পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পঞ্চায়েত হাবিব : সরকারি পরিবহন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আওতাধীন পরিবহন পুলের দায়িত্বশীলদের কর্মকান্ড ভাবিয়ে তুলছে সংশ্লিষ্টদের। অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনাই সেখানে ব্যবস্থাপনার সঙ্গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে প্রকল্পের গাড়ি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষের অন্ত নেই। আইনে বলা হয়েছে, যখন যে প্রকল্প শেষ হবে তা ৬০ দিনের মধ্যে প্রকল্পে ব্যবহৃত যানবাহন পরিবহন পুলে জমা নেয়ার বিধান থাকলে তা নেয়া হচ্ছে না। এদিকে ছয় বছরে প্রকল্পে ব্যবহৃত যানবাহন কত জমা হয়েছে পরিবহন পুলে গাড়ির কোনো হদিস মিলে না।
জাতীয় সংসদ ভবনে গতকাল বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটির সদস্যরা। কেন এমন হচ্ছে এবিষয়ে পরিবহন পুলের দায়িত্বশীলদের নিকট ব্যাখ্যা চাওয়ার পাশাপাশি বিদেশে কীভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবস্থাপনা হয় সেবিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক বছরে কমিটির এক সদস্য বলেন. বৈঠকে সরকারি যানবাহন ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বেশ কয়েকজন সদস্য পরিবহন পুলের দায়িত্বশীলদের সমালোচনা করেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, চলমান উন্নয়ন প্রকল্প ও সমাপ্ত উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ি দীর্ঘদিন থেকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বাস্তব অবস্থা হল, প্রকল্প শেষ হলেও প্রকল্পের গাড়ি ও গাড়ি চালকের সার্ভিস দেয়া শেষ হয় না। এসব গাড়ি সংশ্লিষ্ট দফতর-সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা বাগিয়ে নেন। গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ও জ্বালানি তেলের খরচ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। অনেকটা ভ‚তে জোগান দেয়ার মতো অবস্থা। চলমান অন্যান্য প্রকল্প থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে খরচ জোগান দেয়া হয়। ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাÐ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোতে তো প্রকল্পের শেষ নেই। তাই গাড়িরও অভাব নেই। তারা বলেন, এক একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ মানেই শুরুতেই কয়েকটি দামি গাড়ি কেনার প্রতিযোগিতা। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নতুন দামি গাড়িগুলো প্রকল্প পরিচালক ব্যবহার করার সুযোগ পান না। কেনার পর তা উপহার হিসেবে মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপদেষ্টা ও সচিব থেকে শুরু করে প্রভাবশালীদের ব্যবহারের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়। কোনো কোনো প্রভাবশালী কর্মকর্তা (যুগ্ম-সচিব থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ে) গাড়ি প্রাধিকার হিসেবে পরিবহন পুল থেকে যেটি পেয়ে থাকেন তা বাসার লোকদের কাজে ব্যবহার করেন। আর তিনি চড়েন দফতর/সংস্থা থেকে পাওয়া প্রকল্পের দামি পাজেরো জিপে। যার কোনো কোনটির দাম ২ থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত। গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্বে থাকা প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের গাড়ি চাইতে হয় না। বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকরা নতুন গাড়ি দেয়ার জন্য এক রকম বসে থাকেন। এ কারণে এ সারির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ৪-৫টি করে গাড়ি ব্যবহার করার সুযোগ পান। আবার যিনি গাড়ি প্রাধিকার কর্মকর্তা নন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ডেস্কে কাজ করেন তাকেও গাড়ির জন্য তেমন চিন্তা করতে হয় না। চালকসহ গাড়ি তার কাছে এসে হাজির হয়। এমনকি দ্রæত ফাইল ছাড়ানোর জন্য কিংবা প্রস্তাব অনুযায়ী যথাযথভাবে কাজ করিয়ে নিতে ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দফতর সংস্থার প্রকল্পের গাড়িও সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়। আনঅফিসিয়ালিভাবে এসব গাড়ি ডেস্ক পর্যায়ের কর্মকর্তারাও পেয়ে থাকেন।
কমিটির সদস্য র,আ,ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, রাজনৈতিক বিষয়ে আমলে না নিয়ে যোগ্যতা, দক্ষতা ও মেধার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশে মোটর ভেহিকেল ম্যানেজমেন্ট কিভাবে করা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে জানান, বৈঠকে গাড়ি ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিবহন পুলের দায়িত্বশীলদের কর্মকাÐ নিয়ে সদস্যরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে পরিবহন পুলকে এই অনিয়মের ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। একাধিক সদস্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি যানবাহন ব্যবস্থাপনার চিত্রও তুলে ধরেন। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি বিদেশে কীভাবে পরিবহন ব্যবস্থাপনা হয় সেবিষয়ে একটি প্রতিবেদন কমিটির আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। তিনি আরো বলেন গত ৫/৬ বছরে কত প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে সে কাজে ব্যবহৃত গাড়ী কত তার জানাতে হবে।
এদিকে বৈঠকে বাংলাদেশ পাবলিক সার্র্ভিস কমিশনের ২য় শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং সরকারি কর্মচারীদের বিদ্যমান এসিআর পদ্ধতি সংস্কারের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এসময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৬ সালে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগে ২য় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগকৃত কর্মকর্তার সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৫ জন। তবে এই পদে আরও চাহিদা রয়েছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ হতে ২ হাজার ৫৫৫টি ২য় শ্রেণির শূন্য পদে চাহিদা পাওয়া গেছে। প্রাপ্তশূন্য পদের ভিত্তিতে ২য় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে সুপারিশ প্রদানের কার্যক্রম কমিশন দ্রæত শুরু করবে।
কমিটি বিসিএস থেকে যেসব প্রার্থী ১ম শ্রেণির ক্যাডার পদে সুপারিশ পাননি তাদেরকে পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, মেধা তালিকা এবং বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে ২য় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পিএসসিকে সুপারিশ করেছে। একইসঙ্গে স্বাধীনতার চেতনা পরিপন্থী কর্মকর্তা ছাড়া রাজনৈতিক বিষয় আমলে না নিয়ে যোগ্যতা, দক্ষতা ও মেধার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, র,আ,ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, খোরশেদ আরা হক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বাংলাদেশ পাবলিক সার্র্ভিস কমিশন সচিবালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।