Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দিচ্ছে বিটিআরসি

বাংলালায়ন ও কিউবি

| প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফারুক হোসাইন : বকেয়া পরিশোধ না করায় ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলালায়ন ও কিউবি’র ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। পরবর্তীতে বকেয়া পরিশোধ না করলে অপারেশনাল ব্যবস্থা হিসেবে ১৫ দিন অন্তর অন্তর ১০ শতাংশ হারে ব্যান্ডউইথ সীমিত করে দিবে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটি। ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস এ্যাক্সেস (বিডবিøউএ) অপারেটর বাংলালায়ন কমিউনিকেশন ও অগিরি ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড (কিউবি)-এর ব্যান্ডউইথ কমাতে ইতোমধ্যেই ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেইটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের চিঠি দেয়া হয়েছে। বিটিআরসি’র সর্বশেষ সভায় (২০২তম) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা যায়। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী সরকারের রেভিনিউ শেয়ারিং ও স্পেকট্রাম চার্জ বাবদ বাংলা লায়নের ৬৬ কোটি ১৪ লাখ এবং কিউবি’র ১৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, কমিশনের ১৯৯তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলালায়ন ও কিউবিকে বিটিআরসি’র সমুদয় বকেয়া রাজস্ব পরিশোধের জন্য ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠান দুটির (কিউবি ও বাংলালায়ন) ১০ শতাংশ অপারেশনাল কার্যক্রম (ব্যান্ডউইথ) সীমিত করে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিটিআরসি। বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর এই দুই প্রতিষ্ঠানের ১০ শতাংশ হারে অপারেশনাল কার্যক্রম সীমিত করা এবং তা শূন্যের কোটায় নেমে আসলে তাদের লাইসেন্স বাতিল ও মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কমিশন। এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে অপারেটর দুটিকে চিঠিও দেয় বিটিআরসির লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগ। পরবর্তীতে গত বছর ১০ নভেম্বর কিউবি দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা বকেয়া পরিশোধ করলেও বাংলালায়ন কোনো বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ করেনি। কমিশনের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় বাংলালায়ন ও কিউবির ব্যান্ডউইথ সীমিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এজন্য বাংলালায়ন ও কিউবি যেসব আইআইজি অপারেটরের কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়ে থাকে তাদেরকে এই দুটি অপারেটরের ব্যান্ডউইথ সীমিত করতে বলা হয়। বাংলালায়ন চারটি আইআইজি অপারেটরের কাছ থেকে ৩ হাজার ৫২০ এমবিপিএস এমবিপিএস  (মেগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ নিয়ে থাকে। এর মধ্যে ম্যাক্সনেট ঢাকার কাছে ২ হাজার ২৫০, ম্যাক্সনেট খুলনার কাছে ৫৫০, ম্যাঙ্গো খুলনার কাছে ২২০ এবং ফাইবার এট হোমের কাছে ৫০০ এমবিপিএস। অন্যদিকে কিউবি ছয়টি আইআইজি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৩ হাজার ৪০৫ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ নিয়ে থাকে। এর মধ্যে ম্যাঙ্গোর কাছে ৯৭০, বিটিসিএল ৬০, আর্থ টেলিকম ৭৫০, জিএফসিএল ১০০, ফাইবার এট হোম এক হাজার এবং সামিট কমিউনিকেশনের কাছে ৫২৫ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ।
এর আগে কমিশনের ১৯৯তম সভায় বলা হয়, বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রতিষ্ঠান দুটিকে একাধিকবার তাগাদাপত্র প্রদান করার পরও বকেয়া পরিশোধ করছে না। দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে চলে আসছে। এরও আগে কমিশনের ১৯৬তম সভায় কিউবি ও বাংলালায়নকে বকেয়া পরিশোধের জন্য সাত দিনের সময় দিয়ে চিঠি প্রদান করে। অন্যথায় বিটিআরসিতে জমা করা পারফরমেন্স ব্যাংক গ্যারান্টি (পিবিজি) থেকে বকেয়া রাজস্ব সমন্বয় করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। একই সাথে প্রতিষ্ঠান দুটির লাইসেন্স ও তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল এবং গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূর্বেই তা গ্রাহককে অবহিত করার ব্যাপারে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
এর আগে বাংলালায়ন ও কিউবি  লাইসেন্সে উল্লেখিত নির্ধারিত সময়সীমার ভিতরে রোলআউট টার্গেট পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য ১৬৪তম, ১৬৯তম, ১৭২তম ও ১৭৪তম কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হলেও পিবিজি কর্তনের বিষয়ে কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। অপারেটর দুটি ২০০৮ সালে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে লাইসেন্স গ্রহণ করে। পরে ২০১৩ সালে ওলো ওয়াইম্যাক্সের লাইসেন্স নিলেও তাদের সেবা বলতে তেমন কিছুই নেই। বর্তমানে ওয়াইম্যাক্স অপারেটরদের গ্রাহক সংখ্যা এক লাখের নীচে নেমে গেছে, যা এক সময় পাঁচ লাখের বেশি ছিল। কিউবির কাছে ই-মেইলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোনো জবাব দেয়নি। ফোন করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলালায়নের ডেজ অব মার্কেটিং এন্ড কমিউনিকেশন জিএম ফারুক খান বলেন, বিটিআরসি’র চিঠির কপি এখনো আমরা হাতে পায়নি। বকেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, লাইসেন্স ও রাজস্ব বাবদ কিছু বকেয়া আছে। কমিশনের কাছে সময় নিয়ে আমরা আবার সেটি পরিশোধ করে দেয়। তবে এরিয়া ফ্যাক্টরের কারণে তাদের বকেয়ার পরিমাণ বেশি উল্লেখ করা হচ্ছে জানিয়ে ফারুক খান বলেন, আগে ৪টি অপারেটর ছিল তখন এক-চতুর্থাংশ ফি দিতে হতো। কিন্তু দুটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আমাদের কাছে অর্ধেক ধরা হচ্ছে। এটি আলোচনা করে ঠিক করা হবে বলেও তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ