Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনা দোষে ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখল দুই গৃহবধূকে

মাদারীপুরে পুলিশের তান্ডব

| প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : বিনা দোষে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখলেন দুই দুধের শিশুর দুই মাকে। একই ঘটনায় সদর থানা পুলিশ ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে ভুক্তভোগী ওই পরিবারের বাড়িতে। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার ল²ীগঞ্জ এলাকায়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে সচেতন মহল।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, রবিবার সকাল ১০টার দিকে মাদারীপুর সদর থানায় বিবদমান একটি জমির তদন্তকাজে যান থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি বিবদমান জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলাসংক্রান্ত বিষয় জানতে চান। তবে মামলা সম্পর্কে পনির কিছু জানে না বলে জানান। এতে এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে থাপ্পড় দেয়। একপর্যায়ে পনির পুলিশের সাথে বাগি¦তÐায় জড়িয়ে পড়ে। এতে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাহাতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাÐব চালায়। পুলিশ পনির ও তার বড় ভাই-বোনের ঘরে মূল্যবান আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসনসহ রান্নার চুলাও ভেঙে ফেলে।
এ সময় পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আকলিমা বেগমকে সকাল ১১টার দিকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। তখন ঝুনু বেগমের তিন মাসের শিশু ও আকলিমার ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করে। পরে রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় ওই শিশুদের বাইরে রেখে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে ছিল দুই মা।
এ ব্যাপারে মা আকলিমা বলেন, আমাকে পুরুষ পুলিশ হাত ধরে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আমার দুধের বাচ্চার কথা বললেও তারা বাজে ভাষায় গালাগাল করে মাদক ও হত্যা মামলায় চালান দেয়ার কথা বলেন। পনিরের বড় বোন হামিদা বেগম জানান, আমাদের বাড়িতে পুলিশ ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশের তান্ডবে আমার ঘরের আলমারিতে থাকা ৬০ হাজার টাকা খোয়া যায়। পনিরের মা আলেকজান বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ‘বিনা দোষে আমার ছেলেকে মারধর করেছে পুলিশ। আমাদের রান্না করার চুলাটাও ভেঙে ফেলেছে। এ ঘটনা ’৭১ সালের পাক সেনাদের তান্ডবকেও হার মানায়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করি।’
তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন জানান, আমি ওই ঘটনার কিছুই জানি না। জেনেশুনে নিউজ করবেন।’
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে ক্ষতিগ্রস্তরা যদি অভিযোগ দেয়, তাহলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিশুর মায়েদের আটকে রাখা ঠিক হয়নি। আমি বিষয়টির উপযুক্ত ব্যবস্থা  নেবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ