Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তলে তলে বিএনপি শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে : ওবায়দুল কাদের

প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫৮ পিএম, ১২ মার্চ, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগেই আলোচনা বিষয় জানতে চাওয়ায় বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বন্ধুত্বে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো ভারত যাননি। আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও এখনো হয়নি। এরমধ্যে বিএনপি নতুন নালিশের ভাঙা রেকর্ড বাঁজানো শুরু করেছে। বিএনপি তলে তলে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি উপরে উপরে বলে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে আসবে না, আসলে তলে তলে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপি পানি ঘোলা করে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় শ্রমিক লীগের এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি হলে জনগণের স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে হবে। জীবন থাকতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জণগণের স্বার্থের বাইরে কাজ করবেন না। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সুসম্পর্ক দেখে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে দাবি করে কাদের বলেন, ভারতের মোদি সরকারের নির্বাচনের সময়, মোদি বিজয়ী হওয়ার আগেই বিএনপি নেতারা ফুল আর মিষ্টি নিয়ে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বসেছিলেন। নরেন্দ্র মোদি আসলে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন।
আমেরিকার নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মনে করেছিল হিলারি ক্ষমতায় আসবেন। তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন। সেসময় বাংলাদেশের সব মিষ্টি বিক্রি হয়ে গেছে। ফুলের দোকানে ফুল নেই। কি আনন্দ আকাশে-বাতাসে। এই আনন্দ কী আর রইল? বিনা মেঘে বজ্রপাত। ক্ষমতায় এলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতার জন্য তাকিয়ে থাকার অভ্যাস বিএনপির আছে,  শেখ হাসিনার নেই, আওয়ামী লীগের নেই।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে কাদের বলেন, নির্বাচনের দেড় বছর বাকি আছে। বিএনপিকে বলব, এসব নালিশের ভাঙা রেকর্ড বিদেশিদের দোয়ারে ধরনা দেয়া বন্ধ করুন। সবাই জানে শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। বিএনপি উপরে উপরে বলছে নির্বাচনে যাবে না। তবে, তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি বিএনপি শুরু করে দিয়েছে। গাধা জল খায় ঘোলা করে। বিএনপিও পানিটা  ঘোলা করে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে।
তিনি বলেন, কোনো বিদেশি শক্তি শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না। ক্ষমতা  থেকে সরাতে পারবে জনগণ। ক্ষমতার জন্য আমাদের ভারত প্রীতিও নেই, ভারত ভীতিও নেই। শুধু দুঃসময়ের বন্ধু। এই বন্ধুত্ব থাকবে, ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই। এই বন্ধুত্ব থাকবে জনগণের স্বার্থে।
বিএনপি ক্ষমতার জন্য বিদেশের দিকে তাকিয়ে থাকে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ক্ষমতার জন্য বিদেশের দিকে তাকিয়ে থাকার রেকর্ড বিএনপির আছে, আওয়ামী লীগের  নেই। এসব নালিশের ভাঙা রেকর্ড ও বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়া বন্ধ করুন।
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের, শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি পাঁচটি সিটি নির্বাচনে এক সঙ্গে বিজয় লাভ করেছে। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন  রোল মডেল হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মতো নির্বাচন হবে। দেড় বছর আগে বলছি দেখেন, কথায় আর কাজে মিল থাকে কি না।
তিনি বলেন, আজিজ মার্কা নির্বাচন বাংলাদেশ আর হবে না। তাতে শেখ হাসিনা সহযোগিতা করবে না। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। দেড় বছর আগে বলে যাচ্ছি, দেখেন কথা আর কাজের মিল থাকে কি না?
জাতীয় শ্রমিক লীগের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের এই আলোচনা সভায় বাস শ্রমিকদের ধর্মঘটের কথা উল্লেখ করে শ্রমিক নেতাদের সমালোচনাও করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের। তিনি বলেন, শ্রমিক নয় অথচ শ্রমিকদের নেতা। নেতাগিরি করলে আগে শ্রমিক হতে হবে। পরিবহনেও অনেক নেতা আছে যারা শ্রমিক নয়। তাদের অনেকেই আবার পরিবহন শ্রমিকদের  নেতৃত্ব দেন। যারা জনগণকে জিম্মি করে ধর্মঘট করে। তারা শ্রমিকের কতটা আপন সেটা ভেবে  দেখার সময় এসেছে। শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, গরিব মানুষদের আপনারা বিভ্রান্ত করবেন না।
বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ধৈর্য ধরুন, কারো উস্কানিতে বিভ্রান্ত হবেন না। অহেতুক বিভ্রান্তির ফাঁদে পা দেবেন না। আমাদের দেশের সম্ভাবনাময় গার্মেন্ট শিল্প নিয়েও দেশি বিদেশি চক্রান্ত আছে।  
নামের সঙ্গে ‘আওয়ামী’, ‘বঙ্গবন্ধু’, ‘বঙ্গমাতা’ ‘লীগ’ জুড়ে দিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠন বন্ধ করার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এই যে রাজনীতির নামে কিছু কিছু দোকান খোলা হয়েছে। এই দোকানগুলো বন্ধ করতে হবে। আজও রাস্তায় দেখলাম আওয়ামী প্রচার লীগ, আওয়ামী ওলামা লীগ, প্রজন্ম লীগ। এই যে দোকান এদের স্বীকৃতি দেবো না। তিনি বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সহযোগী ও ভ্রাতৃপতিম সংগঠনের বাইরে অন্য কোনো সংগঠনের স্বীকৃতি দেবো না। এসব স্বীকৃত সংগঠনের বাইরে কেউ বঙ্গবন্ধু, নেত্রী, জয় ও দলের  নেতাদের ছবি ব্যবহার করলে তাদের প্রতিরোধ করুন।
এই সকল ভ‚ঁইফোড় সংগঠন বানিয়ে দিবস ভিক্তিক চাঁদাবাজি করা হয় জানিয়ে কাদের বলেন, এই সব দোকান ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। এক একটা দিবস আসে আর এইসব দোকানের নামে চাঁদাবাজি হয়।
ব্যাঙ্গের ছাতার মতো সংগঠন দাঁড়িয়ে গেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এই সংখ্যা এখন আর হিসেব নেই, ব্যাঙের ছাতার মতো গঁজিয়ে গেছে। এইসব সংগঠন দেশের জনগণের কাছে আমাদের ভাবমর্যাদা নষ্ট করছে, দলের সুনাম নষ্ট করছে।
আওয়ামী লীগের কোনো নেতা এই সকল সংগঠনে গেলে তাদের কাভারেজ না দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সকল সংগঠনের হেডকোয়ার্টার কোথায়, প্লিজ আসুন সবাই মিলে বন্ধ করি। আওয়ামী লীগের কোনো নেতা এই সকল সংগঠনের অতিথি হলে প্লিজ আপনারা কাভারেজ দেবেন না। টিভিতে দেখানো আর পত্রিকায় নাম আনার জন্যই এই সকল  দোকান।
জাতীয় শ্রমিক লীগের কমিটি পুনর্গঠনের আহŸান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, আমাদেরকে অক্টোবর পর্যন্ত সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা একটা স্মার্ট ও আধুনিক আওয়ামী লীগ নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চাই, এটা আমাদের অঙ্গীকার। আমরা আমাদের প্রতিদ্ব›দ্বীকে হালকাভাবে দেখতে চাই না। এটা মাথা রেখেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে চাই।
শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সংগঠনের কার্যকরি সভাপতি ফজলুর হক মন্টু, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম।



 

Show all comments
  • Nur-Muhammad ১৩ মার্চ, ২০১৭, ৭:১৬ এএম says : 1
    জনগণের ভোটের কাছে কোন শক্তিই পারে না। জনগণকে ভয় পান বিধায়, জনগণকে ভোটারাধিকার হতে বন্ঞ্চিত করে শুধু .............. সমর্থনে ক্ষমতায় ঠিকে আছেন। অথচ অন্যকে এই দোষের অপবাদ দিচ্ছেন। এটা যেন ..........। আজিজ মার্কা নির্বাচনের কথা বলছেন। কিন্ত রকিব মার্কা নির্বাচনের কথা বলতে পারলেন না। আজিজ মার্কা নির্বাচন ছিল এই দেশে জনগণের ভোটের উপর তুফান। এক মাসের মধ্যে জনগণ এই তুফান হতে রক্ষা পায়। ফলে জনগণ ভোটাধিকার ফিরে পায়। অপরপক্ষে, রকিব মার্কা নির্বাচন জনগণের ভোটের উপর হলো মহাপ্লাবন। রকিবের প্লাবনে দেশের গণতন্র ধ্বংস হয়ে গেল। একটা ভোটের জন্য জনগণ তির্থের কাকের মত চেয়ে আছে, কিন্ত এটা আপনাদের চুক্ষ ও কর্ণ গোচরে লাগছে না। ক্ষমতার লোভে আপনারা অন্ধ হয়ে গেছেন। গণতন্র ধ্বংস করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপরীত কাজ করছেন। জনগণের মনের কথা বুজুন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন, জন কতারে সামিল হোন।
    Total Reply(0) Reply
  • Raju Hossain ১৩ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩১ এএম says : 1
    Uni bnp er pocar shompadok bote
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Kaiyoum ১৩ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩২ এএম says : 1
    আপনার মখে এই কতা মানায় না
    Total Reply(0) Reply
  • Jubraj Mostafa ১৩ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩৩ এএম says : 1
    এটা ভূল
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ