Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১২শ’ কোটি টাকার বিষয়ে আপিলের রায় আজ

তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময় বাজেয়াপ্তকৃত

| প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ওয়ান-ইলেভেনের পর সেনা সমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে নেয়া ১২ শ’ কোটি টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে আপিলের রায় আজ (বৃহস্পতিবার)।
গতকাল বুধবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন। আদালতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে শুনানি করেন আহসানুল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন এম আমীর-উল ইসলাম। এর আগে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ফেরত দিতে ২০১০ ও ২০১১ সালে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব আদেশের বিরুদ্ধে একসঙ্গে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদেশের দিন ধার্য করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত একটি গোয়েন্দা সংস্থা এবং তৎকালীন টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্টস কর্মকর্তারা প্রায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এক হাজার ২৩২ কোটি টাকা আদায় করেন। এ টাকা দুই শতাধিক পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের হিসাবে জমা হয়। ২০০৭ সালের ১৯ এপ্রিল জেমস ফিনলে কোম্পানির কাছ থেকে ১১৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা আদায় করে। ওই টাকা ১৬টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের ‘কনসোলিটেড ফান্ডে’ জমা দেয়া হয়। এর পর ২২ এপ্রিল একই প্রতিষ্ঠানের নামে আরো ১৫টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ১২০ কোটি ২৪ লাখ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হয়। একই প্রক্রিয়ায় পর্যায়ক্রমে দেড় বছর ধরে বিভিন্ন তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের সংশ্লিষ্ট হিসাবে টাকা জমা হয়েছে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় ছাড়াও ‘অজানা’ উল্লেখ করেও সেনা-সমর্থিত সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ওই ব্যাংক হিসাবে চার দফায় প্রায় ৪৭ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যমুনা গ্রæপের চেয়ারম্যানের ৩০ কোটি, এমজিএইচ গ্রæপের ২৪ কোটি, কাজী সালিমুল হক কামালের কাছ থেকে ২০ কোটি, কবির স্টিল মিলস লিমিটেডের সাত কোটি, ব্যবসায়ী নুর আলীর ৪০ কোটি ৫০ লাখ, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের ৩২ কোটি ৫০ লাখ, সাগুফতা হাউজিংয়ের দুই কোটি ৫০ লাখ, হোসাফ গ্রæপ ১৫ কোটি, পারটেক্স গ্রæপের ১৫ কোটি, স্বদেশ প্রপ্রার্টিজের নয় কোটি, ইসলাম গ্রæপের ৩৫ কোটি, কনকর্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আট কোটি, ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের ১৭ কোটি, আবু সুফিয়ানের ১৪ কোটি, শওকত আলী চৌধুরীর ছয় কোটি, আশিয়ান সিটির এক কোটি, পিংক সিটির ছয় কোটি ৪১ লাখ, বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ১৯ কোটি ৪৫ লাখ, লুৎফুজ্জামান বাবরের ১৫ কোটি, ওয়াকিল আহমেদের ১৬ কোটি, এবি ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ৩২ কোটি, গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের ২০ কোটি ৪১ লাখ, এলিট পেইন্টের ২৫ কোটি ৪৪ লাখ, এবি ব্যাংকের ১৯০ কোটি, কনকর্ড রিয়েল এস্টেটের সাত কোটি, জনৈক মালিকের কাছ থেকে চার কোটি ও ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টুর দুই কোটি ২০ লাখ টাকা নেয়া হয়। এ ছাড়া জনশক্তি রপ্তানিকারক ও ইউনিক গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুর আলীর কাছ থেকে তৎকালীন তত্ত¡াবধায়ক সরকার ৪০ কোটি ৫০ লাখ টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ আছে। ২০১০ সালে জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিল তত্ত¡াবধায়ক আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকা, যা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ