Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

গ্রিক মূর্তি স্থাপন, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও হোলি পূজার সন্ত্রাস দেশবাসী মেনে নেবে না -ওলামা লীগ ও সমমনা ১৩ দল নেতৃবৃন্দ

ওলামা লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন সংগঠন

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিমকোর্টের সামনে গ্রিক মূর্তি স্থাপন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের চক্রান্ত, মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে ইসলামবিরোধী কাজ ও হোলি পূজার নামে মুসলিম নারীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে আওয়ামী ওলামা লীগ ও ১৩ দল নেতৃবৃন্দ গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিরাট মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধনে উত্থাপিত দাবিসমূহ হচ্ছে- 
আইএস নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। বাংলাদেশে কোনো আইএস নেই এবং ওলামা লীগ বাংলাদেশে কোনো আইএসের অস্তিত্ব হতে দিবে না। জঙ্গিবাদ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত ওলামা লীগ ঘরে ফিরে যাবে না।
মূর্তি বা প্রাণীর যে কোনো ভাস্কর্য ইসলামে হারাম। সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বিএনপি জামাতের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নে দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে গ্রিক মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। ডিবিসি নিউজের টিভির টকশোতে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক বলেছেন ‘প্রধান বিচারপতি সিনহা আত্মস্বীকৃত শান্তি কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার’। আমরা মনে করি এ কারণেই প্রধান বিচারপতির একক সিদ্ধান্তে হাইকোর্টের সামনে মূর্তি স্থাপিত হয়েছে। তাই অবিলম্বে দেশের সংবিধান ও মুসলিম সংস্কৃতি বিরোধী গ্রিক মূর্তি অপসারণ করতে হবে ইসলামী আক্বীদা ও মুসলমানদের ঈমান রক্ষার জন্য।
রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে হাইকোটের্র রায় উচ্চ আদালতেও বহাল রাখতে হবে। উগ্র মৌলবাদী হিন্দুদের চক্রান্তে রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করে জামাত-জোট, হেফাজতের হাতে সরকারবিরোধী ইস্যু তুলে দেয়া যাবে না। উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ দেশের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, “দেশ এখন সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।” রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের সিদ্ধান্ত দেশের ৯৫ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠী কখনও মেনে নেবে না।
হোলি পূজার নামে মুসলমান নারীদের উপর নির্যাতনের ঘটনা অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। এক্ষেত্রে কেবল তিনজন মুসলমান গ্রেফতার করা হলো কেন? হোলি উৎসেব অপ্রীতিকর ঘটনার সাথে জড়িত হিন্দু যুবক-যুবতীদের অপ্রীতিকর কার্জকলাপ আইনের ঊর্ধ্বে রাখা হচ্ছে কেন? সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টে জড়িত এসব উগ্র হিন্দুদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। আগামীতে মন্দিরের বাইরে সব পূজা নিষিদ্ধ করতে হবে। দিল্লি , ব্যাঙ্গালুরের অধিকাংশ কলেজ ক্যাম্পাসে হোলি পূজা নিষিদ্ধ। তাই বাংলাদেশেও নিষিদ্ধ করতে হবে।
ওলামা লীগ নাস্তিকদের বিরুদ্ধে এবং ইসলামের পক্ষে অবস্থান নেয় বলেই জামাত-হেফাযত সরকারের বিপক্ষে ইস্যু তুলতে পারে না। ওলামা লীগ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং সরকারের মাঝে সেতু বন্ধন রচনা করেছে। মিলাদ শরীফ ও ঈদে মীলাদুন্নবী ছাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিরোধী হেফাজতের দ্বীন ইসলামের ইস্যু নিয়ে কাজ করার অধিকার নেই।
মাতৃভাষা বাংলা মুসলমানদের ঈমানের অঙ্গ। কিন্তু মাতৃভাষা দিবসে ইউনেস্কোর ভিডিওতে বাংলাভাষাকে জায়গা দেয়া হয়নি। অথচ ইউনেস্কো হিন্দুদের আচার অনুষ্ঠান মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বাংলাদেশের সংস্কৃতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আর ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত মঙ্গল শোভাযাত্রার ব্যাপক প্রচারণা দিয়ে বর্তমান সরকারকে হিন্দুত্ববাদী বলে অপপ্রচার করার ষড়যন্ত্র চলছে। কোন কোন মন্ত্রী পহেলা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করলে মুসলমানিত্ব যায় না বলে ‘মন্ত্রী ফতোয়া’ দিয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হেনেছে। ইসলামে মঙ্গল শোভাযাত্রা তথা মূর্তি শোভাযাত্রা হারাম। এভাবেই ধর্মপ্রাণদেরকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করতে বাম ষড়যন্ত্র নতুন করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
মওদুদী কুফরী আক্বীদা পোষণকারী জামাতকে ভোট দেয়া হারাম। বিএনপি যদি জামাতকে ত্যাগ না করে তবে মওদুদী আক্বীদা পোষণকারী জামাতের সহযোগী ও সমগোত্রী হিসেবে বিএনপিকেও ভোট দেয়া নাজায়েজ। আর এদের ভোট দেয়াকে জায়েজ মনে করলে কুফরী হবে।
২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণা করতে জাতিসংঘে উদ্যোগ নিতে হবে।
ওলামা লীগ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন নয়। ওলামা লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন সংগঠন। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সকল কার্যক্রমে সর্বাত্মক ও সক্রিয় সহযোগিতা করাই ওলামা লীগের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য। কাজেই ওলামা লীগ নিয়ে নেতাদের লাগামহীন ও মিথ্যাচারিতা করা কোনো আওয়ামী লীগ নেতার অধিকার নেই।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত ছিলেন, পীরজাদা, পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান বিপ্লবী জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, (পীর সাহেব, টাঙ্গাইল), সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। বক্তব্য রাখেন আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি সহ-সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি হুজুর-সভাপতি বাংলাদেশ এতিমখানা কল্যাণ সমিতি, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, ডা. সাইফুদ্দীন মিয়াজি, আলামা পীরজাদা পীর আলহাজ্জ হাফেয ক্বারী মাওলানা কাজী মাসুদুর রহমান- সভাপতি বাংলাদেশ ইমাম মুয়াজ্জিন মুসল্লী দ্বীনি কল্যাণ পরিষদ, ডাক্তার মাওলানা মুহম্মদ সাইফুদ্দিন মিয়াজী, মাওলানা আব্দুর রহিম শেরপুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার। সভা শেষে একটি মিছিল বের করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ