Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রত্যাশার তিস্তা নয়, প্রধানমন্ত্রী ভারতে গোপন চুক্তি করতে যাচ্ছেন -নোমান

| প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ভারতের সাথে তিস্তার পানি চুক্তি নয়, গোপন চুক্তি করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতের সাথে গোপন চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে দাসত্বে পরিণত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘যুদ্ধকালীন ১১ নং সেক্টর কমান্ডার ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সাবেক সম্পাদক মরহুম উইং কমান্ডার (অব:) হামিদুল্লাহ খান (বীর প্রতীক) এর স্মরণ সভায়’ তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এই সভার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথি হিসেবে আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, আজকে দেশ এগিয়ে যাওয়ার পেছনে বাধা হচ্ছে- একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে না পারা। সেই চেতনা ছিল কুশাসনের বিপরীতে গণতন্ত্রের জন্য এবং দুঃশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা। দেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা নিশ্চিত করা। কিন্তু তা হয়নি। আওয়ামী লীগ লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। একাত্তরে যখন দেশে শুন্যতা তৈরি হয়, তখনই জিয়াউর রহমানের আবির্ভাব। আজো আমরা জনগণের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করছি। লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাকে চায়নি। তারা ভিন্নমুখিতা (ডাইভারসন) চেয়েছিল। আসলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া রাজনীতিকে এগিয়ে নেয়া যায়না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, একাত্তরের পর সঠিক নেতৃত্বের কারণে মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান চিকিৎসা সংস্থান করা হয়নি। ৭২’র পরে বাংলাদেশ নিখিল বাংলা লুটপাট সমিতিতে পরিণত হয়েছিল।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ভারতের সাথে তিস্তার পানি চুক্তি কখনো পূরণ হবে না। এটি পানিমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পানি চুক্তির নামে গোপন চুক্তি করা হচ্ছে যা দেশকে ভারতের দাসত্বে পরিণত করবে।
তিনি বলেন, ভারতের স্বার্থে যে চুক্তি করা হয়েছে তার সবই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভারত নদী বন্দর, স্থলবন্দর ব্যবহার করছে। আগরতলায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। কিন্তু বাংলাদেশের সুবিধার্থে কোনো চুক্তিই পূরণ হয়নি। এমতাবস্থায় ভারতের সাথে আঞ্চলিক কানেকটিভিটির প্রয়োজন নেই। এরআগেও ’৭২ সালে আওয়ামী লীগ ২৫ বছরের জন্য চুক্তি করে বাংলাদেশকে দাসত্বে পরিণত করেছিল। আবারো ষড়যন্ত্র করে একই রকমের চুক্তি করার পাঁয়তারা করছে। দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়েও খেলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দেশের গণতন্ত্র নেই দাবি করে আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র আজকে শুধু নির্বাসিত নয় একেবারেই হারিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু তারা গণতন্ত্র বাদ দিয়ে উন্নয়ন করতে চাই। তারা এটা বুঝার চেষ্টা করে না যে গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আজকে শুধু বিএনপি বা আওয়ামী লীগের সমস্যা হলে তেমন কিছু হতো না। এটি জাতীয় সমস্যা। এজন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে ভোটের মাধ্যমে এই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। সেইসাথে সরকার আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ও বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন বন্ধ না করলে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেন আব্দুল্লাহ আল নোমান।
মরহুম হামিদুল্লাহ খান স্মরণে তিনি বলেন, তিনি সহ দেশের লাখো মানুষ যেভাবে জীবন দিয়েছেন তাদের মতো আমাদের এখন সময় এসেছে এগিয়ে যাওয়ার। তবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইবরাহিম (বীরপ্রতীক), বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমদ খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন প্রমুখ।



 

Show all comments
  • এস, আনোয়ার ২২ মার্চ, ২০১৭, ৭:০২ এএম says : 0
    এক্কেবারে মূল গোড়াতেই হাত দিয়ে ফেলেছেন জনাব নোমান সাহেব। আপনার কথাটি ১০০% সত্য। ভারত সফরের প্রধান বিষয় ছিলো তিস্তা চুক্তি সম্পাদন। তা যখন আর এ যাত্রায় হচ্ছেই না তবে আর সফরে যাবার দরকার কি?
    Total Reply(1) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ