পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হেভিওয়েট দুই প্রার্থী নিয়ে তুমুল ভোটযুদ্ধ শুরু হলেও পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীদের হাকডাক। সিটির ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১১৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করলেও ওয়ার্ডভিত্তিক আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা। নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও জেলার দায়িত্বশীল নেতার পছন্দের লোকদের সমর্থনে প্রার্থীতা দেয়া হয়েছে। সেই দৃষ্টিকোন থেকে সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সাথে যুক্ত এমন ৩৩জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। কয়েকটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একের অধিক প্রার্থী রয়েছে। অন্যদিকে ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে বিএনপির প্রার্থী ২২জন। জামায়াতের প্রার্থী রয়েছে ৩টি ওয়ার্ডে। বিএনপি প্রার্থী দিতে পারেনি ৫টি ওয়ার্ডে। সাধারণত নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কেন্দ্রে ভোটার নেয়ার ক্ষেত্রে কাউন্সিলর প্রার্থীরা অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখে থাকেন। আগামী ৩০ মার্চ সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোষ্টার, মাইকের প্রচারণা, গণসংযোগ নির্বাচনী পরিবেশ উৎসবমুখর করে তুলেছে।
কুমিল্লা সদর উপজেলায় রয়েছে সিটি করপোরেশনের ১৮টি ওয়ার্ড। তার মধ্যে বিষ্ণুপুর, ভাটপাড়া এলাকা নিয়ে গঠিত ১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থনে জিয়াউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী তারেক লড়ছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর কাজী গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে। এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী নেই। ছোটরা এলাকা নিয়ে গঠিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুদুর রহমান মাসুদ। আর বিএনপির প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর মো. বিল্লাল। কালিয়াজুরি শাসনগাছা এলাকা নিয়ে গঠিত ৩নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন- সাবেক কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ, মো. আশরাফুজ্জামান পিয়াল, এনামুল হক ভূইয়া। এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী মো. শাহজাহান। জাহাননগর, কাপ্তানবাজার ও ইসলামপুর এলাকার ৪নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসির উদ্দিন নাজিম। আর বিএনপির প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর মোসলেম উদ্দিন। গাংচরের একাংশ, রাজগঞ্জ, মনোহরপুর ও গঙ্গাগঞ্জের একাংশের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর একে সামাদ সাগর। বিএনপির প্রার্থী সংরক্ষিত আসনের সাবেক কাউন্সিলর কোহিনুর আক্তার কাকলি। গাংচরের একাংশ, চানপুর, শুভপুর, চকবাজার ও গঙ্গাগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম। বিএনপির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম। এ ওয়ার্ডে জামায়াত নেতা সাবেক কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। গোবিন্দপুর ও অশোতলার একাংশ নিয়ে গঠিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর মো. শাহআলম খান। বিএনপির মো. আবুল হোছাইন। অশোকতলার একাংশ ও দ্বিতীয় কান্দিরপাড়ের একাংশ নিয়ে গঠিত ৮নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহিরুল কামালের সঙ্গে লড়ছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ একরাম হোসেন। এ ওয়ার্ডে বিএনপির কোন প্রার্থী নেই।
বাগিচাগাঁও এলাকা নিয়ে গঠিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর জমির উদ্দিন খান জম্পি ও বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান মিলন। ঝাউতলা, কান্দিরপাড়, বাগিচাওগাঁওয়ের একাংশ নিয়ে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কমিশনার হেলাল উদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। এ ওয়ার্ডে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। মনোহরপুর ও উত্তর চর্থার একাংশ নিয়ে গঠিত ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দুই প্রার্থীর মধ্যে হাবিবুর আল আমিন সাদী আওয়ামী লীগ সমর্থিত। আর বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হলেন সাবেক কাউন্সিলর আহমেদ শোয়েব সোহেল। বজ্রপুর ও উত্তরচর্থার একাংশের এলাকা নিয়ে গঠিত ১২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জিয়াউল হক মুন্না। এ ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হলেন মো. ইমরান বাচ্চু। দক্ষিণ চর্থার ১৩নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাউয়ুম খান বাবুল এবং বিএনপির প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর শাখাওয়াত উল্লাহ। দ্বিতীয় মুরাদপুরের একাংশ নিয়ে গঠিত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বিএনপির সাবেক কাউন্সিলর সেলিম খান। বজ্রপুরের একাংশ ও প্রথম মুরাদপুর নিয়ে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. রোকন উদ্দিন ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাইফুল বিন জলিল। টিক্কাচর ও সংরাইশ এলাকা নিয়ে গঠিত ১৬নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই প্রার্থী হলেন সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন খোকন ও নতুন মুখ জাহাঙ্গীর আলম বাবুল ওরফে মুহুরী বাবুল। এ ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত কোন প্রার্থী নেই। দ্বিতীয় মুরাদপুরের একাংশ ও সুজানগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্ব›দ্বী দুই প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর মো. সোহেল আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও সাবেক কমিশনার দেলোয়ার হোসেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। নুরপুর ও দ্বিতীয় মুরাদপুরের একাংশ নিয়ে গঠিত ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এ ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নেই। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত সাবেক কাউন্সিলর শওকত আকবর, সাবেক কমিশনার আফসান মিয়া, মোহাম্মদ হোসেন বাবর ও রাজু আহমেদ প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সদর দক্ষিণ উপজেলায় রয়েছে ৯টি ওয়ার্ড। সদর দক্ষিণে নেউরা, সৈয়দপুর, নোয়াপাড়া, উত্তর রসুলপুর, দক্ষিণ রসুলপুর, রাজাপাড়া এলাকা দিয়ে শুরু ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম মহিউদ্দিন শরীফ ও বিএনপি সমর্থিত হলেন সাবেক কাউন্সিলর জাকির হোসেন। উনাইসার, কাজীপাড়া, দিশাবন্দ, লক্ষ্রীনগর এলাকার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন এবং বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ছিদ্দিকুর রহমান সুরুজ। আশ্রাফপুর, জাঙ্গালিয়া, রামনগর ও শাকতলার ২১নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হলেন রমিজ উদ্দিন ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর কাজী মাহবুবুর রহমান। উত্তর রামপুর, উত্তর হিরাপুর, মোস্তফাপুর, কচুয়া, দক্ষিণ গোপিনাথপুর, দৈয়ারা, বড় দুর্গাপুর, লক্ষ্রীপুর, শ্রীভল্লবপুর, শ্রীমন্তপুর ও দুর্গাপুর এলাকা নিয়ে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবদুল কাদের বুলু ও বিএনপির শাহআলম মজুমদার। চাঙ্গিনী, চাঁদপুর, জয়পুর, মনিপুর, মঠপুস্কুরিনী, বাতাবাড়িয়া ও নন্দনপুর নিয়ে গঠিত ২৩নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর আলমগীর হোসেন আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করছেন। আর এ ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন মাহবুবুর রহমান ভূইয়া। উত্তর বাগমারা, দক্ষিণ বাগমারা, ফিরোজপুর, লালমাইয়ের একাংশ, বার্ড, কোটবাড়ী, বিজিবি ক্যাম্প, পলিটেকনিক, রামপুর, সালমানপুর এলাকার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কোন প্রার্থী নেই। এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে লড়ছেন ইদ্রিস মিয়া। কালিকিংকরপুর, চৌয়ারা, ছোট ধর্মপুর, ডুমুরিয়া, তারাপাইয়া, দয়াপুর ও ল²ীপুর এলাকা নিয়ে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী মাওলানা আক্তার হোসেনের সাথে লড়ছেন বিএনপির দুই প্রার্থী খলিলুর রহমান মজুমদার ও মিজানুর রহমান। কালিকাপুর, গোয়ালমথন, চাংগিনি, ধনপুর, বল্লভপুর, বাউবন্দ, রাজেন্দ্রপুর ও মহেশপুর এলাকা নিয়ে গঠিত ২৬নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের দেলোয়ার হোসেন লড়ছেন বিএনপির মোতাহের হোসেনের সঙ্গে। উত্তরধনাইতরি, উলুরচর, কমলাপুর, ধনাইতরী, পাঠানকোট, মাটিয়ারা পূর্ব-পশ্চিম, রায়পুর, ল²ীপুর, সাওড়াতলী, নোয়াগ্রাম নিয়ে গঠিত ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল হাসান। আর সাবেক কাউন্সিলর সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী স্বপন বিএনপির সমর্থন নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
ধানের শীষের প্রচারণায় নজরুল ইসলাম খান
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত করার আহŸান জানিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন মেয়র নির্বাচিত হলে মনিরুল হক সাক্কু শ্রমিক-কর্মচারীসহ মেহনতি মানুষের কল্যাণে এবং স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবেন। একমাত্র বিএনপি পারে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে। বিএনপির সকল নেতা কর্মী শিল্প-শ্রমিক-বান্ধব।
গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর ইপিজেড এলাকায় ২নং গেইটে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নির্বাচনী প্রচারনার নেতৃত্বে থেকে এক নির্বাচনী পথসভায় নজরুল ইসলাম খান এ আহŸান জানান। পরে তিনি বিএনপি ও ২০ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে ইপিজেডের হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারীদের হাতে ধানের শীষে ভোট দেয়ার আহŸানসম্বলিত প্রচারপত্র তুলে দেন। এ সময় ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মো: ইব্রাহিম, এনডিপির চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহম্মেদ, বিএনপি নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরি এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল (অব:) আনোয়ারুল আজিম, ব্যাংকিং ও রাজস্ববিষয়ক সম্পাদক লায়ন হারুন অর রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সহ-সাধারন সম্পাদক মিয়া মো: মিজানুর রহমান, জেলা শ্রমিক দল সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাধন দেবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।