পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনকে সামনে রেখে জমে ওঠেছে ভোটযুদ্ধ। ঘরে-বাইরে, অফিস-আদালত, শিক্ষাঙ্গন, হোটেল-রেস্তোরাঁ সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছেছে সিটি নির্বাচন। কুমিল্লা আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে দলীয় প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে মনোনয়ন দেয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতাদের জোর তৎপরতা শুরু হয়। ডজনে ডজন কেন্দ্রীয় নেতা কুমিল্লায় আসছেন বসছেন সিদ্ধান্ত পরামর্শ শুনাচ্ছেন। আর দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে না থাকার হুশিয়ারি দিচ্ছেন কুমিল্লা আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাদের। কেন্দ্রীয় নেতারা সাফ বলে দিচ্ছেন সীমার ভোটযুদ্ধের ময়দানে দলের সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নৌকা প্রতীকের ভোট নিয়ে দলের কুমিল্লার নেতাদের কোনো রকম লুকোচুরি ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী সমর্থকদের ভরসায় অত্যন্ত কৌশলী হয়ে এগুচ্ছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দিক নির্দেশনা এবং স্থানীয় নেতাদের সমন্বয়ে চলছে সাক্কুর নির্বাচন পরিচালনার কর্মকৌশল। ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময়ে মাঠে নামতেই তাঁর পিছু নিচ্ছে শতশত সাধারণ মানুষ। সাক্কুর ভাষায়, এরা সবাই তৃণমূলের ভোটার। তৃণমূল ভোটরদের ওপর তাঁর আস্থা রয়েছে। তৃণমূলই তাঁর বলভরসা।
আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার পক্ষে দলের কুমিল্লার নেতা-কর্মী সমর্থকদের মাঠে রাখার উদ্যোগ সফল হবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে কয়েক দফা কুমিল্লায় এসে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান দিয়েছেন নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকদের কোনো ধরনের নিষ্ক্রিয়তা, লুকোচুরি, ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের গণতন্ত্রের প্রতীক নৌকার প্রতি বিশ্বাস-ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটাতে হবে ভোটের মাঠে। ইতিমধ্যে কয়েক দফায় কুসিক নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে গঠিত টিমের প্রধান সমন্বয়ক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, দলের উপদেষ্টা মÐলীর সভাপতি কাজী রশিদুল আলম, দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ড. মেরিনা জাহান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সাইফুজ্জামান শিখর, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাইফুর রহমান সোহাগ, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্লিক, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলসহ দুই ডজনের বেশি কেন্দ্রীয় নেতা সীমার ভোটযুদ্ধে শামিল হয়ে কুমিল্লা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা দিকনির্দেশনা পরামর্শ দেবে আর কুমিল্লার নেতাদেরকে তা মেনে একই প্লাটফরমে থেকে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। সব মিলে নির্বাচনের দিনক্ষণ যতোই ঘনিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কুমিল্লায় পদচারণা সীমার ভোটযুদ্ধে বিভাজন আওয়ামী লীগে ঐক্যের সুর তুলেছে।
এ প্রসঙ্গে আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন ‘কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই দিক থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা কুমিল্লায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোমালিন্য, রাগ অভিমানের বিষয়টি অনুধাবন করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার যে উদ্যোগ নিয়ে মাঠে নেমেছেন তা এখানকার নেতাকর্মীসহ কুমিল্লার আপামর মানুষের কাছে একটি মাইলফলক উদ্যোগ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। আমি মনে সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লায় দলের এই ঐক্য সবসময় অটুট থাকবে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দিকনির্দেশনায় সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ পথচলা ধরে ইতিমধ্যে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমার বিশ্বাস নৌকার এই গণজোয়ারের মধ্যদিয়ে নগরীর উন্নয়নের স্বার্থে নগরবাসী তাদের রায়ে এবারে পরিবর্তন আনবে।’
অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ভোটের মাঠে বেশ বুঝেশুনেই পা ফেলছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে শক্তমাপের প্রার্থী হিসাব করেই বিএনপি তাদের নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনার ছক তৈরি করেছেন। আজ প্রতীক বরাদ্দের পর পুরোদমে প্রচারণায় নামবে বিএনপি। দলের মধ্যে বিভাজন বৈরিতা নেই বলেই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা কুমিল্লাতে খুব একটা পা ফেলছেন না। সেইদিক থেকে বিএনপি বেশ স্বস্তিতেই তাদের কর্মকৌশল নিয়ে এগুচ্ছেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা দলের স্থানীয় নেতাদের সব ধরনের দিক নির্দেশনা পরামর্শ দিচ্ছেন। ঢাকায় বসেই মনিটরিং চলছে সাক্কুর নির্বাচনী পথচলার। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় ও সেখানে আওয়ামী লীগের কলাকৌশলের বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে কুমিল্লায় দেয়া হচ্ছে দিক-নির্দেশনা। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করছেন কুমিল্লায় সাবেক মেয়র সাক্কুর তৃণমূলে যে জনপ্রিয়তা রয়েছে তা ধরে রাখতে পারলেই ভোটের মাঠে ইতিবাচক সংকেত দেখা দেবে। কেননা সাক্কুর প্রচারণায় দিন দিন ভিন্নমাত্রার দৃশ্যপট তৈরি হচ্ছে।
তৃণমূলে নিজের অবস্থান প্রসঙ্গে বিএনপি প্রার্থী সিটির সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা আর দীর্ঘসময় জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুবাধে তৃণমূলের মানুষদের সাথে আমার একটা আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আর এ সম্পর্কে কোনোভাবে কেউই দেয়াল তুলতে পারবে না। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা যেমন আমার জন্য যে কোনো ব্যাপারে প্রাণপণ দিয়ে লড়তে প্রস্তুত রয়েছে, তেমনি তৃণমূলের সাধারণ মানুষ আমার পাশে থাকবে। কেননা তাদের সুখে-দুখে আমি পাশে ছিলাম। আজকে নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাঠে তৃণমূল মানুষের দোয়া-আশীর্বাদ ভালোবাসা আমার জন্য বল-ভরসা হয়ে উঠেছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।