পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেনাপোল অফিস : বেনাপোলের বিভিন্নœ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সোনা ও ডলার, আসছে মাদক। আন্তর্জাতিক সোনা চোরাকারবারিরা বেনাপোলকেই ব্যবহার করছে নিরাপদ রুট হিসাবে। ভারতে পাচার হওয়া সোনা ও ডলারের বিনিময়ে আসছে হেরোইন, ফেন্সিডিল আর গাঁজা। বিজিবি ও পুলিশের হাতে প্রায়শঃই সোনা, ডলার ও মাদকসহ চোরাকারবারিরা আটক হলেও থেমে নেই তাদের অবৈধ ব্যবসা। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবাধে চলছে এসব ব্যবসা। অধিক মুনাফা ও দেহে ফিটিং করে নিরাপদে এসব পণ্য এপার ওপার করা সহজ বিধায় ক্রমেই এ ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ার পর এসব চোরাকারবারিদের আসল রূপ বেরিয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যে সোনার বারসহ বিজিবি হাতে ধরা পড়েছে একজন গ্রাম্য ডাক্তার, কাপড় ব্যবসায়ী এবং সমাজের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিও।
বেনাপোলসহ শার্শা উপজেলার প্রতিটি সীমান্তে কম বেশি চোরাচালান হলেও এখন চোরাকারবারিদের নিরাপদ রুট হিসেবে বেনাপোল, দৌলতপুর, পুটখালি, সাদীপুর এবং গাতিপাড়া সীমান্তকেই ব্যবহার করছে। গত কয়েক মাসে এসব সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমান সোনার বার ও ডলার আটক হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ভারতে পাচারের সময় বেনাপোল’র শিকড়ি বটতলা এলাকা থেকে দেড় কেজি ওজনের ১২টি সোনার বারসহ আসানুর রহমান নামে এক চোরাকারবারিকে আটক করে বিজিবি। সে বেনাপোলের দৌলতপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর বেনাপোল সীমান্তবর্তী সাদিপুর গ্রাম থেকে দেড় কোটি টাকা মূল্যের ১ কেজি ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। আটক মাদক ব্যবসায়ীদ্বয় হলো বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামের সোবহান গাজীর ছেলে হাবিবুর রহমান (৩১) ও মোহাম্মদ আলী বিশ্বাসের ছেলে শওকত আলী।
২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত থেকে ভারতে পাচারের সময় জব্দ করা হয়েছে হুন্ডির ১০ লাখ ভারতীয় রুপী। এ সময় পাচারকারি পালিয়ে যায়। ৬ জানুয়ারি শার্শার শিকারপুর সীমান্ত থেকে ৩০০ বোতল ফেন্সিডিলসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে বিজিবি। আটকদের মধ্যে মফিজুর রহমান নামে একজন ইউপি সদস্য এবং জাকির ও মজিবর নামে ২ জন ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন।
বেনাপোলের রঘুনাথপুর সীমান্ত থেকে ১১ জানুয়ারি জব্দ করা হয়েছে ৪ মণ গাঁজা যা ভারত থেকে পাচার করে আনা হয় চোরাই পথে।
গত ১৩ ফেব্রæয়ারি বেনাপোল’র গাতিপাড়া সীমান্ত থেকে বাজারের বড় কাপড় ব্যবসায়ী বজলুর রহমানকে ভারতে পাচারকালে এক কেজি ৮শ’ গ্রাম (১৪) পিস স্বর্ণসহ আটক করে বিজিবি। আটক বজলুর রহমান বেনাপোল বড়আচড়া গ্রামের নেসার আলীর ছেলে।
গত ৩ মার্চ বেনাপোলের দৌলতপুর সীমান্ত থেকে ২ কেজি ৩০০ গ্রাম (২০ পিস) সোনার বারসহ টিটু বিশ্বাস নামে এক সোনা চোরাকারবারিকে আটক করে বিজিবি। আটক টিটু বিশ্বাস বেনাপোলের গাতিপাড়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। সে পেশায় একজন পশু ডাক্তার। একই দিনে ৩ মার্চ পুটখালি সীমান্ত থেকে ভারতে পাচারের সময় মালিকবিহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় হুন্ডির ২৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার।
এদিকে সোনা পাচারকারিদের যে সকল সদস্য ধরা পড়ছে তারা বলছে, ‘আমরা বাহক মাত্র কিছু অর্থের বিনিময়ে এসব সোনা একটি নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেয়াই আমাদের কাজ।’ কিন্তু তাদের কাছে সোনার বারগুলি কে দিয়েছে এমন তথ্য দিতে নারাজ পাচারকারিরা। পুলিশের রিমান্ডে বেশি জোর করলে নাম করেন ভারতীয় কোন নাগরিকের, থাকে না কোন সঠিক ঠিকানা। পরে প্রকৃত সোনার মালিকেরা এসব আসামিদের নেপথ্যে থেকে বেশির ভাগ আসামিকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন করান। আটক আসামিরা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পুনরায় আবার এ ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েন।
২১ বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে, কর্নেল মো: আরিফুর রহমান জানান, স্বর্ণ ও ডলার ব্যবসায় অধিক লাভ হওয়ায় নতুন করে অনেকেই এ ব্যবসায় ঝুকে পড়ছে। যারা ধরা পড়ছে তারা জামিনে এসে আবার শুরু করছে এই ব্যবসা। যারা ধরা পড়ছে তো পড়ছেই। বাকিরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাচার কাজ অব্যাহত রেখেছে। বাইরের দেশ থেকে স্বর্ণ আমদানি করলে ভারতে ট্যাক্স অনেক বেশি তাই চোরাইপথেই সোনা পাচার হয় ভারতে। তাছাড়া বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার হওয়ায় বেনাপোলই স্বর্ণ পাচারের জন্য চোরাচালানীদের প্রথম পছন্দ। আর হুন্ডির মাধ্যমে যেসব বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হচ্ছে তার সবই গরু ও মাদক বিক্রির টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।