Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারের তদন্ত দলের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন

| প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাগরিকত্বসহ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার দাবি
কক্সবাজার অফিস : মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বেশিরভাগ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ তাদের অধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার দাবি তুলেছে মিয়ানমার সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের কাছে। পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্ব দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত নেয়াসহ ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন নির্যাতিত রোহিঙ্গারা। একই সঙ্গে আরাকানে রোহিঙ্গা নির্যাতনে জড়িত মিয়ানমার সেনা-পুলিশ সদস্যদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানায় তারা।
মিয়ানমার সরকারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সু চি কর্তৃক গঠিত ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিশনের সদস্যরা গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়া বালুখালী নতুন রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শনে গেলে সেখানে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা তাদের এই দাবির কথা জানান।
রোহিঙ্গাদের ঝুপড়ি বস্তি এলাকা পরিদর্শন করে বস্তির বি-বøকের এনজিও আইওম কর্তৃক নির্মিত যাত্রী ছাউনিতে বসে ১০ জন নারী ও ১০ জন পুরুষের সাথে একান্ত সাক্ষাৎ গ্রহণ করেন তদন্ত দল।
এ সময় আরাকানে মিয়ানমারের সেনা-পুলিশ ও মগদস্যুদের অমানবিক নির্যাতনের পাশাপাশি বেশিরভাগ রোহিঙ্গা তাদের অধিকারের কথা তুলে ধরেন। অশ্রæসিক্ত ভাষায় বর্ণনা দেন তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা।
পরিদর্শন টিমে রয়েছেন মিয়ানমার সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব জ্য ম্যাইন্ট প্য, কমিশনের সদস্য ড. অং থুন তেথ, সদস্য তুন ম্যা অ, সদস্য নেয়ান্ট সুয়ে, সদস্য ডা: থে থে জিন, সদস্য মিস ক্যায়ান গেই ম্যান, কমিশনের কর্মচারী ইয়াং থোন, মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিল মিনিস্টার অং মে আন, বাংলাদেশস্থ মিয়ানমার দূতাবাসের দোভাষী মং সিং থোয়াই, দোভাষী শাদুল্লাহ শাহ, কমিশনের স্টাফ মেয়াং হাইং। প্রতিনিধিদলের সাথে ছিলেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওম) প্রতিনিধি সৈকত বিশ্বাসসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
রোহিঙ্গাদের এই অবর্ণনীয় নির্যাতনের পরও তদন্ত কমিশনের সদস্যরা কোনো বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বলে জানা গেছে।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বালুখালী নতুন রোহিঙ্গা বস্তি থেকে বের হয়ে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে রওনা করেন কমিশন। সেখানেও নয়াপাড়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন তদন্ত কমিশন।
মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকি আক্রান্তের অজুহাতে গত ৯ অক্টোবর থেকে ‘অপারেশন ক্লিয়ারেন্স’ নামে অভিযান চালায় মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় মড়দস্যুরা। প্রায় ৪ মাস ধরে আরাকান প্রদেশের মংডু, বুচিডং, আকিয়াবসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পাড়া, গ্রামগুলোতে ব্যাপক তাÐবের প্রেক্ষিতে সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
এরই প্রেক্ষিতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্বসহ তাদের অধিকার দিয়ে ফিরিয়ে নিতে। সেই লক্ষ্যে এই কমিশন কাজ করলেও আসলে কাজের কাজ কি হবে তা নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের সন্দেহের অন্ত নেই।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল থেকে উক্ত অপারেশনের নামে রোহিঙ্গা নিধনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে অভিযোগ তোলা হয়। মিয়ানমার সরকার বারবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। স¤প্রতি মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াং ঘি লি ও আরাকানের জন্য গঠিত আরাকান কমিশন তথা জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশন অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। উক্ত প্রতিবেদনগুলোর প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সরকারের গঠিত তদন্ত কশিনের সদস্যরা বাংলাদেশে নতুনভাবে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সফরে আসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ