Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ছায়ানীড়ে নিহত ২ জন জঙ্গি জসিমের ‘বোন-দুলাভাই’

| প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : সীতাকুন্ড সদরের প্রেমতলায় ‘ছায়ানীড়’ ভবনের জঙ্গি আস্তানায় নিহত জঙ্গিদের মধ্যে দু’জন বুধবার নামার বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার জঙ্গি জসিমের বোন ও দুলাভাই ‘হতে পারে’ বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল (শুক্রবার) পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) নুরে আলম মিনা বলেন, ছায়ানীড়ে নিহত চার জঙ্গির মধ্যে দু’জন গ্রেফতার জঙ্গি জসিমের আপন বোন ও বোন জামাই বলে তথ্য পেয়েছি।
অন্য দুই পুরুষ ঢাকার মিরপুর থেকে নিখোঁজ দুই খালাতো ভাই হতে পারে বলে ধারণা করছি। সবগুলো লাশের ডিএনএ টেস্টের পরই তাদের পরিচয় বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মিরপুর থেকে দুই খালাতো ভাই কখন নিখোঁজ হয়েছিল এবং তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তা জানাতে পারেননি পুলিশ সুপার মিনা।
সীতাকুন্ড পৌরসদরের নামার বাজার এলাকায় ‘সাধন কুঠির’ নামের ভবনের নিচতলার বাসা ভাড়া নেয়ার সময় জসিম জানিয়েছিল তার বাড়ি কক্সবাজার জেলার রামুতে।
এর আগে প্রেমতলার ‘ছায়ানীড়’ ভবনের নিচ তলার বাসাটি ভাড়া নেয়ার সময় দুই পুরুষের একজন তার বাড়ি কক্সবাজারের রামু বলে জানিয়েছিল। ওই বাড়ির মালিকের ছেলে মহিউদ্দিন জানায়, বাড়ি ভাড়া নিতে আসা দুই পুরুষ নিজেদের শালা-দুলাভাই পরিচয় দিয়েছিল।
এসপি নুরে আলম মিনা বলেন, জসিম ও তার স্ত্রী এবং জসিমের বোন ও তার স্বামী কক্সবাজারের রামুর বাসিন্দা হতে পারেন। কয়েকটি নাম ও কিছু তথ্য আমরা জেনেছি। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখনই তা নিশ্চিত করে জানাতে পারছি না। ‘সাধন কুঠির’ এর বাসা ভাড়া নেয়ার সময় জসিম জানিয়েছিল তাদের সঙ্গে থাকা যুবক ও কিশোর তার স্ত্রীর বড় ও ছোট ভাই।
এসপি নুরে আলম মিনা বলেন, বুধবার সকালেই একটি ল্যাপটপ ও কিছু জিনিসপত্র নিয়ে সাধন কুঠির থেকে দুই পুরুষ সদস্য বেরিয়ে যায়। ছায়ানীড়ে নিহতদের মধ্যে তারাও আছে কি না তা যাচাই করে দেখতে হবে। ‘সাধন কুঠির’র মালিক সুভাষ চন্দ্র দাশ জানান, দু’জনের মধ্যে একজন ১৫ বছর বয়সী কিশোর। সুন্দর ও হাসিখুশি ছিল কিশোরটি। অন্যজনের বয়স ২৫-২৬। তার মুখে একটু দাড়ি ছিল।
‘ছায়ানীড়’ এর নিচ তলার বাসাটি গত ফেব্রæয়ারি মাসেই ভাড়া নেয় জঙ্গিরা। তবে ১ মার্চের পর ওই বাসায় আরও লোকজনের আনাগোনা ঘটে বলে জানিয়েছেন এসপি।
এদিকে নামার বাজারের ‘সাধন কুঠির’ থেকে গ্রেপ্তার জঙ্গি দম্পতি জসিম ও আর্জিনার সঙ্গে তিন মাস বয়সী একটি শিশুও ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ছায়ানীড় এর সিঁড়িতে পড়ে থাকা নিহত নারী জঙ্গির লাশের কাছে আরেকটি শিশুর লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসপি মিনা বলেন, সিঁড়িতে নারীর লাশের নিচে শিশুটির লাশ পড়েছিল। তাই শুরুতে আমরা তাকে দেখতে পাইনি। শিশুটির বয়স ছয়-নয় মাস হতে পারে। এই সন্তান ওই মহিলার কি না তা ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে যাচাই করতে হবে। দুটি শিশুই ফুটফুটে ও সুন্দর। এত কম বয়সী শিশু নিয়ে এ ধরনের কাজ করা খুবই কঠিন। এরা কি জঙ্গির সন্তান না ভাড়া করা তা জানতে হবে।
ছায়ানীড় এর ‘জঙ্গি আস্তানা’য় নিহত চার জঙ্গি ও এক শিশুর লাশ বৃহস্পতিবার রাতে বের করে থানায় নেয়া হয়। গতকাল সকালে তা মর্গে পাঠানো হয় বলেও জানান এসপি।
নিহতদের মধ্যে কয়জন আত্মঘাতী বোমায় এবং কতজন গুলিতে মারা গেছে জানতে চাইলে এসপি নুরে আলম মিনা বলেন, সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। ওই নারীর দেহে সুইসাইডাল ভেস্ট বাঁধা ছিল এবং অন্যদের সবার কাছেই উচ্চ ক্ষমতার বোমা ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) রেজাউল মাসুদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) হাবিবুর রহমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ