পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস : গোয়া ও মনিপুর দু’টি ছোট রাজ্যে কংগ্রেসের চেয়ে কম ভোট পেয়েও ক্ষমতাসীন হওয়া বিজেপির প্রভাবকেই প্রদর্শন করে। কেন্দ্র থেকে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোহর পারিকরের প্রত্যাবর্তন এ বার্তা দেয় যে বিজেপি আজ অনেক বেশি চৌকস একটি দল। তারা যোগ্য লোকটিকেই কাজটির জন্য ব্যবহার করেছে এবং পুরনো রাজনৈতিক পন্থা হিন্দুত্ববাদ থেকে দূরে রয়েছে। তার মানে প্রযুক্তি-জ্ঞান সচেতন ও আধুনিকতাপন্থী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন দলটি অনেক বেশি উন্নয়নমুখী।
কিন্তু দল ১৮ মার্চ উত্তর প্রদেশের (ইউপি) বিতর্কিত কট্টর হিন্দুত্ববাদী এমপি যোগী আদিত্যনাথকে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করায় এ সপ্তাহের সকল ভালো কাজ পন্ড হয়ে গেছে। তার বিদ্বেষ ছড়ানো বক্তব্য ও উগ্র সংখ্যাগরিষ্ঠতামূলক প্রচারণার প্রেক্ষিতে কেউ বিস্মিত হতে পারে যে, বিজেপি তার দীর্ঘপ্রতীক্ষিত রামমন্দির প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে পুরনো দিনগুলোতে ফিরে যেতে আগ্রহী কিনা।
যদি এটাই সর্বদা পাইপ লাইনে থেকে থাকে তাহলে বিজেপি নেতৃত্ব কেন সর্বশেষ নির্বাচনে উন্নয়নের পাটাতনের উপর এত গুরুত্ব আরোপ করল? মেরুকরণের ব্যাপারটি মাঝেমধ্যে প্রদর্শন করা হয়েছিল। বিশ্লেষকদের ধারণা যে সাত পর্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের শেষ দিনগুলোতে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেস জোটকে মোকাবেলা করার জন্যই তা করা হয়। কিন্তু উন্নয়নের পাটাতনের উপর নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিজেপি অবলীলায় তাকে পিছনের সারিতে ঠেলে দিয়েছে এবং একজন সম্ভাব্য বিপজ্জনক নেতাকে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন দিয়ে এই একই সংখ্যাগরিষ্ঠতার রাজনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এতে কি রাজ্যের ভোটারদের সাথে বিশ^াসঘাতকতা করা হল না?
যদি আদিত্যনাথ তার মুখ্যমন্ত্রীত্বের মেয়াদকালে উত্তর প্রদেশকে হিন্দুত্বের ল্যাবরেটরিতে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেন তবে তার দায় বহন করতে হবে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। বিজেপির ভবিষ্যত স্ক্রিপ্ট ২০০৪ সালের মত হতে পারে যখন ২০০২ সালের গুজরাট হত্যাকান্ডের বীভৎস স্মৃতি কেন্দ্রে শাসন ভালোভাবে চালানোর পরও অটল বিহারি বাজপেয়ির ক্ষমতাচ্যুতির অন্যতম কারণ বলে প্রমাণিত হয়েছিল।
আদিত্যনাথকে বেছে নিয়ে বিজেপি তার উদারপন্থী সমর্থকদেরও হতাশ করবে
আদিত্যনাথের উপস্থিতি বিজেপির রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক অনুসারী নেতা-কর্মী নির্বিশেষে সবার মধ্যে ভাঙ্গনের মারাত্মক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। মোদির নেতৃত্বাধীন বছরগুলোতে বিজেপি সাফল্যের সাথে হিন্দুত্ববাদের বিকল্প ভাষ্য রচনা করেছে এবং তা হচ্ছে দেশ বা জাতীয়তাবাদের প্রতি ভালোবাসা। সমাজের যে সব অংশ হিন্দুত্ববাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য মনে করেনি জাতীয়তাবাদের কার্ড দিয়ে তাদের মন জয় করা হয়েছে। কিন্তু এখন হিন্দুত্ববাদকে নগ্নভাবে প্রচার করতে দ্বিধা করে না এমন একজন নেতাকে সমর্থন প্রদান এসব আসনের মানুষদের আবার বীতশ্রদ্ধ করবে এবং বিজেপির সর্বজনীন আবেদনকে ধাক্কা দেবে। এক্ষেত্রে এক বিশিষ্ট উদাহরণ হচ্ছেন খ্যাতনামা অভিনেতা অনুপম খের যিনি বিজেপি এবং তার জাতীয়তাবাদী ভাষ্যকে সমর্থন করেন, কিন্তু স্পষ্টভাবে গেরুয়া পতাকার প্রতীক বহনকারী সাধু ও যোগীদের অপছন্দ করেন। এ বিষয়টি দুর্ভাগ্য কবলিত বিরোধী দলকে কিছুটা উৎফুল্ল করতে পারে।
বিজেপির এ পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো প্রয়োজন ছিল কি?
যদি প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তার লেফটেন্যান্ট অমিত শাহর যদি আদিত্যনাথকে তিনি যা চান তা করতে দেয়ার আসলেই পরিকল্পনা থেকে থাকে তাহলে যে রাজ্যটি ২০১৪ সালে তাদের ক্ষমতাসীন হতে সাহায্য কেেছ তারা ২০১৯ সালে ভিন্ন চিন্তা করত পারে। সামাজিক ভাঙ্গনে বিশ^াসী নয়, সর্বজনীন উন্নয়ন চায় বলে নির্বাচনের আগে বার্তা দিয়ে যদি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব শুধু ধর্মীয় মেরুকরণে বিশ^াসী একজন লোককে রাজ্যের প্রধান নির্বাহী হিসেবে বেছে নেন তখন বুঝতে হবে বিজেপির দেখার পথে সমস্যা আছে। কথা হচ্ছে, এ পদক্ষেপের কোনো প্রয়োজন ছিল কি?
মোদি ও তার দল কি ভাবতে শুরু করেছেন যে তারা অপরাজেয় এবং সে কারণে আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগছেন এবং সেহেতু মানুষের ভাগ্য নিয়ে পুতুল খেলা খেলছেন? যদি তা হয় যে কিভাবে তারা বৈসাদৃশ্য করছেন তাহলে বুঝতে হবে যে দলের জন্য সামনে শনি আছে।
বিজেপি, যারা পরিবর্তনশীল ভারতের নতুন বাস্তবতার সাথে খাপ খাওয়ানোর প্রচুর সম্ভাবনা প্রদর্শন করছিল তারা এক সুন্দর সকালে হঠাৎ করেই ২৫ বছর পিছনে চলে গেছে। এটা দুঃখজনক। সম্ভবত ক্ষমতা পাগলরা এভাবেই তাদের পতন ডেকে আনে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।