পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী স্পিকার ও বিশিষ্টজনদের শোক
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস (৫৭) আর নেই। ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মাল্টি অরগ্যান ফেলিউরের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রশাসন অনুবিভাগের মহাপরিচালক নাজমুল ইসলাম। হাসপাতালে জীবনের অন্তিম লগ্নে মিজারুল কায়েসের সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী নাইমা চৌধুরী এবং দুই মেয়ে মানসী ও মাধুরী। মানসী অসুস্থ বাবাকে দেখতে লন্ডন থেকে ব্রাসিলিয়ায় ছুটে যান।
মিজারুল কায়েসের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া এবং চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও সচিব মো. শহীদুল হকও শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন। কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিক্যাব সাবেক সচিব মিজারুলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।
পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক জানান, ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৯টায় মিজারুল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আগামী সোমবার নাগাদ তার লাশ বাংলাদেশে পৌছাবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ধারণা দিয়েছেন। ঢাকায় তাঁর ভাই মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ ইমরুল কায়েস রয়েছেন। পারিবারিক সিদ্ধান্তেই তার দাফনের পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।
গত ১৩ ফেব্রæয়ারি ব্রাসিলিয়ার ওই হাসপাতালে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে ভর্তি হন মিজারুল কায়েস। তিনি ফেব্রæয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় ছিলেন। ৭ ফেব্রæয়ারি ঢাকা থেকে ব্রাজিলের সাও পাওলোর উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এই কূটনীতিক। সাও পাওলোর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা বলা হলেও মিজারুল কায়েস সেখানে ভর্তি হননি। শ্বাসকষ্টের কারণে তিনি সাও পাওলো থেকে উড়োজাহাজে না গিয়ে সড়কপথে ব্রাসিলিয়াতে যান। সেখানে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ব্রাসিলিয়ায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে ২০১২ সালে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও রক্তে ইনফেকশনের মতো প্রাণঘাতী সেপটেসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মিজারুল কায়েস। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সেসময় সুস্থ হয়েছিলেন তিনি।
২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব পালন করেন মিজারুল কায়েস। ২০১৪ সালে ব্রাজিলে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় তাকে। এ ছাড়া তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক হিসেবে সার্ক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অর্থনৈতিক বিষয়াবলি, আনক্লস ও বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের দায়িত্বও পালন করেন। তিনি ব্রিটেন, মালদ্বীপের হাইকমিশনার ও রাশিয়াতে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৮২ সালের বিসিএস পররাষ্ট্র সার্ভিসের কর্মকর্তা মিজারুল কায়েসের ২০১৯ সালে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। তার গ্রামের বাড়ী কিশোরগঞ্জে। কূটনীতিক মিজারুল কায়েস ছিলেন শিল্প-সাহিত্য অনুরাগী। বিশেষ করে কবিতা ও শুদ্ধ সঙ্গীতের প্রতি ছিল তার বিশেষ অনুরাগ। ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হন মিজারুল। সেখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এর পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন এফ কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্টে উচ্চতর শিক্ষা নেন। ঢাবির সেন্টার ফর অল্টারনেটিভসের ফেলো ছিলেন তিনি। এ ছাড়া জাতিসংঘবিষয়ক সংগঠন ইউএন অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আজীবন সদস্য ছিলেন তিনি। মিজারুল শিক্ষকতা করেছেন নর্থ সাউথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে। এ ছাড়া ঢাকায় ন্যাশনাল একাডেমি অব আর্টসে নন্দনতত্ত¡ ও শিল্পকলার ইতিহাস পড়িয়েছেন তিনি। ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সদস্য ছিলেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।