পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : অবসরকালীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অর্থ আটকে উৎকোচ দাবির অভিযোগ উঠেছে খুলনা খাদ্য বিভাগে। অর্থের বিনিময়ে বদলী, টেন্ডার ছাড়াই খাদ্য পরিবহনের কাজ পাইয়ে দেয়া, ডিলার-মিলারদের থেকে নিয়মিত উৎকোচ আদায় এবং জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে সখ্যতার ভিত্তিতে ঘুষের এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন খুলনা বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মোঃ ইদ্রিস আলী। খাদ্য বিভাগে তার ব্যাপক প্রভাবের কারণে নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতেও সাহস পান না ক্ষতিগ্রস্তরা। গত এক সপ্তাহ খুলনা বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
এসময় কথা হয় অবসরের অর্ধ-যুগেও অবসরকালীন অর্থ না পাওয়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমারত হোসেন। ঊর্ধ্বতন প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
তিনি জানান, ২০১০ সালের ২০ আগস্ট যশোরের অভয়নগর উপজেলা উপ-খাদ্য পরিদর্শক পদ থেকে অবসরে যান তিনি। অবসরকালীন ৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৬ টাকা ছাড়ের বিনিময়ে যশোরের তৎকালীন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ কামাল হোসেন (বর্তমানে খুলনায়), আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী (পিএ) মোঃ ইদ্রিস আলী ও প্রাক্তন কর্মকর্তা কাজী নুরুল ইসলাম তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ তার। সর্বশেষ, ২০ ফেব্রুয়ারি খুলনার খালিশপুর থানায় এ হয়রানির কথা উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (যার নং-৮৪১) করেছেন তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনার নবাগত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ কামাল হোসেন বলেছেন, “দুই লাখ টাকা চাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। উনি সম্পূর্ণ মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগ করেছেন। অভয়নগরে চাকরিরত অবস্থায় গুদাম থেকে গম আত্মসাতের মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মন্ত্রণালয় থেকে তার অবসরকালীন অর্থ বাতিল করেছেন। তারপর থেকে বিভিন্ন মনগড়া অভিযোগ উঠে তিনি আমাকে নাজেহাল করছেন। প্রকৃতপক্ষে উনি একটা দুষ্ট প্রকৃতির লোক। অবসরকালীন সরকারি অর্থ আটকে রাখার ক্ষমতা কারো নেই। আমিও ওনার টাকা আটকে রাখিনি। বরং চাকরি জীবনে তাকে বহু উপকার করেছি আমি।”
অভয়নগর উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত উপ-খাদ্য পরিদর্শক মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমারত হোসেন বলেন, “আত্মসাতের একটি মামলা হয়েছিল; তবে তাতে আমি নিরপরাধ প্রমাণিত হয়েছি। মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছে। আমার সার্ভিস বুক-এ এবং তৎকালীন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোস কুমার মজুমদারের প্রেরিত পেনশন রিপোর্টে এধরনের কোন অভিযোগের উল্লেখ নেই। আমার কাছে দাবিকৃত দুই লাখ টাকা না দেয়ায় আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। অবসরের প্রায় সাত বছরেও অবসরকালীন বেতন-ভাতা না পেয়ে আমি খুব অসহায় হয়ে পড়েছি।” এসব ব্যাপারে জানতে অভয়নগর উপজেলার তৎকালীন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোষ কুমার মজুমদারের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গেল বছরে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর, সাতক্ষীরাসহ খুলনা বিভাগের অন্তত দশজন খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে (ওসিএলএসডি) বদলি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল। সম্প্রতি অবসরকালীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফাইল আটকে রেখে উৎকোচ আদায় সিন্ডিকেটেও মুখ্য ভূমিকা পালনের অভিযোগ উঠেছে বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের বড়বাবু খ্যাত প্রধান সহকারী মোঃ ইদ্রিস আলী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।