Inqilab Logo

শনিবার, ২২ জুন ২০২৪, ০৮ আষাঢ় ১৪৩১, ১৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সেই ‘একুশ’-কে পেতে অপেক্ষা বাড়ল

| প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : কুড়িয়ে পাওয়া সেই নবজাতক ‘একুশ’কে সন্তান হিসেবে লালন-পালনের অধিকার পেতে আবেদনকারীদের অপেক্ষা আরও বাড়লো। আর তাকে পেতে হলে মায়েদের আবেদন করতে বলছেন আদালত। একুশকে সন্তান হিসেবে পেতে কয়েকজন পুরুষও আবেদন করেছিলেন আদালতে।  
চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও শিশু বিষয়ক বিশেষ আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস গতকাল (বুধবার) এ বিষয়ে আংশিক শুনানি শেষে আগামী ২৮ মার্চ আবারও শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন। আবেদনকারীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় নথিপত্র হাজির করতে না পারায় আদালত তাদের একটি সুযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি। এর আগে তিনি ৭টি আবেদনের ওপর শুনানি করেন। একুশকে সন্তান হিসেবে পেতে শিশু আদালতে ১৪টি আবেদন পড়েছে।
জনাকীর্ণ আদালতকক্ষে বেলা পৌনে একটায় শুনানি শুরু করেন বিচারক। শুনানিকালে আদালত বলেন, তিনি একজন ভালো মায়ের জিম্মায় শিশুটিকে দিতে চান। শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এম এ ফয়েজ সাংবাদিকদের বলেন, অনেক আবেদনকারীই অজ্ঞতার কারণে আদালতে প্রয়োজনীয় কিছু নথিপত্র জমা দেননি। তাদের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানির জন্য আরেকটি তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত।
অ্যাডভোকেট এমএ ফয়েজ বলেন, শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য ১৪টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭ জন স্ত্রী ও ৫ স্বামী আবেদন করেছেন। বাকি দুটি আবেদন জমা পড়েছে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে। আদালত বলেছেন, সন্তান দেয়া হবে মায়ের কাছে। মা-ই লালন-পালন করবেন। এজন্য মা হিসেবে নারীকে আবেদন করতে হবে। তবে স্বামীরও প্রয়োজন আছে। সেজন্য শুনানিতে স্বামীকেও আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে বলে জানান পিপি।
আদালত শিশুটিকে কারও হাতে তুলে না দেয়া পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন এম এ ফয়েজ। ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাসানের স্ত্রী জেসমিন আক্তার, শিক্ষিকা লুবনা ইয়াসমিন ও প্রবাসীর স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারের আবেদনের শুনানি সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে ১৪টি আবেদনের মধ্যে গতকাল ৭টি আবেদনের উপর আদালতে শুনানি হয়। নগরীর ৯ নম্বর ষোলশহর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা এরশাদ মামুন, মোহাম্মদউল্লাহ ও শহীদুল্লাহর আবেদনের উপর শুনানি হলেও তাদের স্ত্রীকে আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। চিকিৎসক দম্পতি শাকিলা আক্তার ও ডা. জাকির ইসলামের যৌথ আবেদনের উপর শুনানি সম্পন্ন হয়েছে।
গত ২০ ফেব্রæয়ারি রাতে নগরীর কর্নেলহাট এলাকার লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার সংলগ্ন আবর্জনার ভাগাড়ে নবজাতকটিকে ফেলে দেয়া হয়। রক্তাক্ত আহত অবস্থায় সেখানে কাঁদছিল নবজাতকটি। কান্নান শুনে কয়েকজন যুবক এগিয়ে যায় ও শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার জন্য ওই যুবকরা সেখানে অপেক্ষা করছিল। আর ঠিক ওই সময়ে নবজাতকটিকে খুঁজে পায় তারা। উদ্যমী এসব যুবক নবজাতককে নিয়ে একুশের প্রথম প্রহরে নগরীর তিনটি হাসপাতালে ছুটে যায়। শেষপর্যন্ত নবজাতকের চিকিৎসার সুযোগ মেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসক-সেবিকা ও উদ্ধারকারী যুবক এবং আকবর শাহ থানা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার প্রচেষ্টায় সংকটাপন্ন শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠে। ওই রাতেই শিশুটির নাম দেয়া হয় একুশ। নবজাতকটি এখন চমেক হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসক ও সেবিকাদের যতেœ রয়েছে। তার বয়স এখন এক মাস। চিকিৎসকরা জানায়, সে এখন পুরোপুরি সুস্থ আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ