Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পীরত্বের দ্ব›দ্বই হত্যার কারণ : দুজনের স্বীকারোক্তি

বোচাগঞ্জে পীর ফরহাদসহ জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন

| প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দিনাজপুর অফিস : দিনাজপুরে পীর ফরহাদ হোসেন চৌধুরী ও তার কাজের মেয়ে রুপালী বেগম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে দিনাজপুর পুলিশ। গতকাল (শুক্রবার) দুপুরে হত্যা মামলার মাস্টার মাইন্ড কুড়িগ্রাম থেকে আটক পীর ইসাহাক আলী ও দরবার শরীফের খাদেম সাইদুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। হত্যাকান্ডে মোট ৬ জন অংশগ্রহণ করলেও পুলিশ তদন্তের স্বার্থে তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি। সন্ধ্যায় দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোঃ হামিদুল আলম সাংবাদিকদের মাধ্যমে পীরত্বের দ্ব›েদ্বর কারণেই ফরহাদ হোসেনকে হত্যা করা হয় এবং বাড়িতে থাকার কারণেই কাজের মেয়ে রুপালীকেও হত্যা করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার সভাকক্ষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেয়া প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি জানান, কুড়িগ্রামের পীর ইসাহাক আলীর মুরিদ ছিল ফরহাদ হোসেন চৌধুরী। আধ্যাত্মিক পথে থাকার কারণে গণপ্রতিনিধিত্বমূলক কর্মকান্ডে জড়িত না হওয়ার পরামর্শ দিলেও ইসাহাক ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে হেরে যায়। এছাড়া আদর্শিক ক্ষেত্রে কিছু মতপার্থক্য ছাড়াও অর্থনৈতিক লেনদেন ছিল তাদের দু’জনের মধ্যে। সবচেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল ফরহাদের ভক্ত দিনের পর দিন বাড়তে থাকলে ইসহাক ইর্ষাণি¦ত হয়ে পড়ে। এ কারণেই ইসাহাক ফরহাদকে হত্যার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। পুলিশ সুপার জানান, গত কিছুদিন আগে ফরহাদের পেয়ারা বাগানে কীটনাশক দেয়াকে কেন্দ্র করে খাদেম সাইদুলকে গালমন্দ করেছিল ফরহাদ। সে থেকে সাইদুল দরবার শরীফে যাতায়াত কমিয়ে দেয়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা জানায়, হত্যাকান্ডের আগের দিন কুড়িগ্রামে পীর ইসাহাকের বাসায় সকল প্লান করা হয়। পরদিন ইসাহাক ছাড়া মোট ৫ জন দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জে দৌলা গ্রামে ফরহাদের দরবার শরীফে আসে। তারা বাইরের দরজায় টোকা মারলে রুপালী দরজা খুলে দেয়। ঘাতকদের দুজন রুপালীর মুখ চেপে ধরে স্টোর রুমে নিয়ে যায়। অপর তিনজন ফরহাদের ঘরে গিয়ে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সরাসরি বুকে গুলি করে হত্যা করে। ঘাতকেরা তার হাতেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্যের আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। একইসাথে ব্যবহৃত ৭.৬৫ পিস্তলটি উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
পুলিশ পরদিন সাইদুল ও সমর নামে দুজনকে আটক করে। একইসাথে কুড়িগ্রাম থেকে পীর ইসাহাককে আটক করে। গতকাল তারা দিনাজপুরের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম আহসানুল হকের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্ধ্যার পর যে কোন সময়ে দৌলা গ্রামের কাদিয়ানা মোহাম্মদিয়া দরবার শরীফের ভিতর শয়নকক্ষে ফরহাদ চৌধুরী এবং পার্শ্বেই স্টোর রুমে কাজের মেয়ে রুপালীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাদের দুজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়েও আঘাত করা হয়েছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ