পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : চট্টগ্রামের পটিয়ায় শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষিকার হাত-পা ভেঙে দেয়ার ঘটনায় জড়িত বখাটের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং আহত শিক্ষিকার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিতের নির্দেশ জেলা প্রশাসককে দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গতকাল বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করা অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান। পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়নের পূর্ব ডেঙ্গামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে সহকারী শিক্ষিকা মিসফা সুলতানাকে (২৫) মঙ্গলবার খস্তা দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয় এক বখাটে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে তাকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হামলার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীও অবগত বলে জানায় মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে হামলাকারী আহসান উল্লাহ টুটুলকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। টুটুল একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। আহত শিক্ষিকা একই উপজেলার নাইখাইন গ্রামের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুর মোহাম্মদের একমাত্র মেয়ে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ওই শিক্ষিকার সুচিকিৎসার জন্য বিভাগীয় এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান নজরুল ইসলাম। এছাড়া তিনি নিজেও হাসপাতাল পরিচালক ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে সুচিকিৎসা ও হামলাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, আমি ডিসিকে বলেছি, আইনগতভাবে বখাটের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে যা যা করার তা করুন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছি, তাদের বলেছি আহত শিক্ষকের যেন স্পেশাল কেয়ার নেয়া হয়। আমি চট্টগ্রামের ডিসি (জেলা প্রশাসক) ও উপ-পরিচালককে বলেছি, এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ অ্যাটেনশন দিতে হবে। তাদের দু’জনকেই হাসপাতালে গিয়ে শিক্ষিকাকে দেখতে বলেছি। আরও কোনো সহায়তা করার থাকলে আমরা করব।
পটিয়ায় সহ¯্রাধিক শিক্ষকের মানববন্ধন
একেএম নুর হোসেন, পটিয়া থেকে : চট্টগ্রামের পটিয়ার দক্ষিণ ভূর্ষি ইউপির পূর্ব ডেঙ্গাপাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মিসফাক সুলতানা লিজাকে বখাটে আহসান উল্লাহ টুটুল কর্তৃক হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে গতকাল (বুধবার) বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের রাজপথ উত্তাল হয়ে উঠে। সহ¯্রাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা পটিয়া উপজেলা পরিষদের সম্মুখে মহাসড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে। লিজাকে হত্যা চেষ্টার দায়ে লিজার পিতা মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
পুলিশের রেকর্ডকৃত দুর্বল ধারার এ মামলাটিতে আসামি সহজে ছাড়া পেয়ে যাবেন বলে পটিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এডভোকেট জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে রেকর্ড করা উচিত ছিল। অথবা ধর্তব্য অপরাধের মধ্যে ৩২৬ ধারা সংযোজনের প্রয়োজন ছিল। গতকাল (বুধবার) বখাটে আহসান উল্লাহকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত না থাকায় আজ বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানি করা হবে বলে বেঞ্চ সহকারী জানান। আহত শিক্ষিকা লিজা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নং ওয়ার্ডে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তার পিতা নুর মোহাম্মদ জানিয়েছেন, গতকাল সকালে দুই হাত, পিঠ ও ঘাড়ের প্রচÐ ব্যথায় সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে আসে। মিসফাক সুলতানা লিজা ২০১১ সালে প্রাথমিক শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পায়। ঐ সময় সে পূর্ব ডেঙ্গা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করে। তার বাবা নুর মোহাম্মদ একজন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। তাদের পরিবারে দুই ভাই। লিজা পরিবারের একমাত্র মেয়ে। তার বাবা নুর মোহাম্মদ জানায়, লিজার ইতিমধ্যে বিবাহের কথাবার্তা চলছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বখাটে এ নির্মম দুর্ঘটনা ঘটিয়ে দিয়েছে।
বখাটে আহসান উল্লাহ টুটুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন মোহছেনা মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাজমুল নাহার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।