Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতিবেশীদের সাথে চীনের সম্পর্কের ব্যাপারে ভারতের স্পর্শকাতর হওয়া বন্ধ করা উচিত

চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সফরে উদ্বেগ

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আই জুন, গেøাবাল টাইমস : নেপাল ও শ্রীলংকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে চীনের স্টেট কাউন্সিলর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল চ্যাং ওয়ানকুয়ান ১৯ মার্চ দক্ষিণ এশিয়ার দেশ দু’টিতে সফর শুরু করেন। এ সফর নয়া দিল্লীকে উদ্বিগ্ন করতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করতে শুরু করার প্রেক্ষিতে ভারতীয় মিডিয়া দ্রæত এ ধরনের বিশ্লেষণ যাচাই করেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস-এর এক রিপোর্টের সুর ছিল সতর্ক ও তিক্ত। চ্যাং-এর নেপাল সফর এবং চীন-নেপাল প্রথম যৌথ সামরিক মহড়া নয়া দিল্লীকে ‘নার্ভাস’ করেছে উল্লেখ করে সংবাদপত্রটি এও বলেছে যে নেপাল সরকার বেইজিংকে না বলার অবস্থায় নেই, যেহেতু চীন যখন তার প্রতিবেশীদের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে তখন সে একটি লাঠিও বহন করে।
যাহোক, সত্য হচ্ছে কঠোর পন্থার আচরণসহ ভারত দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরকে তার পশ্চাদভূমি হিসেবে গণ্য করে। এই অঞ্চলে বেইজিং-এর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ব্যাপারে তার অস্বস্তি সুস্পষ্ট। উদাহরণ স্বরূপ চীন ও ভুটানের কথা উল্লেখ করা যায়। ভুটান ভারতের দ্বারা অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত। চীন ও ভুটানের মধ্যে এখন পর্যন্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত না হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ ভারত।
চীনের বিরুদ্ধে ভারতের সতর্ক দৃষ্টি বেইজিংয়ের সাথে শ্রীলংকা ও নেপালের সম্পর্ককে প্রভাবিত করেছে। তারা যদি এই দুই বিশাল প্রতিবেশীর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করে, নয়া দিল্লী তাদের নিরপেক্ষতাকে বেইজিংপন্থী নীতি বলে গণ্য করে। এ সব দেশের কোনো শীর্ষ নেতা যখন চীন সফরে যান তখন ভারতীয় মিডিয়া বলে যে ভারত তাদের হারাচ্ছে বা দক্ষিণ এশিয়ায় বড় শক্তি হিসেবে চীনের অভ্যুদয় নয়া দিল্লীর জন্য নতুন হুমকি হবে।
ভারতের সীমান্তবর্তী দেশগুলো চীনেরও প্রতিবেশী। কোনো দেশের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে পাশর্^বর্তী দেশগুলোর সাথে স্থিতিশীল সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নয়া দিল্লীর উচিত চীন ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যকার প্রতিটি পদক্ষেপের ব্যাপারে চরম স্পর্শকাতর হওয়া বন্ধ করা। শ্রীলংকা ও নেপাল তাদের দুর্বল অবকাঠামোর প্রেক্ষিতে চীনের সাথে যৌথ প্রকল্প গ্রহণ করতে চায়। যখন ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় চীনা কোম্পানিগুলো এ সব দেশে প্রতিষ্ঠিত হবে তখন তাদের সাথে শুধু চীনের স্বার্থ রক্ষার জন্যই নয, এ অঞ্চলের স্বার্থেও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
এ পর্যন্ত চীনের ক্ষেত্রে কোনো নীতি গ্রহণ করতে গেলে ভারত সরকার বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। মনে হয় যে বেইজিংয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করতে অথবা বেইজিং-এর পাল্টা ভারসাম্য রক্ষায় নয়া দিল্লী তার শক্তি প্রদর্শনের জন্য দালাইলামা সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ একটি পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে। মাত্র গত ১৭ মার্চ নয়া দিল্লী বিহারে একটি আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সেমিনারে যোগদানের জন্য দালাইলামাকে আমন্ত্রণ জানায়।
চীন আশা করে ভারত চীন ও আঞ্চলিক দেশগুলোর অভিন্ন উন্নয়নের জন্য চীনের অভীপ্সা বুঝতে পারবে এবং তার অংশীদার হবে। তবে নয়া দিল্লী চীনের সাথে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়েই আগ্রহী, এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা শেয়ার করার ব্যাপারে নয়।
ভারতের এ ধরনের প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ যাতে লঙ্ঘিত না হয় সে জন্য চীনকে পাল্টা লড়াই করতে হবে। আমরা এ রকম কিছু আশা করি না, কিন্তু বল ভারতের কোর্টে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ