে ও সময়ের ধারাবাহিকতায় যে পরিবর্তন হয়েছে সে জিনিসগুলো আইনে নিয়ে আনা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন করে গাড়ি চালনায় ২৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমলযোগ্য অপরাধ হলে পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কেউ গাড়ি চালাতে পারবেন না। যদি কেউ তা করেন, তাহলে ছয় মাসের কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। আর কনডাক্টরের লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের কারাদন্ড অথবা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। কনডাক্টরদের লাইসেন্স দেবে বিআরটিএ। নতুন আইনে সাধারণ চালকের বয়স আগের মতোই কমপক্ষে ১৮ বছর এবং পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর।
মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালালে এক বছর কারাদন্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হবে। এই অপরাধে আগের আইনে ছয় মাস জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা হতো। আর সড়কে দু’টি গাড়ি যদি পাল্লা দিয়ে (রেসিং) চালানোর সময় দুর্ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে তিন বছরের কারাদন্ড অথবা ২৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার জন্য মৃত্যু বা অন্যান্য ক্ষেত্রে আগের মতোই দন্ডবিধি অনুযায়ী শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, কেউ যদি গাড়ি চালিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নরহত্যা করে, তাহলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে। আর মৃত্যু নয়, এমন ঘটনায় ৩০৪ ধারা অনুযায়ী সাজা দেয়া হবে। শুধু দুর্ঘটনা হলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদÐ দেয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, চালকরা যাতে আইন মেনে চলেন, সেজন্য পয়েন্টভিত্তিক ব্যবস্থা চালু হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব। মোট ১২ পয়েন্ট বরাদ্দ থাকবে। বিভিন্ন অপরাধের জন্য চালকের পয়েন্ট কাটা যাবে। পয়েন্ট শূন্য হয়ে গেলে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহারের জন্য ২ বছরের কারাদÐ বা এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও প্রস্তাবিত আইনে সাজা ঠিক রেখে জরিমানা ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় না পড়লেও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর জন্য আইনে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদন্ড অথবা ২ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্সেল বা ওজনসীমা অতিক্রম (৫ টন ধারণক্ষমতার ট্রাক এর থেকে বেশি ওজন পরিবহন) করলে গাড়ির মালিক ও চালককে ৩ বছরের কারাদন্ড বা ৩ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মদ পান করে বা নেশাজতীয় দ্রব্য খেয়ে গাড়ি চালালে, সহকারীকে দিয়ে গাড়ি চালালে, উল্টো দিকে গাড়ি চালালে, নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য স্থানে গাড়ি থামিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, চালক ছাড়া মোটরসাইকেলে একজনের বেশি সহযাত্রী ওঠালে, মোটর সাইকেলের চালক ও সহযাত্রীর হেলমেট না থাকলে, ছাদে যাত্রী বা পণ্য বহন, সড়ক বা ফুটপাথে গাড়ি সারানোর নামে যানবাহন রেখে পথচারীদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি, ফুটপাথের ওপর দিয়ে কোনো মোটরযান চলাচল করলে সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদন্ড বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীদের পরামর্শ আয়ের ৭০ ভাগ পাবে বিএফআরআই
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীদের চাকরির বাইরে পরামর্শ সেবার আয়ের ৭০ ভাগ পাবে প্রতিষ্ঠানটি। এমন বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৭’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১৯৮৪ সালের একটি অধ্যাদেশ আছে। সেটাকে বাংলায় অনুবাদ ও কিছু সংযোজন করে নতুন আইনটি করা হয়েছে। নতুন আইনে চারটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এখানে (বিএফআরআই) একটি পরিচালনা পর্ষদ বা বোর্ড রয়েছে। নতুন আইনে বোর্ডের কার্যাবলি ডিফাইন করে দেয়া হয়েছে।’
শফিউল আলম বলেন, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের (বিএলআরআই) যেসব বিজ্ঞানী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মৎস্য শিল্প স্থাপন বা অনুসন্ধানবিষয়ক পরামর্শ দেবে বোর্ড নির্ধারিত হারে তারা ফি নিতে পারবেন। ফি-এর ৩০ ভাগ নিজেরা রাখবেন, ৭০ ভাগ ইনস্টিটিউটকে দেবেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন অনুমোদন
‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন, ২০১৭’- এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ব্রিফিংয়ে জানান, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের প্রধান হলেন মহাপরিচালক। কিন্তু ইউনেস্কোর প্রধানও মহাপরিচালক। এ জন্য তাদের সঙ্গে চুক্তির শর্তে বলা হয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য আমাদের ইনস্টিটিউটের প্রধানের পদটি পরিচালক করতে হবে। এ জন্য আমাদের যে যে স্থানে মহাপরিচালক শব্দটি আছে ওখানে পরিচালক শব্দটি নিয়ে আসা হবে।
তিনি বলেন, তারা (ইউনেস্কো) একটি গভর্নিং বডির প্রস্তাব করেছে। আমাদের আইনে আছে ২২ জনের কমিটি। কিন্তু ইউনেস্কো নির্ধারিত কমিটি ৬ জনের। এ জন্য ওই ২২ জনের কমিটি কমিয়ে ৬ জনের কমিটিতে কনভার্ট করা হবে। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী বড় পরিসরে আরেকটি কার্যনির্বাহী কমিটির প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, যেহেতু গভর্নিং বডিটা ছোট এবং এটা পলিসি মেকিং বডি, তাই দৈনন্দিন বড় কাজগুলো করার জন্য ২২ সদস্যের কমিটির মতো একটি কার্যনির্বাহী কমিটির প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এখনও সদস্য নির্ধারণ করা হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।