Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

রাশিয়ার আইএস আর ইসরাইলের আসাদ

| প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নিউজ উইক : সিরিয়ার কট্টরপন্থী ইসলামী বিদ্রোহী গ্রæপগুলোর একটি জোট উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার আলেপ্পো ও ইদলিব প্রদেশের মাঝামাঝি একটি মসজিদের উপর ভয়াবহ বিমান হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছে। ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রæপকে পরাজিত করার জন্য রাশিয়া সমর্থিত সিরিয়ার সরকারী সেনাবাহিনীর চলমান অভিযান এবং সিরিয়াপন্থী বাহিনীগুলোর উপর ইসরাইলি জঙ্গি বিমানের হামলার মধ্যে মসজিদের উপর হামলার এ ঘটনা ঘটে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এখন সাত বছরে পড়েছে। সিরিয়ার রক্ষণশীল সুন্নী মুসলিম সরকার বিরোধী বাহিনীগুলোর জোট আহরার আল-শাম বলেছে, আইএস বিরোধী জোটের মার্কিন জঙ্গি বিমানগুলো আলেপ্পোর পশ্চিমাঞ্চলীয় পল্লী এলাকায় আল-জিনা গ্রামে ওমর ইবনে আল-খাত্তাব মসজিদের উপর হামলা চালায়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের মতে, এ হামলায় কমপক্ষে ৪৬ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। উল্লেখ্য, আহরার আল-শাম মার্কিন জোটভুক্ত সউদি আরব, কাতার ও তুরস্কের মত মিত্রগুলোর সমর্থন লাভ করেছিল। ২০১১ সাল থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য লড়াইরত বিরোধী গ্রæপগুলোর মধ্যে তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
এক অনলাইন টুইটার বিবৃতিতে আহরার আল-শাম বলে, আন্তর্জাতিক জোট যদি ইদলিব ও আশপাশের এলাকায় ধ্বংসাত্মক হামলা অব্যাহত রাখে এবং হত্যাপ্রবণ ইরানি মিলিশিয়াদের অপরাধের প্রতি চোখ বন্ধ করে রাখে, তাহলে তা শুধু সিরিয়ার অপরাধী সরকারকেই শক্তিশালী করবে, সিরিয়ার রক্তপাত অব্যাহত রাখবে এবং সহিংসতার বিস্তার ঘটাবে।
যুক্তরাষ্ট্র মসজিদে হামলার কথা অস্বীকার করেছে। তবে কাছাকাছি এলাকায় বিমান হামলা চালানোর কথা স্বীকার করে বলেছে যে, আল-কায়েদা নেতাদের একটি গ্রæপ সেখানে সভা করছিল। এ এলাকাটি জিহাদি গ্রæপগুলোর আরেকটি জোট তাহরির আল-শাম নিয়ন্ত্রিত এলাকার কেন্দ্রস্থল। আল কায়েদার জাবহাত ফাতাহ আল-শাম এ জোটের অন্তর্ভুক্ত যা আগে আল-কায়েদার নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র তাহরির আল শামকে সন্ত্রাসী গ্রæপ বলে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু আহরার আল শামকে তা না করলেও তাদের নেতারা মার্কিন বাহিনীর লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। স্ট্যানফোর্ড বিশ^বিদ্যালয়ের জঙ্গি মানচিত্রায়ন সংস্থার মতে, এ দু’টি জিহাদি জোটই আগে আইএসকে সহায়তা করেছে।
উভয় গ্রæপই রুশ ও সিরীয় বিমান হামলার শিকার হয়েছে। রাশিয়া আসাদের সমর্থনে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে সিরিয়া যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে। এর ফলে সিরিয়ার সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের অর্জন ভন্ডুল হয়ে যায়। এ সরকার বিরোধী জোট পরে আদর্শিক অভ্যন্তরীণ দ্ব›দ্ব ও বিদেশী সাহায্য হ্রাস পাওয়ার কারণে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সিরিয়ার সেনাবাহিনী রাশিয়া ও ইরানি মিলিশিয়াদের সাহায্যে ডিসেম্বরে আলেপ্পো পুনর্দখল করে। সরকারপন্থী আল মাসদার নিউজের মতে, রাশিয়া আলেপ্পোর অন্যদিকে  আইএসের লক্ষ্যবস্তুগুলোতে বহুবার বিমান হামলা চালিয়েছে।
পূর্ব আলেপ্পো ও পূর্ব পালমিরায় সিরীয় সেনাবাহিনী ও মিত্র মিলিশিয়াদের সমন্বয়ে সকোরী বাহিনীর অগ্রযাত্রা যখন অব্যাহত রয়েছে, সে সময় তারা আরেক শত্রæর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। তেল আবিব শুক্রবার নিশ্চিত করে যে তারা পালমিরার কাছে বিমান হামলা চালিয়েছে যা ইরান সমর্থিত সিরিয়ার মিত্র হেজবুল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। এ হামলা হচ্ছে সিরিয়ার সংঘাতে ইসরাইলের সবচেয়ে গভীরভাবে জড়িত হওয়ার ঘটনা যাতে তার সরকারী অবস্থান হচ্ছে নিরপেক্ষ এবং বাশার বিরোধী গ্রæপগুলোকে তারা সীমিত সাহায্য প্রদান করে। ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুসারে সিরীয় বাহিনী ইসরাইলি জঙ্গিবিমানগুলোর প্রতি বিমান বিধ্বংসী কামানের গোলাবর্ষণ করে।  
যুক্তরাষ্ট্র এক সময় সিরিয়ার বিরোধীদের সমর্থন করত। তারা এখন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসকে (এসডিএফ) সমর্থন করে। কুর্দি জঙ্গিদের সাথে এসডিএফের সংশ্লিষ্টতা থাকার জন্য তুরস্ক এসডিএফকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেছে। তুরস্ক তার সমর্থিত বিদ্রোহী গ্রæপের সমর্থনে এবং এসডিএফ ও আইএসকে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা থেকে হটাতে গত আগস্টে সিরিয়ায় অভিযান চালায়। এ সব ঘটনা মার্কিন সমর্থিত এসডিএফ এবং রুশ সমর্থিত সিরীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে সামরিক জোটের সৃষ্টি করেছে। তারা যৌথভাবে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মানবিজ শহরের কিছু এলাকা দখল করেছে। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ