পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720455141](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশ্ন দেখা দিবে গত পাঁচ বছরে দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের সুবিধা বস্তিবাসী কতোটুকু ভোগ করতে পেরেছেন। প্রায় ৩৫ হাজার বস্তিবাসী ভোটার সেই সুবিধার হিসেব নিকেশের পাল্লায় সিদ্ধান্ত নেবেন আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে কাকে ভোট দেবেন। বস্তির প্রায় ৩৫ হাজার ভোটারের এমন সিদ্ধান্তে নির্বাচনে পাল্টে যেতে পারে মেয়র পদে জয়-পরাজয়ের হিসাব। প্রার্থীদের চোখে বস্তির ভোটাররা অতিগুরুত্বপূর্ণ ভোটারে পরিণত হয়ে ওঠেছে। তবে বস্তির খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষের ভোট যাতে কোন অবস্থাতেই কেউ অর্থের বিনিময়ে টানতে না পারে এজন্য নির্বাচন কমিশনের নিয়োজিত লোকজন, আইন-শৃংখলা বাহিনী, ভ্রাম্যমাণ আদালতের তীক্ষè নজরদারির আহŸান জানিয়েছেন নগরীর বিশিষ্টজনরা। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের হিসাবে নগরীতে ৪৯টি বস্তি রয়েছে। এসব বস্তি বা কলোনীর অধিকাংশ বাসিন্দা পেশায় রিকশা, অটো, ঠেলা-ভ্যানগাড়ী চালক, ফেরিওয়ালা, জুতা সেলাই-পালিশওয়ালা, ফুটপাত ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র দোকানি, গৃহকর্মী ও ভিক্ষুক। ওইসব বস্তিতেই সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে দাতাসংস্থার আর্থিক সহায়তায় নগর অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের (ইউপিপিআরপি) কাজ হয়ে থাকে। ইউপিপিআরপি’র হিসাব অনুযায়ী নগরীর ৪৯টি বস্তিতে প্রায় ১২ হাজার পরিবার রয়েছে। এসব পরিবারে কম করে হলেও ৩৫ হাজার ভোটার রয়েছে। ১৭ দিন পর অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। আর তাই প্রার্থীদের কাছে বস্তির ওইসব হতদরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষগুলোর কদর বাড়তে শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব ওয়ার্ডে নিম্নআয়ের মানুষদের বস্তি রয়েছে সেখানেও আনাগোনা বেড়েছে কাউন্সিলর প্রার্থীদের। তবে বস্তির ভোটব্যাংক নিজেদের কব্জায় আনতে হেভিওয়েট দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও বিএনপির মনিরুল হক সাক্কুর বিশেষ নজর রয়েছে সেখানে। দুই দলের নেতা-কর্মীরা এখন থেকেই বস্তির ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর দুই প্রার্থী পা ফেলবেন বস্তিতে। আর বস্তির ভোটারদের পিঠ চাপড়ে বুকে টেনে নেবেন। শোনাবেন বস্তিবাসীর জন্য আগামীর স্বপ্নের কথা। ভোটের মাঠে প্রার্থীদের কাছে বস্তির হতদরিদ্র-নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী নগরীতে ৪৯টি বস্তির মধ্যে ভোটারসমৃদ্ধ বস্তিগুলো হচ্ছে- ছোটরার মফিজাবাদ কলোনী, মৌলভীপাড়া-কাটাবিলের গদার মা কলোনী, হযরত পাড়ার নমশুদ্রপাড়া, চকবাজার বালুধূম বস্তি, মুরাদপুর জিনার পুকুর পাড়ের বস্তি, পুরাতন মৌলভীপাড়ার বস্তি, গর্জনখোলা পূর্বপাড়ার বস্তি, নূরপুরের রবিদাস কলোনীসহ পশ্চিম পাড়ার বস্তি, কাপ্তানবাজার বেপারীপুকুর পাড়ের বস্তি, দ্বিতীয় মুরাদপুরের সোনাই পুকুরপাড়ের বস্তি, তেলিকোনা গোবিন্দ পুকুর পাড়ের বস্তি, কাটাবিলের পশ্চিমপাড়ার বস্তি, টিক্কাচর এলাকার বস্তি, সুইপার কলোনী, সংরাইশ পানির ট্যাংকি এলাকার বস্তি, সুজানগরের বস্তি, নূরপুর সাহাপাহার বস্তি, পাথরিয়া পাড়ার বস্তি, কাপ্তানবাজার ভাটারপুকুর পাড়ের বস্তি, উত্তর কালিয়াজুরির বস্তি, ভাটপাড়ার বস্তি। আগামী বুধবার প্রতীক বরাদ্দের পর এসব বস্তিতে ঘনঘন যাতায়াত ঘটবে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের। বিশেষ করে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও বিএনপির মনিরুল হক সাক্কু বস্তিবাসীর ভোট নিশ্চিত করতে বেশ কৌশলী হয়ে ওঠবেন। সেক্ষেত্রে অনেকটা হলেও এগিয়ে যাবেন সাক্কু। কেননা বিলুপ্ত পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন গঠনের পর চেয়ারম্যান-মেয়রের দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে ওইসব বস্তিবাসীর সাথে সাক্কুর একটা নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে। কেবল তাই নয়, তৎকালীন সময়ে পৌরসভা ও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে নিজ দলের প্রার্থীর জন্য এসব বস্তিবাসীর কাছে ভোট চেয়েছেন। পরবর্তীতে নিজে চেয়ারম্যান ও মেয়র হওয়ার পর হতদরিদ্র ওইসব মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নের ব্যাপারে সাক্কু সশরীরে বস্তিগুলোতে পা রেখেছেন। প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করেছেন। বস্তি নিয়ে ইউপিপিআরপি’র কাজগুলো তদারকি করেছেন। বস্তিতে পয়ঃনিষ্কাশন, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানি এবং স্বাস্থ্য সেবার বিষয়গুলো বিশেষভাবে নজর দিয়েছেন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সাক্কু এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখে হতদরিদ্র নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে নতুন করে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে ধানের শীষের দুর্গে নিয়ে যেতে পারেন বস্তিবাসীর ভোট।
কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রার্থী সীমা এবারে আটঘাট বেঁধেই পা ফেলবেন নগরীর বস্তিগুলোতে। বিলুপ্ত পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর হওয়ার সুবাদে বস্তিবাসীর সাথে সীমারও তৈরি হয়েছে সুসম্পর্ক। এছাড়া কুসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে বস্তিবাসীর কাছে তাদের জীবনমান উন্নয়নে তুলে ধরবেন নিজের পরিকল্পনা। বস্তির দৃশ্যমান উন্নয়নে গত আট বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও শোনাবেন বস্তিবাসীদের। অন্যান্য নাগরিকের মতো বস্তির মানুষরাও সকল সুযোগ-সুবিধার অধিকারীÑ এমন আশার কথা শুনিয়ে বস্তিবাসীর ভোট নৌকায় নেওয়ার জন্য সীমাও প্রস্তুত হয়ে রয়েছেন। ১৫ মার্চের পর দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের নিয়ে নগরীর যেখানেই বস্তি রয়েছে, সেখানেই গণসংযোগ, উঠোন বৈঠকসহ জোর প্রচারণা চালিয়ে গঠনমূলক প্রতিশ্রæতি দিয়ে বস্তিবাসীর সিংহভাগ ভোট নৌকা প্রতীকে নিশ্চিতের ছক তৈরি করবেন।
বস্তিবাসীর ভোট প্রসঙ্গে নগরীর বিশিষ্টজনদের অভিমত, এবারের কুসিক নির্বাচনে নগরীর বস্তিগুলোর ৩০/৩৫ হাজার ভোটারের সঠিক সিদ্ধান্ত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ব বহন করছে। বিগত নির্বাচনগুলোতেও বস্তির ভোটাররা অতিগুরুত্বপূর্ণ ভোটারে পরিণত হয়েছিল। আর তাই নির্বাচন এলে বস্তিবাসীর ওপর প্রার্থীদের নজর বেশি থাকে। বস্তির লোকজন নিম্ন আয়ের হওয়ায় টাকা দিলেও তাদের ভোট কেনা যায়। এমন প্রবাদের সত্যতাও বিভিন্ন নির্বাচনে দেখা গেছে। স্থানীয় পেশি শক্তির অধিকারী বস্তি নিয়ন্ত্রকরাও নিজেদের প্রার্থীর পক্ষে নড়েচড়ে বসেন। আসন্ন সিটি নির্বাচনে কোন প্রার্থী বা তাদের লোকজন যাতে বস্তির অতিদরিদ্র ভোটারদের নগদ অর্থে প্রভাবিত করতে না পারে এজন্য নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।