Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোট গঠন নিয়ে কংগ্রেসে চিন্তা : দেখা দিচ্ছে জটিলতা

| প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাউথ লাইভ : যদি কিছু নেতার কথা বিশ^াস করতে হয় তাহলে কয়েক বছর আগেও নিজেদের প্রাকৃতিক শাসকদল বলে বিবেচনা করা কংগ্রেস গভীর আত্মনিরীক্ষায় রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ (ইউপি) ও উত্তরাখন্ডে মারাত্মক বিপর্যয় এবং গোয়া ও মণিপুরে বিদ্যমান পরিস্থিতিকে নিজেদের অনুকূলে আনার বেদনাদায়ক ব্যর্থতার পর বহু নেতাই খোলাখুলিভাবে বিজেপি বিরোধী সকল দলের ব্যাপক জোট গঠনের কথা বলছেন। ইউপি নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর কিছু নেতা এ উপসংহারে এসেছেন বলে শোনা গেছে যে, সকল বিজেপি বিরোধী দল যদি এক হতো তাহলে ইউপির ফলাফল অন্যরকম হতে পারত।
কংগ্রেস নেতা সিপি যোশি সাংবাদিকদের বলেন, সাম্প্রতিক রাজ্যসভা নির্বাচনগুলোতে বিজেপি তেমন জোরালো সমর্থন পায়নি। পক্ষান্তরে কংগ্রেস ও তার শরিকরা নির্বাচনে হেরে গেলেও ভালো ভোট পেয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া বিজেপি ৩৯.৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে। সমাজবাদী পার্টি পেয়েছে ২১.৮ শতাংশ ও কংগ্রেস ৬.২ শতাংশ। এর অর্থ তিনটি অ-বিজেপি দল ৫০.২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর এমনকি কংগ্রেস নেতারাও রাহুল গান্ধীর যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করেন। সাবেক মন্ত্রী কিশোর চন্দ্র দেও প্রকাশ্যে বলেন যে, রাহুল গান্ধীকে টিকতে হলে তাকে চাটুকারমুক্ত হতে হবে। ইউপিএ মন্ত্রিসভার আরেক মন্ত্রী অশি^নী কুমার বলেন, দলের উচিত খোলাখুলিভাবে ভুল স্বীকার করা এবং যে ভুল হয়েছে তার প্রায়শ্চিত্ত করা। এনডিটিভিতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে মনিশংকর আইয়ার বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্বের ২০০৪ সালে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত যখন সোনিয়া গান্ধী এক মহাজোট গড়েছিলেন যা এনডিএকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিয়েছিল। মনিশংকর আইয়ারের কথার জবাব দিতে গিয়ে সি পি যোশিও বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোটের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র বোকারাই বলবে যে কংগ্রেস একাই নরেন্দ্র মোদিকে পরাস্ত করতে পারবে। তবে রাহুল গান্ধী এ ব্যাপারে কিছু বলেননি। তিনি মেডিক্যাল চেক আপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া তার মা সোনিয়া গান্ধীকে আনতে গেছেন।
বিজেপির বিরুদ্ধে একটি মহাজোট গঠনের প্রয়োজনীয়তার উপর কংগ্রেসে চিন্তা-ভাবনা চলছে। তাদের এক প্রধান মিত্র জনতা দল বলেছে, মোদিকে পরাজিত করতে নীতিশকে মহাজোটের নেতা করতে হবে। দলের নেতা সঞ্জয় সিং বলেন, যদি নীতিশ কুমারকে মহাজোটের নেতা করা যায় তাহলেই শুধু বিজেপিকে পরাজিত করা যাবে।
মাহজোট গড়তে সিপিআই(এম) অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত এক নিবন্ধে বলেছেন, নব্য উদারবাদ মোকাবেলা মহাজোটের মূল নীতি হতে হবে।
নির্বাচনে বিপর্যয় সত্তে¡ও বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী তার দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলেননি। ১৯৯৩ সালে সমাজবাদী দলের (এসপি) সাথে ব্যর্থ মৈত্রীর পর মায়াবতী এসপিকে তার প্রধান শত্রæ বলে গণ্য করেন। তার নীতি ছিল একা নির্বাচনের মাধ্যমে তার মোকাবেলা করা। উপর্যুপরি তিন দফা পরাজয়ের পর তার নীতি পরিবর্তন করা উচিত ছিল কিনা সে প্রশ্নের জবাব শুধু মায়াবতীই দিতে পারবেন। মহাজোটের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ বাধা আসবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। মোদি ও বিজেপিকে পরাজিত করার বাগাড়ম্বর সত্তে¡ও তৃণমূলের সাথে সিপিআই (এম)-এর বিরোধ মিটিয়ে নেয়ার সম্ভাবনা কম। বাংলায় বাম দল প্রধান বিরোধী দল হিসেবে থাকতে চায়।
যদিও কংগ্রেস যত বেশি দলের সাথে সম্ভব মহাজোট গঠন করতে চায়, এ পদক্ষেপের ব্যাপারে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া থেকে তা অর্জন করার ক্ষেত্রে জটিলতার প্রতিফলন লক্ষিত হয়েছে। কিছু লোকের আপসহীন মতাদর্শগত অবস্থান এবং অন্যান্য নেতার অহংকারী পদক্ষেপ কংগ্রেসের সামনে সমস্যা জটিল করে তুলবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ