Inqilab Logo

সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্বনবীর জীবনাদর্শ বাস্তবায়ন করতে পারলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব

ফান্দাউক দরবার শরীফের ঈসালে ছাওয়াব মাহফিলের ২য় দিনে পীর ছাহেব ক্বিবলা

| প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাধবপুর উপজেলা সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীর ও বাংলাদেশ আঞ্জুমানে খাদিমুল ইসলামের আমীর, আলহাজ্ব মাওলানা মুফতি শাহ সূফী সৈয়দ সালেহ আহমাদ মামুন আল হোসাইনী বলেছেন, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনাদর্শ বাস্তবায়ন করতে পারলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। নবীর প্রেম ভালবাসা প্রত্যেকের অন্তরে পয়দা করতে হবে। নবীর প্রেম ভালবাসাই  হচ্ছে ঈমান। বিশ্ব নবীর আদর্শ অনুসরণ ও অনুকরণ ব্যতিরেকে অন্য কোন পন্থা অবলম্বন করে সমাজের শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
পীর ছাহেব বলেন, আমার পিতা পীরে কামেল আলহাজ্ব শাহ সূফী সৈয়দ নাছিরুল হক মাসুম (রহঃ) শুধু অলি ও সাধকই ছিলেন না তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক এবং সামাজিক ভাবে আদর্শ মানুষ ছিলেন। তিনি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসতেন। তিনি পীর ছাহেব ক্বিবলার আদর্শ বাস্তবায়ন ও তার দেখানো পথ অনুসরণ করে চলার জন্য সকল মুরিদান ও ভক্তবৃন্দের প্রতি আহŸান জানান। পীর ছাহেব, যে ভাবে কথাবার্তা ও চলাফেরা করতেন এবং আল্লাহ তার রাসূলের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকতেন সেই ভাবে সকলকে আমল করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, তরিকত শব্দের অর্থ রাস্তা, তরিকতের কাজ খুবই সূক্ষ¥। তরিকত হচ্ছে আল্লাহ ও তার রাসূল (সাঃ) কে পাওয়ার সঠিক ও সহজ পথ। যুগ যুগ ধরে হক্কানী পীর মাশায়েখ ও আউলিয়ায়ে ক্বেরাম দিশেহারা মানুষকে গুমরাহির পথ থেকে ফিরিয়ে আলোর পথের সন্ধান দিয়েছেন। সমাজে সৎ চরিত্রবান লোকের অভাবে আজ সর্বক্ষেত্রে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। সকল মুসলমানদের তরিকতের সাধনার মাধ্যমে নৈতিক চরিত্র সংশোধন করতে হবে। কোরআন সুন্নাহর আলোকে জীবন গঠন করতে হলে হক্কানী পীর আওলিয়াদের সহব্বতে যেতে হবে। আমাদের ঈমান আক্বিদা ঠিক করতে হলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদা বিশ্বাস সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।   
তিনি বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ছাত্রের প্রতি শিক্ষকের কোন দরদ নেই, ছাত্রের শিক্ষকের প্রতি কোন শ্রদ্ধা নেই। রোগীর প্রতি ডাক্তারের কোন দরদ নেই। ছোটরা বড়দের সম্মান ও ইজ্জত দিতে জানে না। বড়রা ছোটদেরকে স্নেহ ও আদর করে না। সব মিলিয়ে বর্তমান সমাজের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। সুদ, ঘুষ, মদ, জুয়া, দুর্নীতিসহ অনৈসলামিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন ঘরে তুলার জোর তাগিদ দেন পীর ছাহেব। বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর সর্বশ্রেষ্ঠ মুজেযা ছিল পবিত্র কোরআন। কোরআন পাকের নির্দেশাবলীর আমলের মাধ্যমে জীবন গঠন করতে হবে। কোরআন সুন্নাহর অনুসরণকারীরাই প্রকৃত পক্ষে নম্র, ভদ্র, বিনয়ী ও ন্যায় বিচারক।
তিনি গতকাল শনিবার ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফে মোকাম্মেল আলহাজ্ব শাহ সূফী সৈয়দ আব্দুস সাত্তার নকশেবন্দীর মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রহঃ) ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল মোজাদ্দেদে জামান রাসূলনামা হযরত শাহ সূফী আলহাজ্ব সৈয়দ নাছিরুল হক মাছুম আল ক্বাদরী চিশতি নকশেবন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রহঃ) দ্বয়ের ২য় দিন বার্ষিক ঈসালে ছওয়াব মাহফিলে সভাপতির বয়ান দানকালে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
দরবার শরীফের ২য় ছাহেবজাদা ও বাংলাদেশ যুব খাদিমুল ইসলামের সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা মুফতি শাহ সূফী সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমাদ আল হোসাইনী বলেন, আমরা মুসলমান, আমাদেরকে মুসলমানিত্ব অর্জন করতে হবে। বিজাতীয় চালচলন ও আচার-আচরণ থেকে মুসমানদেরকে বাঁচতে হবে। শুধু নামে মুসলমান হলেই চলবে না, ইসলামের বিধি-বিধান ও নিয়ম-নীতি মেনে চলতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায কায়েম করতে হবে। নামায ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। নফল ইবাদত বন্দেগী কবুলের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতের সাথে আদায় করতে হবে। নামায হচ্ছে বেহেস্তের চাবি, নামায ছাড়া জান্নাতে যাওয়া যাবে না। ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দিলে ঈমানই থাকবে না।
২য় দিনের প্রধান অতিথি ছিলেন মাওলানা মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৈনপুরী, উভয় দিন ওয়াজ করেন পীরজাদা আলহাজ্ব সৈয়দ মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, সোনাকান্দা দরবার শরীফের পীর হাফেজ মাওলানা হোসাইন আহম্মদ হানাফী, মাওলানা বদরুজ্জামান রিয়াদ, মাওলানা নেছার আহম্মদ চাঁদপুরী, মাওলানা হুসাইন আহম্মদ মাফুজ, বানিয়াপাড়া দরবার শরীফে পীর মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, আলমগীর হোসেন আনসারি, মাওলানা এহসানুল হক মুজাদ্দেদী, ঢাকা। আলমগীর হোসেন যুক্তিবাদী, মাওলানা মুফতি শাহ আলম মাছুমী, অধ্যক্ষ মাওলানা ইলিয়াছ আলী, মাওলানা কামাল উদ্দিন আনসারি, মাওলানা জহিরুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা আব্দুল বাছির, মাওলানা ক্বারী সৈয়দ জাকারিয়া আহমাদ, মৌকারা দরবার শরীফের পীর, আলহাজ্ব মাওলানা ইব্রাহিম সিদ্দিকী, আলহাজ্ব মাওলানা হাফেজ আব্দুর রহমান, মাওলানা সৈয়দ জাকারিয়া আহম্মদ সাত্তারী, মাওলানা গাজী আব্বাছ উদ্দিন, নাতে রাসূল পরিবেশন করেন, মাওলানা মুফতি মোযযাম্মিল হক মাছুমী প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ