পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : সীতাকুÐের ছায়ানীড়ে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে মিরপুর থেকে নিখোঁজ দুই তরুণ আছে কিনা জানতে ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। এজন্য মিরপুরের নিখোঁজ জঙ্গিদের পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তারপর ছায়ানীড়ে নিহত জঙ্গিদের ডিএনএ’র সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।
ছায়ানীড়ে এক শিশু ছাড়াও নারীসহ চার জঙ্গি নিহত হয়েছিল। এদের মধ্যে কামাল উদ্দিন ও জোবাইদা নামে এক দম্পতির পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। বাকি দু’জন মিরপুর থেকে নিখোঁজ রাফিদ আল হাসান (১৭) এবং আয়াদ আল হাসান (১৯) বলে ধারণা করছে পুলিশ। ইতোমধ্যে নিহত জঙ্গিদের ডিএনএ সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। মিরপুরের তরুণদের পরিবারের ডিএনএ সংগ্রহের পর পরীক্ষা করা হবে।
১৫ মার্চ দুপুরে সীতাকুন্ড পৌরসভার সাধন কুটির থেকে গ্রেফতার জঙ্গি দম্পতিকে রাফিদ ও আয়াদের ছবি দেখিয়ে তারা ছায়ানীড়ে আছে কিনা জানতে চায় পুলিশ। এসময় তারা রাফিদ ও আয়াত সেখানে আছে বলে জানায়। রাফিদ ও আয়াদ দু’জন আপন খালাতো ভাই। রাফিদ এ লেভেলের ছাত্র। আয়াত কিছুদিন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিল।
গত বছরের ৯ আগস্ট ‘আমরা আমাদের পথ খুঁজে পেয়েছি, আমাদের চলে যাওয়ার জন্য আরেফিনকে দায়ী করো না’ লেখা চিরকুট রেখে রাফিদ ও আয়াদ বাড়ি ছাড়ে। দু’জনই মিরপুরের পূর্ব মণিপুরের বাসিন্দা। আরেফিন তাদের মামাতো ভাই। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। আকাশ ও হৃদয় সাংগঠনিক নামে তারা জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তারা ঘটনার এক সপ্তাহ আগে ছায়ানীড় বাড়িতে ওঠেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। এর আগে দুজনে চট্টগ্রামের পটিয়ার একটি বাড়িতে চার মাস ছিল।
এর আগে বুধবার দুপুরে লামারবাজার আমিরাবাদের সাধন কুটির থেকে এক নারীসহ দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছায়ানীড় ভবনের জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। বুধবার বিকেল তিনটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ছায়ানীড় ভবনে ‘অপারেশন অ্যাসল্ট-১৬’ চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ২০ ঘণ্টার এ অভিযানে চার জঙ্গিসহ পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
দেশের সবচেয়ে বেশি ও বিধংসী
বিস্ফোরক মিলেছে ছায়ানীড়ে!
সীতাকুÐ উপজেলা সংবাদদাতা জানান, দেশে এখনো পর্যন্ত যতগুলো জঙ্গি আস্তানায় বিস্ফোরক পাওয়া গেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ও বিধংসী বিস্ফোরক পাওয়া গেছে সীতাকুÐের ছায়ানীড়ে। এত বেশি আর বিধংসী বিস্ফোরক আর কোথাও পাওয়া যায়নি। প্রতিদিনই এখানে নতুন নতুন বিস্ফোরক ও উপাদান পাওয়া যাচ্ছে। গতকালও এই আস্তানায় ছোট বড় ১৭টি বোমা বিস্ফোরক ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। গত সন্ধ্যায় ছায়া নীড় পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা।
তিনি বলেন, এখানে এত বেশি বিস্ফোরক আছে বলেই খুব ধীরে ধীরে কাজ করতে হচ্ছে। পুলিশের বিভিন্ন বাহিনীর অনেক অভিজ্ঞ অফিসাররা এখানে কাজ করছেন। তবুও ছায়ানীড় বিস্ফোরক মুক্ত করতে আরো এক বা দু’দিন লেগে যেতে পারে। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে ছায়ানীড় বিস্ফোরক মুক্ত করতে কাজ করছে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী দল ও ক্রাইম সিনসহ পুলিশের বিভিন্ন দল। কিন্তু এখানে এত বেশি ছোট বড় বোমা আছে যে কাজ করা সহজ হচ্ছে না।
গত বৃহস্পতিবার পুলিশের গুলি ও আত্মঘাতে নিহতদের বিষয়ে বলতে গিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আমরা ছায়ানীড়ে নিহত ৪ জঙ্গির মধ্যে ২ জনের পরিচয় পেয়েছি। তারা বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ির বাসিন্দা। ঐ উপজেলার বাইশারী যৌথ খামার এলাকায় তাদের বাড়ি। নিহতদের পরিবারকে খবর দেয়ার পর শনিবার গভীর রাতে তারা থানায় এসে পৌঁছায়। তবে তারা লাশ নেবে কিনা তা আমরা এখনো বুঝতে পারছি না। অবশ্য গতকাল থানায় তারা লাশ নেবে বলে জানান পুলিশ সুপারের পাশে থাকা এডিশনাল এসপি মাসুদ রেজা। এছাড়া নিহত আর দুজন ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা বলে আমরা বিভিন্ন কারণে সন্দেহ করছি।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার দুপুরে সীতাকুÐ পৌরসদরের নামারবাজার আমিরাবাদ সাধন কুঠির থেকে দুই জঙ্গি জহিরুল ইসলাম প্রকাশ জসীম তার স্ত্রী আরজিনাকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সহ হাতে নাতে আটক করে পুলিশে দেয় ওই বাড়ির মালিকসহ কয়েকজন। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেড় কিলোমিটার দূরবর্তী চৌধুরীপাড়া এলাকাতে জঙ্গি আস্তানা ছায়া নীড়ের সন্ধান মেলে। সেখানে অভিযান চালাতে গিয়ে একটানা ২০ ঘন্টা সময় লেগে যায় বিভিন্ন বাহিনীর। পরে বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে সোয়াতের গুলি ও আতœঘাতী হয়ে ৪ জঙ্গি ও এক শিশু নিহত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।