Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষ জনবল ও কারিগরি সমস্যায় মংলার সাইলোর লোডিংয়ে ধীরগতি

২২ হাজার টন গম নিয়ে বন্দরে জাহাজ

| প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মনিরুল ইসলাম দুলু, মংলা থেকে : দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ খাদ্যগুদাম মংলার ‘সাইলোতে সরকারের আমদানী করা গম নিয়ে ভিড়তে পারেনি বিদেশী জাহাজ। সাইলো জেটি এলাকায় নাব্য সংকটের কারণে ২২ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করেই গম খালাস কাজ শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া নতুন নির্মিত এ সাইলোর দক্ষ জনবল না থাকা ও কারিগরি সমস্যার কারণে ধীর গতীতে চলছে লোডিং কাজ। কারিগরি ত্রæটির কারণে গম লোডিংয়ের দুটি পয়েন্টের একটি নামমাত্র সচল থাকলেও অপরটি অচল হয়ে আছে। এ অবস্থায় সাইলো উদ্বোধনের পর প্রথমবারের মতো গম নিয়ে আসা জাহাজের খালাস কাজে বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে। এতে জাহাজ কর্তৃপক্ষ, শিপিং এজেন্ট, স্টীভিডরসসহ সংশ্লিষ্টরা  মোটা অংকের টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আপতকালীন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রায় সাড়ে ৫শ’কোটি টাকা ব্যয়ে মংলার জয়মনিতে ৫০ হাজার মেট্রিকটন খাদ্যশস্য ধারণ ক্ষমতার অত্যাধুনিক এ সাইলোটি নির্মিত হয়। গত বছরের ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এ সাইলোর উদ্বোধন করেন। এ সময় লাইটার যোগে পরীক্ষামূলক ৪শ’ ৬ টন গম গুদামজাত করা হয়। এ সাইলোর জন্য সরকারিভাবে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত গমের প্রথম চালান নিয়ে গত ৯ মার্চ মংলা বন্দরে ভিড়েছে জাহাজ। রাশিয়া থেকে আসা গম বোঝাই এমভি ‘নর্ডলেক্স’ নামের পানামার পতাকাবাহী এ জাহাজটি বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবাড়িয়া বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করছে। মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় গম লোডিং শুরু হলেও ধীরগতি নিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সাইলো জেটির দুটি লোড পয়েন্টের একটি অচল হয়ে আছে। অপরটি চললেও কিছুক্ষণ পর পর বন্ধ হয়ে থাকছে। দক্ষ জনবল না থাকায় এ অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
গম নিয়ে আসা বিদেশী জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট সেভেস সীর্স-এর খুলনাস্থ ম্যানেজার মোঃ শামিম হোসেন জানান, জাহাজটি ২২ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে বন্দরে আসে। এ গম খালাস করতে ৪ থেকে ৫ দিন সময় লাগতে পারে। কিন্তু সাইলোর লেডিং পয়েন্টের ধীর গতিতে বিদেশী জাহাজটি নির্ধারিত সময় বন্দর ত্যাগ করতে পারছে না।
এ জাহাজের শ্রমিক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজিং পার্টনার এস এম মোস্তাক জানান, ম্যাদার ভ্যাসেল থেকে লাইটারে দ্রæতগতিতে গম খালাস করা হলেও সাইলোর কারিগরি ত্রæটির কারণে লোডিংয়ে ধীরগতি চলছে। তিনি জানান, অত্যাধুনিক এ সাইলোর প্রযুক্তি অনুযায়ী চব্বিশ ঘন্টায় ২ হাজার মেট্রিকটন গম লোডিং করার কথা থাকলেও তা পেরে উঠছে না কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিকাল ৪ টা থেকে বুধবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ১৪ ঘন্টায় মাত্র ৪শ’২৬ টন গম লোডিং করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গম নিয়ে একাধিক লাইটার সাইলো জেটির লেডিং পয়েন্টে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু লোডিংয়ের ধীর গতিতে নির্ধারিত সময় খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এ জন্য তিনি সাইলোর কারিগরি ত্রæটি ও দক্ষ জনবল সংকটকে দায়ী করেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে গমবাহী ম্যাদার ভ্যালেস কর্তৃপক্ষ, শিপিং এজেন্ট ও স্টীভিডরস এবং লাইটার কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের অর্থিক ক্ষতি গুনতে হবে।
এ বিষয়ে সাইলো’র ইনডোর বিভাগের প্রকৌশলী অরুপ জানান, সাইলো’র লোডিং পয়েন্টে যথা নিয়মে কাজ চলছে। কোন প্রকার ত্রæটির থাকার কথা অস্বীকার করে তিনি আউটডোর বিভাগে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে মংলা সহকারী উপ-খাদ্য পরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম জানান, তারা শুধু আমদানীকৃত গমের গুণগতমান পরীক্ষা করেই জাহাজ থেকে খালাস ও লোডিংয়ের অনুমতি প্রদান করেছেন। কিন্তু সাইলোর অভ্যন্তরের ত্রæটসহ অন্য কোন বিষয়ে অবগত নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ