পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিদেশ থেকে আমদানি নয়, দেশেই স্মার্টকার্ড তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কারিগরি কমিটি। সাত সদস্যের এই কমিটির প্রধান ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও কমিটি সদস্য বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ইতোমধ্যে ফ্রান্স ও চীনে গিয়ে কারখানা পরিদর্শন করেছেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) নমুনা স্মার্টকার্ড পরীক্ষা করে প্রতিবেদন সরকারকে দিয়েছে এ কমিটি।
তাদের সুপারিশে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে স্মার্টকার্ড আমদানি না করে সার্বিক নিরাপত্তা ও কার্ডের মান নিশ্চিত করে যৌক্তিক হারে মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে বিএমটিএফের মতো দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কার্ড কেনা যেতে পারে। স্মার্টকার্ড প্রস্তুত ও বিতরণের লক্ষ্যে ফ্রান্সের অবার্থুর টেকনোলজিস নামে এক কোম্পানির সঙ্গে ২০১৪ সালে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার চুক্তি করে ইসি। তাদের সঙ্গে চুক্তি ছিল ৯ কোটি কার্ডের। দফায় দফায় পিছিয়ে সেই কার্ড বিতরণ শুরু হয় ২০১৬ সালে। এর মধ্যে আরো সোয়া কোটি ভোটার যুক্ত হয়েছেন তালিকায় আর মৃত্যু হওয়ায় তালিকা থেকেও বাদ গেছে কয়েক লাখ নাম। আঠারোর কম বয়সীদের তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়াও চলমান।
ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের তো বসে থাকলে চলবে না। ভোটার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্মার্টকার্ড দেয়ার প্রস্তুতিও রাখতে হবে। বিষয়টি মাথায় রেখেই দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে একই মানের স্মার্টকার্ড তৈরির প্রস্তুাব দিয়েছে এ কমিটি। তিনি জানান, কারিগরি কমিটি গত ফেব্রæয়ারিতে যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তা এখন যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। ৯ কোটির বাইরে আরো দেড় কোটি মানুষের হাতে স্মার্টকার্ড দেয়ার জন্যে সরকারি অর্থায়নের বিষয় রয়েছে। ইসিতে প্রস্তাব তোলার পর তা অনুমোদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
কমিটির সদস্যরা বলছেন, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত বিএমটিএফ ইতোমধ্যে ইভিএম, ভেহিক্যাল রেজিস্ট্রেশন প্লেট, ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, আরএফআইডি ট্যাগ তৈরি করেছে। এ ছাড়া কারা কর্তৃপক্ষের ওয়েব বেজড প্রিজন ভ্যান, বিএডিসির মোবাইল সিড টেস্টিং ল্যাবও তারা বানিয়েছে। মান বজায় রেখে সেখানে স্মার্টকার্ডও তৈরি করা সম্ভব।
বুয়েটের অধ্যাপক মাহফুজুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, ফ্রান্সের টেকনোলজি ব্যবহার করে এ প্রকল্প চিরদিন চালানো যাবে না। ভোটার বাড়ার সঙ্গে চাহিদা বাড়ছে, নিজেদেরও তৈরি করতে হবে। বিএমএটিএফ ইতোমধ্যে নমুনা উপস্থাপন করেছে। তারা যাচাই করে দেখেছেন, দেশে উৎপাদন করলেও বিদ্যমান স্মার্টকার্ডের মতোই সব ধরনের মান রক্ষা করা সম্ভব। এ সংক্রান্ত দ্বিতীয় একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে, এখন শুধু সিদ্ধান্তের বিষয়Ñ কখন থেকে শুরু হবে। কারিগরি কমিটির সদস্যরা জানান, বিএমটিএফের নমুনা কার্ডের বেন্ডিং টেস্ট, সিকিউরিটি ফিচারস, ইউভি-রে টেস্ট, মাইক্রো টেস্ট, পার্সোনালাইজেশন এবং ডাইমেনশন ও পজিশনিং টেস্ট করেছেন তারা।
উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্রে তিন স্তরে মোট ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকছে। এ ছাড়া স্মার্ট কার্ডের মধ্যে যে মাইক্রোচিপ দেয়া থাকবে, তাতে একজন নাগরিকের সব তথ্য পাওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে ২৫টি কাজে ব্যবহার করা যাবে স্মার্ট কার্ড। সরকারি সব অনলাইন সুবিধা, টিআইএন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, সম্পত্তি কেনাবেচা, ব্যাংক হিসাব খোলা, ব্যাংক ঋণ, সরকারি ভাতা উত্তোলন, বিআইএন, শেয়ার-বিও অ্যাকাউন্ট, ট্রেড লাইসেন্স, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বীমা স্কিম, বিয়ের রেজিস্ট্রেশন, ই-পাসপোর্ট, ই-গভর্ন্যান্স, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল সংযোগ, হেলথ কার্ড, ই-ক্যাশ, ব্যাংক লেনদেন, শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রভৃতি কাজে ব্যবহার করা যাবে স্মার্ট কার্ড।
২০১১ সালের ২০ জুলাই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সড অ্যাকসেস টু সার্ভিস প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি সই করে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ফরাসি কোম্পানি অবার্থুর টেকনোলজির সঙ্গে ৭৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকার চুক্তি হয়। কাজের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। পরে মেয়াদ দেড় বছর বাড়ানো হয়। বাকি কার্ডগুলো দেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) মাধ্যমে তৈরি করা হতে পারে। বেশ কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন নমুনা ছাপিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। দেশি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কার্ড ছাপানোর আগে ২০১৪ সালে ও পরে যারা ভোটার হয়েছেন (প্রায় সোয়া কোটি) তাদের আপাতত সাধারণ কাগজে লেমিনেশন করা এনআইডি দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।