Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আমি ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে-ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল, এমপি

ইনকিলাবের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার

প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৪৯ এএম, ২০ মার্চ, ২০১৭

ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় তরুণ এমপি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত পরিচিত ও পর পর তিনবার নির্বাচিত এমপি মরহুম আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের ছেলে। বাবার মতোই বিপুল জনপ্রিয় এমপি বাবেল এলাকার উন্নয়ন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও রাজনীতির নানা বিষয়ে কথা বলেছেন ইনকিলাবের সঙ্গে। গতকাল রোববার ঢাকায় সংসদ ভবন এলাকার বাসভবনে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইনকিলাবের গফরগাঁও উপজেলা সংবাদদাতা মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ
ইনকিলাব : আপনি তো প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হয়েছেন, অভিজ্ঞতা কেমন লাগছে?
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল : ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছি। আমার গফরগাঁওয়ের জনগণ আমাকে অনেক ভালোবাসে, স্নেহ করে, সম্মান করে। আমার কাছে এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমার প্রতি তাদের প্রত্যাশাও অনেক, আমি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সৈনিক হিসেবে আমার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
ইনকিলাব : আপনার বাবা মরহুম আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ গফরগাঁওয়ের একবার উপজেলা চেয়ারম্যান ও তিনবার আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ছিলেন। তাঁর মতো বরেণ্য রাজনীতিকের প্রভাব আপনার নিজের ওপর কেমন পড়েছে বলে মনে করেন?
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল : আব্বার কাছ থেকেই মূলত আমার রাজনীতির হাতেখড়ি। তিনি অত্যন্ত দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ছিলেন। এলাকার মানুষকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। মানুষজনও তাঁকে অত্যধিক ভালোবাসত, সম্মান করত। তিনি আমাকে বলে গেছেন, যতদিন বাঁচি ততদিন যেন মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি। আমার চলার পথে সব সময়ই আব্বার প্রভাব আমি টের পাই।
ইনকিলাব : আপনার নির্বাচনী এলাকার জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নয়ন কাজ করতে পেরেছেন বলে মনে করেন কি?
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল : শতভাগ উন্নয়ন শেষ করতে পেরেছি, এমন দাবি করব না। তবে আমার প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গফরগাঁওয়ের প্রতি বরাবরই সুদৃষ্টি ছিল, আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ইতোমধ্যে বহু উন্নয়ন কাজ শেষ করেছি, পৌরসভাসহ গ্রামাঞ্চলে বহু উন্নয়ন কাজ চলমান আছে। বিশেষ করে বহু রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ ও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়ন গত তিন বছরে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। এটা সম্ভব হয়েছে, প্রশাসনের আন্তরিকতা ও আমার দলীয় নেতাকর্মীদের আন্তরিক সহযোগিতার কারণে। আরো বেশকিছু উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা হাতে আছে।
ইনকিলাব : ব্রিটিশ আমল থেকে গফরগাঁওয়ে রেলযোগাযোগ আছে। এই স্টেশনে ট্রেনের পর্যাপ্ত সিট বরাদ্দ নাই, স্টেশনের অবকাঠামোও বেশ পুরনো। অথচ গফরগাঁও থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হলো ট্রেন। স্টেশনটিকে প্রথম শ্রেণি করা ও ট্রেনের সিট বরাদ্দ বাড়াতে আপনি কি চেষ্টা করছেন?
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল : সত্যি কথা বলতে কি এক সময় গফরগাঁওয়ের খুব কম মানুষ ট্রেনের টিকিট কাটত, কিন্তু এখন কেউ টিকিট কাটা ছাড়া ট্রেনে ওঠে না। অথচ দুঃখের বিষয় গফরগাঁওয়ের জন্য সিট খুব কম বরাদ্দ। আমি এমপি হিসেবে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুতই সিট বাড়াবেন। একই সঙ্গে স্টেশনটিকে প্রথম শ্রেণি করারও পরিকল্পনা আছে।
ইনকিলাব : গফরগাঁওয়ের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন কেমন?
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল : উপজেলার আইন-শৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি ভালো। মানুষ নিশ্চিন্তে রাত-বিরাতে পথ চলতে পারে, বাড়িতে ঘুমাতে পারে, চোর-ডাকাতের কোনো উৎপাত নাই। পুলিশ প্রশাসনকে বলে দেয়া আছে, আমি কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেব না। অন্যায় করে কেউ পার পাবে না। আমি সব সময় ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে।
ইনকিলাব : সাম্প্রতিক সময়ে দেশে জঙ্গিবাদ একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। সরকার জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জোরালো ভূমিকা রাখার পরও পর পর বেশ কয়েকটি বড় ঘটনা ঘটল। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল : আমাদের সরকারের নীতিই হচ্ছে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। প্রধানমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী, এমপি, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবাই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার আছেন। একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা বিভিন্ন সময় এই দেশকে অশান্ত করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছে, কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে সফল হতে পারেনি, এবারও পারবে না। আমি বলব, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর ও উন্নত বাংলাদেশ চাইলে সরকারের পাশাপাশি দেশের সবারই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়ানো উচিত।
ইনকিলাব : প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায়, রাজনীতি এখন কলুষিত হয়ে গেছে, তাই তরুণ মেধাবীরা রাজনীতিতে আসছে না। আপনি তো বয়সে তরুণ, একজন তরুণ এমপি হিসেবে, তরুণ সমাজের উদ্দেশে কী বলবেন আপনি?
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল : অভিযোগটি পুরোপুরি সত্য নয়। তবে রাজনীতির ভেতর বহু অরাজনৈতিক লোকজন ঢুকে গেছে, এটা সত্যি। দেশকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানোর জন্যই তরুণ মেধাবীদের বেশি করে রাজনীতিতে আসতে হবে। তাহলে অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা সুযোগ পাবে না। আমার প্রাণের দল আওয়ামী লীগ সব সময়ই তরুণ নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করে থাকে। এই সংসদেও দেখবেন, অনেক তরুণ এমপি আছেন, কয়েকজন তরুণ মন্ত্রীও আছেন। তরুণ সমাজের উদ্দেশে বলব, আপনারাই আগামীতে বাংলাদেশ চালাবেন, তাই ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। আসুন, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় অবদান রাখার মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে দলমত নির্বিশেষে একযোগে আত্মনিয়োগ করি।
ইনকিলাব : আমাদের সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল : আপনাকে ও ইনকিলাবকে ধন্যবাদ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ