Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিজ নিজ এলাকার জঙ্গিদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিন

| প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে আ’লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী


বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, নিজ নিজ এলাকায় কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী আছে কি না, সে তথ্য আপনাদের সংগ্রহ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তুলে দিতে হবে। বাংলাদেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের স্থান হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, এ দেশে কোনো সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ হোক, সেটা আমরা চাই না। এর বিরুদ্ধে আমরা যে কঠোর অবস্থান নিয়েছি, তা অব্যাহত থাকবে।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন  কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ৯৭তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শিক্ষক, অভিভাবক, মসজিদের ইমাম, ওলামায়ে কেরামসহ জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো  ছেলেমেয়ে যেন এই জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। সম্পৃক্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবস্থা নিতে হবে। নিজের সন্তানেরা কোথায় যায়, কার সঙ্গে মিশে, কী করে, তার খবর নিতে হবে। মাদকাসক্তি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে নিজ নিজ সন্তান যেন দূরে থাকে, তারা যেন মানুষের মতো মানুষ হয়; ভবিষ্যতে এই দেশ পরিচালনার মতো উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে, এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,  বাংলাভাই সৃষ্টি করে প্রকাশ্য দিবালোকে অস্ত্র হাতে নিয়ে পুলিশ ও বিএনপি নেতৃবৃন্দের মদদে তৎপরতা চালিয়ে  যে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ চালু করা হয়েছিল, তা দমনে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। ৫শ’ জায়গায় জঙ্গিরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, ১০ ট্রাক অস্ত্রের চোরাকারবার দেশে ধরা পড়েছে। এর সঙ্গে দেখা  গেল খালেদা জিয়ার মন্ত্রীরাই জড়িত। সেটাও আদালতে প্রমাণ হয়ে তারা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়ার ছেলে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়ে বিচারের সম্মুখীন হয়েছে, খালেদা জিয়া নিজে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে এখন আদালতে গিয়ে মামলা মোকাবেলা করতে ভয় পাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার বিরুদ্ধে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের বিভিন্ন মামলা আদালতে গিয়ে মোকাবেলার তথ্য তুলে ধরে বলেন, আমরা কিন্তু যেকোনো অবস্থা মোকাবেলা করতে জানি। কারণ আমাদের সততার জোর আছে। সততার শক্তি আছে। সততা একজন রাজনীতিবিদের জন্য বড় শক্তি আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন আমরা সততার সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করছি বলেই আজকে বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। যে বাংলাদেশ পেয়েছি, সেই বাংলাদেশ পেতাম না। বঙ্গবন্ধু নিজে ছিলেন স্বাধীনচেতা, তিনি  দেশকেও স্বাধীন করেছেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই, যেখানে তিনি না গেছেন। তিনি মানুষের মাঝে আত্মসচেতনতা সৃষ্টি করেছিলেন। অধিকার চেতনা সৃষ্টি করেছেন। দিয়েছেন ছয় দফা; করেছেন কারাবরণ। কোনো  লোভ-লালসার কাছে তিনি মাথা নত করেননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত পাড়াগাঁয়ে জন্ম নিয়েছিলেন এক মহাপুরুষ, যার নাম নানা আদর করে রেখেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। নাম রাখার সময়ই নানা বলেছিলেন, তার নাম হবে জগৎজোড়া। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু  ছোটবেলা থেকে সেভাবেই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠেন বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে। মানুষকে তিনি খুব ভালোবাসতেন। আর তাই মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি বারবার শাসকগোষ্ঠীর চক্ষুশূল হয়ে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন। তবুও দমে যাননি তিনি। লক্ষ্যস্থির করে মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটিয়ে তাকে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলার মানুষের দুরবস্থা তিনি খুব কাছ থেকে  দেখেছেন। মাইলের পর মাইল নৌকায় চেপে, পায়ে হেঁটে, সাইকেলে চড়ে সমগ্র দেশ তিনি চষে বেড়িয়েছেন। বাংলাদেশের দুর্গম এলাকা ঘুরেছেন। মানুষের মাঝে একটি আত্মসচেতনতা তিনি সৃষ্টি করেন। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিকবাদের বিরুদ্ধে জাতির পিতার সংগ্রামকালে এ দেশের বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি একাধারে পাকিস্তানের লড়াই-সংগ্রাম করেছেন আবার  সেটা করতে গিয়েই উপলব্ধি করেছেন বাঙালিদের ভাগ্য নিয়ন্তা বাঙালিরা না হলে এদেশের দুঃখী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না। আমাদের উপার্জিত অর্থে পাকিস্তানি শাসকেরা মরুভূমিতে ফুল ফুটিয়েছিল। আর বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। যে কারণে একটানা দু’টি বছরও বাবাকে কাছে পাইনি। কারাগারেই তিনি কাটিয়েছেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে উন্নত, সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে শপথ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। জাতির পিতার সম্পূর্ণ জীবনটাই ছিল বাংলার মানুষের জন্য নিবেদিত। জাতির পিতা চেয়েছিলেন বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড। ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পালন করব। ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করব। জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করব, তার জন্মদিনে এটাই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ। আর ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ। বাংলাদেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না, কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে না, কোনো মানুষ রোগে-শোকে কষ্ট পাবে না, সকলেই তাদের জীবনের  মৌলিক অধিকারগুলো ভোগ করতে পারবে। সেভাবেই আমরা  দেশকে গড়ে তুলতে চাই।
সভায় বক্তৃতা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ,  প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মাওলানা খন্দকার গোলাম মওলা নকশেবন্দী, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ  হোসেন, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ এমপি, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও সাদেক খান বক্তৃতা করেন।
সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং সহপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সভা পরিচালনা করেন। জাতির পিতার ওপর কবিতা আবৃত্তি করেন আওয়ামী লীগ নেতা ও আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ।
সভায় মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির পিতা এবং পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহত তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ, জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভাব নেই উল্লেখ করে পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, রাজনীতি করি বাংলাদেশের জনগণের জন্য, রাজনীতি করি পিতার আদর্শে। জনগণের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে যেখানে প্রস্তুত,  সেখানে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ এনে ভয় দেখাবে, আমি তো ওরকম বাবার সন্তান না। আমি শেখ মুজিবের সন্তান। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন কানাডার সেই ফেডারেল কোর্ট বলে দিয়েছে বিশ্বব্যাংকের সকল অভিযোগ মিথ্যা, ভুয়া, বানোয়াট।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী দেশে বর্তমানে গণতন্ত্র নিয়ে যারা সমালোচনা করেন তাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, যারা এখন দেশে গণতন্ত্র দেখতে পান না, তারা আসলে সেনা শাসনের সময় ঠিকই গণতন্ত্র দেখতে পেতেন। আজ্ঞাবহদের শাসনে তারা অভ্যস্ত বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী  ১৯৭৪ সালে জাতির পিতার সমুদ্র সীমানা চুক্তি এবং ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সম্পাদিত স্থল সীমানা চুক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, অনেকে ক্ষমতার বাইরে থাকলে ভারতবিদ্বেষী আর ক্ষমতায় গেলেই ভারত তোষণনীতি পালন করে বলেই গত ২১ বছরে জিয়া, খালেদা, এরশাদ কেউ আর এসব চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের ফোরামে কথা বলতে পারেনি। মুখে বড় বড় কথা বললেও তাদের দালালিটা এমন ছিল, দাবি আদায়ের কথা বলতে  গেলেই তাদের যেন বেলুনের হাওয়া ফুঁস করে বের হয়ে যেত। এ সময় বেগম খালেদা জিয়া একবার গঙ্গার পানির বিষয়ে ভারতে কথা বলতে গেলেও দেশে ফেরার পর তা ভুলে গিয়েছিলেন বলে সাংবাদিকদের কাছে উল্লেখ করেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় যারা অতন্ত্র প্রহরী, বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী- তাদের একটি স্বাধীন দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে আমরা গড়ে তুলেছি এবং জাতির পিতার ১৯৭৪ সালে প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতিমালার আওতায় আমরা ফোর্সেস গোল ২০৩০ গ্রহণ করে উন্নয়ন করে যাচ্ছি। পুলিশ বাহিনী, বর্ডার গার্ড, আনসার ও ভিডিপি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রত্যেকটি বাহিনীকে আমরা একটা স্বাধীন দেশের উপযুক্ত করে গড়ে তুলে দেশের মানুষকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের হাত থেকে মুক্ত করার পদক্ষেপ নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ১৯৬৬ সালে ৬ দফা দেয়ার পর কারাগারে থাকার সময় ডায়েরি আকারে লেখা জাতির পিতার ‘কারাগারের  রোজ নামচা’ শীর্ষক আরেকটি আত্মজীবনী গ্রন্থ প্রকাশের কথা উল্লেখ করে বলেন, বইটির নাম দিয়েছেন শেখ রেহানা।
আশকোনায় যুবকের মৃত্যু ভেস্টে থাকা বোমার বিস্ফোরণে
খিলগাঁওয়ে মোটরসাইকেল আরোহী যুবক মারা গেছে গুলিতে
স্টাফ রিপোর্টার : আশকোনায় র‌্যাবের নির্মাণাধীন সদর দফতরে হামলাকারী যুবক মারা গেছে আত্মঘাতী ভেস্টে থাকা বোমার বিস্ফোরণে। এছাড়া খিলগাঁওয়ে র‌্যাবের চেকপোষ্টে মোটরসাইকেল আরোহী যুবক মারা গেছে গুলিতে। গতকাল শনিবার পৃথক ঘটনায় নিহত দুই যুবকের লাশের ময়না তদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ একথা বলেন। শুক্রবার দুপুরে র‌্যাবের নির্মাণাধীন সদর দফতরে নিহত যুবকের লাশ গতকাল শনিবার  ময়না তদন্ত শেষে ঢামেকের ফরেনসিক মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, এতটা ছিন্নভিন্ন দেহ এর আগে আর দেখিনি। আত্মঘাতী ভেস্টে থাকা বোমার বিস্ফোরণেই যুবকটির মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তির বুক ও পেট ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তার পেটে বেল্ট বাধা ছিল। কাতের কনুই পর্যন্ত অংশ উড়ে গেছে। তার পেটে ইলেকট্রিক ওয়ার পাওয়া গেছে। কাপড়চোপড় পেটের ভেতর ঢুকে গেছে। ডিএনএ টেস্টের জন্য ওই আত্মঘাতী হামলাকারীর দাঁত, চুল ও ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার লিভার ও পাকস্থলীর কিছু অংশ পাওয়া গেছে। একটা কিডনি আছে। হামলার আগে সে শক্তিবর্ধক কিছু খেয়েছিলো কিনা জানতে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। সোহেল মাহমুদ জানান, তার নেতৃত্বে ফরেনসিক মেডিসিনের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস ও প্রভাষক ডা. কবীর সোহেলকে নিয়ে একটি ময়না তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের মাধ্যমে ময়না তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।
এদিকে নিহত ওই যুবককে নিজের ছেলে বলে দাবি করেছেন আমিরন নামের এক নারী। গতকাল শনিবার আমিরন র‌্যাবের ব্যারাকে যান। সেখানে গিয়ে তিনি র‌্যাবের কাছে দাবি করেন, তাদের বাড়ি পিরোজপুরে। নিহত যুবক তার ছেলে। নাম রফিক। ঢাকায় রফিক চায়ের দোকানে কাজ করতো। পাঁচ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয় রফিক। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ মেলেনি। র‌্যাব জানায়, ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে ওই ঘটনায় র‌্যাব বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেছে। বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজমের ভাষ্য, মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।
অপরদিকে খিলগাঁও চেকপেষ্টে নিহত যুবক গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। ময়নাতদন্ত শেষে সোহেল মাহমুদ বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়েই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে চারটি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি বুকে ও একটি পায়ে বিদ্ধ হয়েছিল। সবকটি গুলি তার শরীর থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নিহতের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই যুবক হামলার আগে শক্তিবর্ধক কিছু খেয়েছিল কি-না তা জানার জন্য ভিসেরা পরীক্ষা করা হবে। এজন্যও আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে এক যুবক মোটরসাইকেলে করে র‌্যাব-৩ এর খিলগাঁও শেখের জায়গা এলাকার চেকপোস্ট পার হচ্ছিলেন। র‌্যাব সদস্যরা তাকে থামার সংকেত দিলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় র‌্যাব সদস্যরা তাকে আটক করতে এগিয়ে গেলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ওই যুবক। এতে দুই র‌্যাব সদস্য আহত হন। র‌্যাব পাল্টা গুলি ছুড়লে ওই যুবক নিহত হন। পরে ওই যুবকের কাছে থাকা কয়েকটি বিস্ফোরক উদ্ধার করে। যা র‌্যাব নিস্ক্রিয় করে। নিহত যুবকের পরিচয় এখনো জানতে পারেনি র‌্যাব। ওই যুবক কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা হচ্ছে।



 

Show all comments
  • Sefali ১৯ মার্চ, ২০১৭, ৪:০১ এএম says : 0
    Tobe sadharon manus ke jeno hoyrani kora na hoy
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২০ মার্চ, ২০১৭, ৩:২৮ এএম says : 0
    এই সংবাদে প্রধানমন্ত্রী বিএনপির নেতা ও নেত্রীদের নিয়ে যে সব অভিযোগ এনেছেন সেসব তদন্তে প্রমানিত হয়ে সাজাও হয়েছে আবার কিছু প্রমানিত হয়ে সাজার অপেক্ষায় রয়েছে। তাহলে বিএনপির নেতা দলের মাথা নেত্রীকে বিচারের সামনা সমনই করা উচিৎ নয় কি??? কিন্তু দুষ্ট উকিলদের দুষ্টামীর কায়দায় আদালত শুধু তারিখ আর তারিখ গুনছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক চেষ্টা করেও তিনি এখন হাপিয়ে গেছেন এই উকিদেরকে কাবু করতে। যতদিন এসব কু-উকিল, কু-সাংবাদিক, কু-আমলা কামলা, কু-সাংসদ ও কু-পুলিশদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবেনা ততদিন বাংলাদেশে আইনের শাসন কোন ভাবেই প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তবে প্রথম ধাপে উকিল ও সাংবাদিকদেরকে কাবু করতে পারলে বাকীদেরকে এই দুই দলই কাবু করে ফেলবে এটা নিশ্চিত। আর সেটা করার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে নতুন নতুন আইন প্রণয়নের মধ্যমে এদের লাগাম টেনে ধরা বিশেষ করে উকিলদের। এখনও সময় হাতে রয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার; তিনি এখনও যদি আইনমন্ত্রীর কথা না শুনে বরং তাকেই কথা শুনাতে পারেন তাহলে আমি নিশ্চিত এই তারিখ নেয়ার উকিলি কারসাজি বন্ধ করে যারা দেশের ক্ষমতায় বসে জনগণকে ঠিকিয়েছে তাদেরকে সাজা দিয়ে দেশে আর কখনও যেন দেশ রক্ষকরা ভক্ষক হতে নাপারে সে ব্যবস্থা করা। জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমার অনুরোধ তিনি যেন আল্লাহ্র সহযোগিতা কামনা করে দেশ পরিচালনা করেন তাহলেই দেশে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশ’আল্লাহ। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ