পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : গলদা ও বাগদা চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ যেনো অপ্রতিরোধ্য! অসাধু পুশ চক্রের সাথে দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক চুক্তিতে মাসোহারা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে থানা, টহল ও গোয়েন্দা পুলিশ, উপজেলা মৎস্য অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে। র্যাব-পুলিশ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হলেও, প্রায় সময়েই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকেন মাসোহারার চুক্তিকারীরা। ফলে অসাধু পুশ চক্রের মূল হোতারা সব সময়েই থেকে যায় অধরা। তাদের অপতৎপরতার কারণে সৎ ব্যবসায়ীরাও পড়ছে বেকায়দায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় চিংড়িতে সিরিঞ্জ এর মাধ্যমে ফিটকিরির পানি, ভাতের মাড়, সাগু, এরারুট, লোহা বা সীসার গুলি, মার্বেল, ম্যাজিক বল, জেলিসহ বিভিন্ন ধরনের পদার্থ পুশ করছে। এরমধ্যে জেলি, সাগু, পাউডার ও সাদা লোহা জাতীয় দ্রব্য গলদা চিংড়িতে বেশি পুশ করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে ওজন বাড়াতে চিংড়ি পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। এতে চিংড়ির গুণগত মান ও রফতানী যোগ্যতা হারায়। একই সাথে পুশকৃত অপদ্রব্য মানব দেহের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিংড়ি ব্যবসায়ী জানান, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা বাজারের প্রায় দুই শত মাছ ঘর থেকে প্রতি মাসে পুলিশ ও মৎস্য অফিসে টাকা দিতে হয়। তা না হলে বিভিন্ন অযুহাতে আড়ৎ বন্ধের হুমকি দেয়। রাস্তায় মাছের গাড়ি আটকে দেয়া হয়। এ টাকা উঠাতে মাঝে-মধ্যে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা হয়। এছাড়া খুলনা মহানগরীর নতুন বাজারে ছোট-বড় অন্তত ২৮০টি ও পূর্ব রূপসায় ১৮০টি চিংড়ি ডিপো রয়েছে। এসব ডিপোগুলোতে নিয়মিত অপদ্রব্য পুশ হয়ে থাকে বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে খুলনার এসব ডিপো মালিকরা এসো তৃণমূল পর্যায়ের খুচরা ব্যবসায়ীদের (ফঁড়িয়া) দোষারোপ করেন।
রূপসা চিংড়ি বণিক সমিতির একাধিক নেতা জানান, বিভিন্ন চিংড়ি ডিপো ও চাতাল মালিক চিংড়ির ওজন বাড়ানোর জন্য অপদ্রব্য পুশ করে। অভিযান চালালে তখন মৎস্য ব্যবসায়ী পুশ করা চিংড়ি চট্টগ্রাম, ক‚লের চর, চাঁদপুর, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, ফেনিসহ বিভিন্ন স্থানে পিকআপ ও ট্রাকে নিয়ে ওইসব এলাকার মৎস্য ডিপো ও মাছ কোম্পানিতে বিক্রি করে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে এসব চিংড়ি খুলনার বাইরে বিক্রি করতে না পারে এ ব্যাপারে মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ দপ্তরের অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে পুশ বন্ধ হবে; এ সেক্টরকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ খুলনার উপ-পরিচালক প্রফুল কুমার সরকার জানান, অভিযান নিয়মিতভাবেই চলছে, চলবে। অভিযান চালানোর চেয়ে সচেতনতা খুব বেশি জরুরি। মৎস্য অফিসের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী অদ্রব্য পুশকারীদের সহযোগিতা করতে পারে না।
খুলনা সিভিল সার্জন এসএম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চিংড়িতে মেশানো অপদ্রব্য স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর। পুশ চিংড়ি খেলে লিভার, কিডনি ড্যামেজসহ রোগাক্রান্ত হয়ে যেতে পারে।
র্যাব-৬ স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, পুশে জড়িতদের বিরুদ্ধে র্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। তাদেরকে ধরে জেল-জরিমানা করে মাছ বিনষ্ট করেছি। পুশ চক্রের সাথে প্রশাসন জড়িত থাকার অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে র্যাব-৬ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কার্পন্য করবে না।
খুলনা ফ্রোজেন ফুডস্ এক্সপোর্ট লিমিটেডের পরিচালক তরিকুল ইসলাম জহির বলেন, চিংড়িতে যদি কৃত্রিম পদার্থ প্রবেশ করানো হয়; তাহলে তা দীর্ঘদিন চিংড়ির দেহে থাকায় ধিরে ধিরে মাছের কোষে প্রবেশ করে। আর দীর্ঘদিন তা কোষে থাকার প্রেক্ষিতে মাছের প্রোটিন নষ্ট করে দেয়। ফলে মানব দেহের জন্য তখন ভয়াবহ ক্ষতিকর বিষে পরিণত হয় পুশকৃত চিংড়ি। এভাবে পুশ চলতে থাকায় রপ্তানী বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।