পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের আর মাত্র ১০ দিন বাকি। এরই মধ্যে শনিবার নির্বাচন কমিশনের অন্যতম তিন কমিশনার কুমিল্লায় পা রেখে প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে জানান দিয়েছেন যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে। এ ব্যাপারে ইসির মনোভাব যেমন নিরপেক্ষ তেমনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে কঠোর। নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রার্থী বা দলের শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তিন নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের পর পাল্টে গেছে নির্বাচনী প্রচারণার দৃশ্যপট। প্রচারণার জন্য হাতে মাত্র আট দিন সময় থাকায় অনেকটা নির্ঘুম রাত পার করে কাকডাকা ভোরেই নেমে পড়ছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে নির্বাচনে দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও বিএনপির মনিরুল হক সাক্কুর প্রচারণায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে দলের নারী নেত্রীদের অংশগ্রহণ। বিএনপি প্রার্থী সাক্কুর পক্ষে তার স্ত্রী আফরোজা জেসমিন টিকলির বিরামহীন প্রচারণা গত নির্বাচনের মতো এবারও মহিলা ভোটারদের দৃষ্টি কেড়েছে। টিকলির সাথে এবার প্রচারণায় যোগ দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ও মহিলা দলের নেত্রীরা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সীমার পক্ষে দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় মহিলা লীগ নেত্রীরা ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। দুই প্রার্থীর প্রচারণায় তাদের পারিবারিক নারী সদস্য ও দলীয় নেত্রীদের বিরামহীন পথচলা নির্বাচনী পরিবেশকে করে তুলেছে উৎসবমুখর।
স্বাধীনতা মাসের শেষলগ্নে নগরবাসী নির্বাচিত করবেন দলীয় প্রতীকে প্রথমবার অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র। নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সীমা ও বিএনপির সাক্কু। ১৫ মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়। নির্বাচনে আলোচিত ও প্রতিদ্ব›দ্বী দুই প্রার্থী সীমা ও সাক্কু প্রচারণা নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ না করলেও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির সাক্কু। শনিবার কুমিল্লায় আসেন ইসির তিন কমিশনারসহ নির্বাচন সচিব। তারা নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। প্রার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগ, পরামর্শ শোনার পর ইসির তিন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ তাদের বক্তব্যে সাফ জানিয়েছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কোনোরকম শঙ্কা সৃষ্টি হবে না। শতভাগ অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে নির্বাচন। এক্ষেত্রে ইসি জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবে। নির্বাচন কমিশনারদের এমন ঘোষণার পর প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের মাঝে স্বস্তি জেগে ওঠে। শনিবার দিনভর প্রতিকূল আবহাওয়ার মাঝেও সাক্কু-সীমার প্রচারণায় নেতাকর্মী, সমর্থকদের চোখেমুখে ফুটে ওঠে উচ্ছ¡াসের চিত্র।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার মহিলা ভোটারের সংখ্যা পুরুষের চেয়ে কিছুটা বেশি। আলোচিত দুই মেয়র প্রার্থী সাক্কু ও সীমার পক্ষে ৫৩ দশমিক ৪ বর্গকিলোমিটার সিটির ১০৪টি ভোটার এলাকার প্রতিটি বাড়িতে এ স্বল্প সময়ের মধ্যে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় তাদের পক্ষে দলের মহিলা নেতাকর্মীরা নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে মাঠে নেমেছেন। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ের যে পরিমাণ নারী নেতাকর্মী আলোচিত দুই প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ও আঞ্জুম সুলতানা সীমার পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নেমেছেন তা প্রচারণায় ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে। বিশেষ করে গত সিটি নির্বাচনের মতো এবারও মেয়র প্রার্থী স্বামী সাক্কুর পক্ষে স্ত্রী আফরোজা জেসমিন টিকলি ভোটের মাঠে নেমেছেন। তবে এবার দলীয় প্রতীকের প্রার্থী হওয়ায় টিকলির সাথে যোগ হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা দলের বেশ সংখ্যক নেত্রী। এছাড়াও কুমিল্লা জেলা মহিলা দলের নেত্রীরা রয়েছেন। প্রতিদিনই সাবেক মেয়র সাক্কুর স্ত্রী টিকলি দলীয় নেত্রীদের সাথে নিয়ে মহিলা ভোটারদের কাছে নানা কৌশলে ভোট চাইছেন। ধানের শীষ প্রতীক সম্বলিত লিফলেট নিয়ে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন। কোনো কোনো বাড়িতে একাধিকবারও যাচ্ছেন। সাক্কুর বিগত দিনের উন্নয়ন কর্মকাÐের কথা ভোটারদের শুনাচ্ছেন। প্রচারণার শেষ সময় পর্যন্ত স্বামীর পক্ষে তার প্রচারণা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আফরোজা জেসমিন টিকলি। তিনি জানান, দলীয় প্রতীকের নির্বাচন হওয়ায় প্রচারণায় অংশ নিতে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের অনেকেই এসেছেন। এছাড়াও মহিলা দলের স্থানীয় নেত্রী, কর্মী-সমর্থকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধানের শীষের জয়ের লক্ষ্যে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে মা-বোনদের কাছে ভোট চাইছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার পক্ষে কেন্দ্রীয় মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ ও কুমিল্লা জেলা মহিলা লীগের নেত্রী ও কর্মী-সমর্থকরা নগরীর সব ক’টি ওয়ার্ডে ব্যাপক গণসংযোগ চালাচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলা ভোটারদের কাছে মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার জন্য ভোট চাইছেন দলের নারী নেত্রীরা। ঢাকা থেকে আসা কেন্দ্রীয় নেত্রীদের সাথে স্থানীয় নেত্রীরা সমন্বয় করে কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে বেরিয়ে পড়ছেন নৌকার প্রচারণায়। হাতে লিফলেট নিয়ে যাচ্ছেন ঘরে ঘরে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে চলছে মহিলা লীগ নেত্রীদের বিরামহীন প্রচারণা। সীমার নির্বাচনী প্রতিশ্রæতির কথা মহিলা ভোটারদের শুনাচ্ছেন প্রচারণায় থাকা দলের নারী নেত্রীরা। সব মিলে মহিলা ভোটারদের মন জয় করতে সাক্কু ও সীমার পক্ষে তাদের পরিবারের লোকজন এবং দলের নারী নেত্রীদের নগরীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়ানোর দৃশ্য নৌকা-ধানের শীষের ভোট যুদ্ধক্ষেত্রকে সরগরম করে তুলেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।