Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাট ৫ বছরে পোশাক শিল্পের সমান হবে মির্জা আজম

| প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : পাটশিল্প আগামী ৫ বছরে পোশাকশিল্পের সমান সফলতা অর্জন করবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শনিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে পাট খাতের সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
পাটশিল্পে সরকারের সুদৃষ্টি রয়েছে জানিয়ে পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশা করছি পাটশিল্প আগামী ৫ বছরে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। বস্ত্রশিল্প বিগত ৩০ বছরে যে সফলতা অর্জন করেছে, আগামী ৫ বছরে পাটশিল্প তার সমান (সফলতা) অর্জন করতে সক্ষম হবে। দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কবলে দেশের পাটশিল্প হারিয়ে গিয়েছিল মন্তব্য করে মির্জা আজম বলেন,  এই ষড়যন্ত্রে বিশ্ব ব্যাংক ও তৎকালীন বিএনপি সরকার জড়িত। তবে বর্তমান সরকার এই শিল্পের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, পাট শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনকে (বিজেএমসি) দুর্নীতিপরায়ণ করা হয়। এক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা মণ পাট কিনে ২ হাজার ৩০০ টাকার ভাউচার, নারায়ণগঞ্জ থেকে কিনে পঞ্চগড়ের যাতায়াত খরচের ভাউচার, কেনার চেয়ে কম পাট জমা ইত্যাদি ছিল দুর্নীতির অন্যতম মাধ্যম। এই দুর্নীতি ছিল রুটিন মাফিক। এতে বিজেএমসি একটি হতাশার খাত হয়ে দাঁড়ায়। ৩ বছর আগে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার সময়ও এ চিত্র নিজে দেখেছি। তিন হাজার জনবলের বিজেএমসিতে ৫ হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হয় জানিয়ে পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ছাড়া বেসরকারি তুলনায় সরকারি কর্মীদের বেতন ছিল তিনগুণ বেশি। ফলে লোকসান হওয়া স্বাভাবিক। এই লোকসান কমাতে জনবল বাদ দেওয়া দরকার হলেও তা সহজ না।
দুর্নীতি রোধের কারণে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ গত বছরের (গত বছরের লোকসান ৬১৯ কোটি টাকা) চেয়ে ২০০ কোটি টাকা কম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
দেশে প্রতি বছর ৬ হাজার মেট্রিকটন পাটের বীজ দরকার হয় জানিয়ে মির্জা আজম বলেন, নিজস্বভাবে এই চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণের সক্ষমতা আছে। বাকিটা আমদানি করতে হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের আগে এ খাতে কোন ঘাটতি ছিল না।
নিজ মন্ত্রণালয়ের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখলাম, এ খাতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে (বিজেএমইএ, বিকেএমইএ) মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি বস্ত্র খাতের কোনো অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে ডাকা হয় না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বস্ত্র অনেক বড় সেক্টর হলেও এ খাতের জন্য কোনো আইন নেই। ১৯৬২ সালের একটা অর্ডিনেন্স দ্বারা এ খাত চলছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা আইন তৈরি করেছি। আগামী ১৩ মার্চ সেটি মন্ত্রিসভায় উঠবে।
বিজেএমসি চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, পাটের সঙ্গে আমাদের নারীর সম্পর্ক। অর্থনৈতিক উন্নয়নে পাটের সম্পর্ক রয়েছে। সরকারের নানা পদক্ষেপে পাট শিল্পের পুনর্জাগরণ শুরু হয়েছে। পাটের অফুরন্ত সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে। কিছুটা অব্যবস্থাপনা, অবহেলা আছে। পাটকে নগদ সহায়তা দিয়ে বিকাশ অব্যাহত রাখতে হবে।
পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোসলেম উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটকে সীমাহীন ভালোবাসেন। পাট আইন-২০১৭ পাস করেছেন তিনি। নতুন পাট আইনে পাটের বহুমুখীকরণ ও অভ্যন্তরীণ পাটের বাজারে বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এখন পাট নীতিমালা করা হচ্ছে। ইআরএফ সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে সেমিনারের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ