পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুমিল্লা সিটিতে পর্যবেক্ষণের অনুমোদন পায়নি কোনো সংস্থা
পঞ্চায়েত হাবিব : নির্বাচন এলেই নড়েচড়ে বসে তারা। পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কার্যক্রম। এনজিওভিত্তিক এসব পর্যবেক্ষক সংস্থার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিএনপির। অথচ দুই বছরেও অভিযুক্ত পর্যবেক্ষণ সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। আগামী ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি এবং সুনামগঞ্জ জাতীয় সংসদ, এপ্রিলে ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষক ছাড়াই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখনো কুমিল্লা সিটিতে পর্যবেক্ষণের অনুমোদন পায়নি একটিও সংস্থা। আরপিও অনুযায়ী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক নিয়োগের বিধান থাকলেও এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি)।
রাকিবউদ্দিনের নেতৃত্ব কমিশন পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আমলেই নেয়নি। বর্তমান নতুন নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে কাঠামোতে আনতে নীতিমালায় সংস্কার করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আগামী ২৮ মার্চ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা নিয়ে প্রথম সভা করবে কমিশন।
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, কিছু পর্যবেক্ষক সংস্থার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের অভিযোগ রয়েছে। নতুন করে নীতিমালয় সংস্কার করা আগের কমিশন কি কারণে তাদের ব্যবস্থা নিতে পারে নাই তা জানা নাই। আমরা প্রথম সভা করছি।
নিবন্ধিত ১২০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার মধ্যে ৪০টি সংস্থার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র পাল্টাপাল্টি অভিযোগ থাকলে ও তার কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি কমিশন। নীতিমালায় আরো বলা আছে নিবন্ধিত কোনো পর্যবেক্ষণ সংস্থার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র বা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকলে অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতামত বা প্রতিবেদনের আলোকে সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করা হইবে। গত ২২ মার্চ গাইবান্ধা-১ আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেই নির্বাচনে ও কোনো পর্যবেক্ষক দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। আগামী ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপ-নির্বাচন। আগামী এপ্রিল মাসে ১৭৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনও পর্যবেক্ষক ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আরপিও-১৯৭২ সংশোধন করে প্রথমবারের মতো নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নবম সংসদ নির্বাচনের সময় প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধন শুরু হয়। একই সঙ্গে পর্যবেক্ষক নীতিমালাও তৈরি করা হয়। এরপর ২০১০ সালে নীতিমালা সংশোধন করে তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছর করে। সেই আমলে নির্বাচন কমিশন ১৩৮টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করে। পরে বতমান সরকার ২০১৩ সালে নিবন্ধন নীতিমালা সংশোধন করে ১২০টি সংস্থাকে তালিকায় অন্তভুক্ত করে নির্বাচন কমিশন। যাদের পাঁচ বছর মেয়াদকাল ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শেষ হয়। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের বিগত কমিশন পরবর্তীতে নতুন করে নিবন্ধনের সুযোগ সৃষ্টি না করে ওই সংস্থাগুলোর নিবন্ধনের মেয়াদ ২০১৬ সালেই এক বছর বৃদ্ধি করে। এর ফলে সংস্থাগুলো মেয়াদকাল ২০১৭ সালে জানুয়ারিতে শেষ হয়। কিন্তু সে মেয়াদও শেষ হয়েছে দুই মাস হলো। ফলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে কোনো পর্যবেক্ষক নেই। আওয়ামী লীগ যে সংস্থার বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে সেগুলো হলোÑ বিসিডিজেসি, ডেমোক্রেসি ওয়াচ, ফেমা, জাগরণী চক্র, খান ফাউন্ডেশন, লাইট হাউজ, নোয়াখালী রুরাল ডেভলেপমেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর ডেভলপমেন্ট সোসাইটি, সৃজনী, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, এএমইউএবি, হিলফুল ফুজুল সমাজ কল্যাণ সংস্থা, ন্যাশনাল ইয়্যুথ ফোরাম বাংলাদেশ, যুগায়ন সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, ইউনিটি অব সোশ্যাল অ্যাডভান্টেজ, ব্রেভ, কোস্ট ট্রাস্ট, ডেভেলপমেন্ট অর্গনাইজেশন ফর দ্য পুওর, নারী উদ্যোগ কেন্দ্র এবং এএনএফআরইএল। বিএনপি যে সংস্থার বিরুদ্ধে সেগুলো হচ্ছে, এসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি-বিডিএস, কোস্ট ট্রাস্ট, ডাক দিয়ে যাই, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-আইইডি, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ, নবলোক, ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-এনডিপি, রূপান্তর ও ওয়েব ফাউন্ডেশন। এসব সংস্থার বিরুদ্ধে দলীয় সম্পৃক্ততার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে প্রধান এই দুই রাজনৈতিক দল। তবে সাবেক কমিশন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে জানা গেছে।
ইসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপ-সচিব ইনকিলাবকে জানান, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো ত্রæটি-বিচ্যুতি সংঘটিত হয়ে থাকলে সে বিষয়ে জনগণকে জ্ঞাত করা পর্যবেক্ষকরা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্যতম প্রভাবক। কেননা তারা দল-প্রশাসন সবার ওপরে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। গণমাধ্যমের মতো তারাও নির্বাচনে ওয়াচডগ হিসেবে কাজ করে। এজন্য নির্বাচনে পর্যবেক্ষক থাকা খুব জরুরি।
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ইনকিলাককে বলেন, কিছু পর্যবেক্ষক সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। আগের কমিশন কি কারণে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে নাই তা আমার জানা নাই। এ গুলোকে নতুন কাঠামোতে আনতে আমরা আগামী ২৮ মার্চ বৈঠক করছি। সৈই বৈঠকে কি কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা আগে বলা যাবে না। তবে নীতিমালায় কিছু সংস্থার করা হবে। ইসির পরিচালক ( জনসংযোগ ) এসএম আসাদুজ্জামান ইনকিলণাবকে বলেন, নিবন্ধনের বিষয়টি নিয়ে আগামী ২৮ মার্চ কমিশন সভায় হবে। এক্ষেত্রে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধনের মেয়াদ আরও বাড়াতে হবে, না নতুন করে নিবন্ধন দেয়া হবে সে বিষয় সিদ্ধান্ত নেয়া হভে তার পরে সংস্থাগুলোর উদ্দেশ্যে আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।